Anubrata Mandal: অনুব্রতর জন্য দুয়ারে চিকিত্সক; আমজনতার বাড়ি যাবেন তো সরকারি ডাক্তাররা! সরব অনুপম
অনুব্রত মণ্ডল কোনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। কোনও উচ্চ পদস্থ সরকারি আধিকারিকও নন। তাহলে তাঁর বাড়িতে সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সকরা গেলেন কী ভাবে! এই প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহল থেকে। তবে বোলপুর হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের তরফে চিকিত্সক পাঠানোর অনুরোধ করা হয়
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সোমবার এসএসকেএম হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে বোলপুর ফেরার পর মঙ্গলবার তাঁকে পরীক্ষা করেছেন বোলপুর হাসপাতালের চিকিত্সকেররা। আজ তাঁর বাড়িতে যান হাসপাতালের ৪ জনের একটি টিম। তাদের দাবি, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন না থাকলেও অনুব্রতর যেসব সমস্যা রয়েছে তাতে তার কলকাতা না যাওয়াই ভালো। চিকিত্সকদের অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যাওয়া নিয়ে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক বিতর্ক। এনিয়ে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা সোশ্য়াল মিডিয়ায় এক পোস্টে লিখেছেন, এতদিন জানতাম সরকারি হাসপাতালে চিকিত্সা পেতে গেল হাসপাতালে গিয়ে চিকিত্সা নিতে হয়। এসএসকেএম-প্রত্যাখ্য়াত বীরভূমের প্রভাবশালী নেতার ক্ষেত্রে তার উল্টোটাই ঘটেছে। বেলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিত্সকেরা ডিউটি আওয়ার্সে হাসপাতাল ছেড়ে প্রভাবশালী নেতার বাড়িতে এসে চিকিত্সা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাঁকে সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। তাহলে ভবিষ্যতে কি আশা করতে পারি অসুস্থ মানুষের চিকিত্সার জন্য তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিত্সা করে যাবেন?
আরও পড়ুন-Anubrata Mandal: ফিট নন অনুব্রত, দাবি বোলপুর হাসপাতালের চিকিত্সকদের, আগামিকালই ফের তলব সিবিআইয়ের
অনুব্রত মণ্ডল কোনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। কোনও উচ্চ পদস্থ সরকারি আধিকারিকও নন। তাহলে তাঁর বাড়িতে সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সকরা গেলেন কী ভাবে! এই প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহল থেকে। তবে বোলপুর হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের তরফে চিকিত্সক পাঠানোর অনুরোধ করা হয়। তার পরেই আজ অফ ডিউটিতে থাকা চিকিত্সকেরা অনুব্রতকে দেখতে যান। তারা অনুব্রতকে দেখে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেন। পাশাপাশি এক চিকিত্সক জানিয়েছেন, অনুব্রতর ফিসচুলা, উচ্চ রক্তচাপ, অ্যাংজাইটি, সিওপিডি সহ একাধিক সমস্যা রয়েছে। এই মুহূর্তে অপারেশন করার কোনও জায়গা নেই। খুব হাই ডোজের অন্টিবায়োটিক দিতে হয়েছে। তবে এই মূহুর্তে অনুব্রত সম্পূর্ণ সুস্থ বলে আমার মনে হয় না।
জি ২৪ ঘণ্টাকে গোটা বিষয়টি নিয়ে অনুপম হাজরা বলেন, গোটা দেশেই আমরা যদি সরকারি চিকিত্সা পেতে চাই তা হলে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিত্সা করাই। এটা দেখতেই আমরা অভ্যস্থ। বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে একেবারে উল্টো ছবি। উনি সম্পূর্ণভাবে সুস্থ। তাই এসএসকেএম হাসপাতাল তাঁকে ভর্তি নেয়নি। সেই সুস্থ মানুষকে চিকিত্সা করার জন্য সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিত্সকের তাঁর বাড়ি পর্যন্ত চলে আসছেন। আমার প্রশ্ন, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে এভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিত্সকেরা পরিষেবা দেবেন তো? ভেবে দেখুন কী সংখ্যক রোগী সরকারি হাসপাতালে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেইসব রোগীদের এড়িয়ে একজন প্রভাবশালীর বাড়িতে গিয়েছেন চিকিত্সকেরা।
এনিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, অনুব্রত মণ্ডল কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি নন। তাঁর চিকিত্সায় সরকারি চিকিত্সক দল তাঁর বাড়িতে কেন? এসএসকেএমের মতো এমন একটা হাসপাতালকে একটা হাস্যকর জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। যেসব গুরুতর অভিযোগ অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে সেইসব অপরাধ অনুব্রতর একার পক্ষ করা সম্ভব নয়। অনেকেই এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। তারাই চায় না অনুব্রত সিবিআইয়ের মুখোমুখি হোন। তাই এসব করা হচ্ছে।