Mamata Banerjee: নেতাজি, গান্ধীজি, বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম, মনীষীদের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী; পুরসভার কাণ্ডে চাপানউতোর তুঙ্গে
এবারের পুরভোটে মেদিনীপুরে তৃণমূলের জয়জয়কার হয়েছে। ২৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ২০টি আসন, সিপিএম তিনটি, কংগ্রেস একটি এবং নির্দল পেয়েছে একটি আসন।
চম্পক দত্ত: তাঁর একপাশে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং গান্ধীজির ছবি, অন্যপাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং ক্ষুদিরাম বসুর ছবি। সকল মনীষীর মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। মেদিনীপুর পুরসভার সভাকক্ষের দেওয়ালে রয়েছে এই পাঁচটি ছবি। সকল মনীষীদের সঙ্গে, একই সারিতে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখায়, জেলাজুড়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়।
তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে মনীষীদের অপমান করার অভিযোগে সরব হয় বিরোধীরা। বিতর্ক তৈরি হতেই মনীষীদের ছবির মাঝখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। তবে নেতাজি, গান্ধীজি, বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরামের সঙ্গে একই সারিতে রাখা হয়। এবারের পুরভোটে মেদিনীপুরে তৃণমূলের জয়জয়কার হয়েছে। ২৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ২০টি আসন, সিপিএম তিনটি, কংগ্রেস একটি এবং নির্দল পেয়েছে একটি আসন। পুরপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূলের সৌমেন খান। জানা গিয়েছে, পুরসভায় একটি সভাকক্ষ রয়েছে, যেখানে পুরসভার যাবতীয় বৈঠক হয়। সেই সভাকক্ষের দেওয়ালেই মনীষীদের ছবি রয়েছে। সেখানেই মনীষীদের সঙ্গে একই সারিতে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখা ছিল বলে খবর।
সরকারি অনুষ্ঠান বা কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখা নতুন নয়। তবে পুরসভার সভাকক্ষে নেতাজি, গান্ধীজি, বিদ্যাসাগর এবং ক্ষুদিরাম বসুর সঙ্গে, একই সারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রাখা নিয়ে সরব হয়েছেন সিপিএম কাউন্সিলার সৃজিতা দে বক্সী। তিনি বলেন, "কোন যুক্তিতে পুরসভায় মনীষীদের ছবির মাঝে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রাখা হয়েছে? এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ করছি। মনীষীদের অপমান করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার রাজ্যবাসীর শিক্ষা-সংস্কৃতি কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। মানুষকে বলব, সজাগ হতে, প্রতিবাদ করতে।"
এই বিষয়ে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি অরূপ দাস কটাক্ষের সুরে বলেন, "এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় মনীষীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে মেদিনীপুর পুরসভা সর্বত্রই প্রধান মনীষী, মুখ্য মনীষী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ধ্বংস করছে এই সরকার। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। রাজ্যজুড়ে নারী নির্যাতন,ধর্ষণ হচ্ছে। সেই দিকে নজর নেই।
কংগ্রেস কাউন্সিলর মহম্মদ সাইফুল বলেন, "তৃণমূলের আমলে এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রপাইটরশিপে দল চালাচ্ছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি মালিক। বাকি সবাই কর্মচারী। কর্মচারীরা তাদের মালিককে কখনও দেবীর আসনে, কখনও মনীষীদের পাশে বসাচ্ছেন।"
এই বিষয়ে অবশ্য অন্যায় কিছু দেখছে না পুর কর্তৃপক্ষ। পুর চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, "এতে কোনও অন্যায় বা ভুল হয়নি। আমরা মনীষীদের সম্মান করি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাংলার জননেত্রী। তাঁর ছবি আমার রুমে এবং সভাকক্ষে রাখা রয়েছে। তাতে আমি মনে করি যে, আমি গর্বিত। এই ধরণের জননেত্রীর ছবি রেখে যে আমরা কাজ করছি, সেজন্য গর্বিত মনে হয়।"