ভাড়াটিয়ার পরকীয়াতে আপত্তি জানিয়েছিল স্বামী, বিয়ের ২ মাসের মাথায় চুরমার সংসারের স্বপ্ন
স্থানীয় অমৃতা আবাসনে মাঝেমধ্যেই দেহ ব্যবসার আসর বসে। এই খুনের ঘটনার সঙ্গে মধুচক্রের কোনও যোগসাজশ রয়েছে কিনা, উঠছে সেই প্রশ্নও।
নিজস্ব প্রতিবেদন : পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় বাড়ি মালিককে খুনের অভিযোগ উঠল ভাড়াটিয়া ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ভাড়াটিয়া ও তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে।
মৃতের নাম পিন্টু সর্দার। পেশায় ফুচকা বিক্রেতা পিন্টু সোনারপুরের নাটাগাছি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন রূপা নস্কর ও তাঁর স্বামী নূরজামাল নস্কর। অভিযোগ, শেখ মণিরুল ইসলাম বলে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন রূপা। পিন্টুর বাড়িতেও অবাধ যাতায়াত ছিল শেখ মণিরুলের। বেশ কয়েকদিন নজর রাখার পর রূপার পরকীয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে পিন্টুর চোখে। আর তারপরই রূপার স্বামী নূরজামালকে তাঁর স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানান পিন্টু। অভিযোগ, তারপর থেকেই পিন্টু প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন রূপা। শেষপর্যন্ত সোমবার রাতে তাঁর উপর হামলা চালান শেখ মণিরুল ও রূপা।
আরও পড়ুন, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নেই, কলেজের সহপাঠীর সঙ্গে 'পরকীয়া', পরিণতি হল মর্মান্তিক
সোমবার রাতে পিন্টু নাটাগাছি এলাকায় ফুচকা বিক্রি করছিলেন। অভিযোগ, সেইসময়ই তাঁর উপর হামলা করেন শেখ মণিরুল। ছুরি নিয়ে হামলা চালানো হয় তাঁর উপর। পিন্টু বুকে ছুরি বসিয়ে দেন শেখ মণিরুল। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন পিন্টু। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে হামলার পরই পালানোর চেষ্টা করেন শেখ মণিরুল। তাঁকে ধরে ফেলে স্থানীয় জনতা। রূপা ও শেখ মণিরুল দুজনকেই উত্তমমধ্যম দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে দুজনকেই। বর্তমানে দুজনেই হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। জানা গিয়েছে, আদতে দক্ষিণ বারাসত এলাকার বাসিন্দা রূপা ও তাঁর স্বামী নূরজামাল। অন্যদিকে, হাওড়ার বাসিন্দা শেখ মণিরুল।
আরও পড়ুন, ঘরে নাতনি একা শুয়ে, রান্নাঘর পা দিয়েই ছেলে-বৌমাকে এঅবস্থায় দেখে হতভম্ব দাদু
অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই পিন্টু সর্দারকে খুন করেছে রূপা ও মণিরুল। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত রূপাকে গ্রেফতার করেছে সোনারপুর থানার পুলিস। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে রূপার স্বামী নূরজামালকেও। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন ও ষড়যন্ত্রের মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
মাত্র ২ মাস আগে বিয়ে হয়েছিল পিন্টুর। স্বামীকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী। এই খুনের পিছনে শুধুই কি পরকীয়া নাকি ব্যবসায়িক শত্রুতাও রয়েছে, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় অমৃতা আবাসনে মাঝেমধ্যেই দেহ ব্যবসার আসর বসে। এই খুনের ঘটনার সঙ্গে মধুচক্রের কোনও যোগসাজশ রয়েছে কিনা, সেটাও তদন্তসাপেক্ষ।