Malda News: টানা ২৫ বছরের নেতা, এবার পঞ্চায়েতে দাঁড়ালেই ঝাঁটাপেটা করার নিদান গ্রামবাসীর
Malda News: রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটীর দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তাজামূল হোসেনের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন কেরামুদ্দিন আহমেদ। রাজনীতিতে পদার্পণ বাম জামানায়। তৎকালীন মন্ত্রী বীরেন্দ্র কিশোর মৈত্র হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন
রণজয় সিংহ: টানা ২৫ বছর ধরে পঞ্চায়েত স্তরে জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন এক দম্পতি। তবুও এলাকায় হয়নি কোনও উন্নয়ন। এমনই দাবি নিয়ে ক্ষোভ ফেটে পড়লেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের সাফ কথা পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দল ওই দম্পতিকে টিকিট দিলে ভোট দেব না। পঞ্চায়েতে দাঁড়ালে ঝাঁটাপেটা করা হবে ওই স্বামী-স্ত্রীকে। এমনই নিদান গ্রামবাসীরদের। ঘটনাটি মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘরোট গ্রামের। গ্রামের বাসিন্দারা একজোট হয়ে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এমনই প্রচার করছেন এলাকায়। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধক্ষ্য কেরামুদ্দিন আহমেদ ও তার স্ত্রী আনগেজ বেগম রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যার বিরুদ্ধে এমনই ক্ষোভ এলাকাবাসীর।
আরও পড়ুন-প্রধানের রোষের মুখে পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট, মারধরের অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা
এলাকাবাসী মহম্মদ হেলাল বলেন, কেরামুদ্দিন যদি আবার পঞ্চায়েতের টিকিট পায়, ভোট চাইতে আসে। তবে তাকে ঝাঁটাপেটা করে তাড়াব। তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেন। রাস্তা ও গ্রামে পুকুরের চারপাশে গার্ডওয়াল করে দেওয়ার কথা দিলেও কোনও কাজ করেননি। সাইরা বানু নামে এক বিধবা মহিলা জানান, আমি মরে গেছি দেখিয়ে আমার বিধবাভাতা বন্ধ করে দিয়েছে কেরামুদ্দিন। ওয়ারেশা বিবি নামে এক মহিলা জানান, গ্রামে পুকুরের পাশের রাস্তাটি বেহাল অবস্থায় থাকার কারণে বছর দেড়েক আগে তার এক শিশু জলে ডুবে মারা গেছে। খবর পাওয়া সত্ত্বেও জনপ্রতিনিধি স্বামী-স্ত্রী মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি।
এত অভিযোগ। কী বলছেন কেরামুদ্দিন আহমেদ? তৃণমূলে নেতা বলেন, এমন যারা করছে তারা কংগ্রেস কর্মী। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে তাকে কেউ হারাতে পারছে না। তাই ভোটের মূহুর্তে এলাকায় আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য চক্রান্ত করে চলেছে বিরোধীরা। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে এলাকায় যা কাজ হয়নি ১০ বছরে তা করে দেখিয়েছি।
উল্লেখ্য রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটীর দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তাজামূল হোসেনের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন কেরামুদ্দিন আহমেদ। রাজনীতিতে পদার্পণ বাম জামানায়। তৎকালীন মন্ত্রী বীরেন্দ্র কিশোর মৈত্র হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। প্রথমে রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে জয়লাভ করেন। এরপর পরপর তিনবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি হন। পঞ্চায়েত সমিতিতে কেরামুদ্দিন আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী আনগেজ বেগম ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিট পান এবং জয় লাভ করেন। হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজামুল হোসেন ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। সেই সময় কেরামুদ্দিনও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আবার পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট পান কেরামুদ্দিন। তার স্ত্রী আনগেজ বেগম পঞ্চায়েত থেকে টিকিট পান। দুইজনেই জয়লাভ করেন। বর্তমানে পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধক্ষ্য পদে রয়েছেন কেরামুদ্দিন। তাঁর স্ত্রী রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা।