লোকসভা ভোটে পাহাড়ে কামব্যাকে মরিয়া গুরুং দ্বারস্থ সুপ্রিম কোর্টের, রাজ্যের উত্তর চাইল আদালত
মৌপিয়া নন্দী
মৌপিয়া নন্দী
লোকসভা ভোটে অংশগ্রহণের জন্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হোক। দেশের শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন বিমল গুরুং ও রোশন গিরিরা। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের লিখিত উত্তর চাইল সুপ্রিম কোর্ট।
সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৭ দফায় ভোট। দ্বিতীয় দফায় ১৮ দার্জিলিংয়ে ভোট। লোকসভা ভোটে অমর সিং রাইকে দার্জিলিং আসন থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিনয় তামাং, অনীক থাপা জানিয়ে দিয়েছেন লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেকেই সমর্থন করবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের রাজনীতিতে কামব্যাক করার মরিয়া চেষ্টায় বিমল গুরুং ও রোশন গিরিরা।
উল্লেখ্য, ২০১৭-র জুনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দার্জিলিং। বিমল গুরুং ও রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় দায়ের হয় অভিযোগ। তখন থেকেই আর বিল গুরুং বা রোশন গিরি, কাউকে-ই আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এরপর পাহাড়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক জল গড়ায়। অনেক পরিবর্তন আসে। সম্পূর্ণরূপে বদলে যায় দার্জিলিংয়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতৃত্বের রাশ উঠে আসে বিনয় তামাং ও অনীক থাপার হাতে।
এরপর ২০১৭-র অক্টোবরে এসআই অমিতাভ মালিক হত্যায় সরাসরি বিমল গুরুং ও রোশন গিরিদের বিরিুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনা হয়। তাদের খোঁজ একাধিক জায়গায় হানা দেয় পুলিস। সেইসময় গুরুং ঘনিষ্ঠ বেশকিছু নেতা পুলিসের জালে ধরা পড়েন। বেশ কিছুজন চলে আসে বিনয় তামাং শিবিরে। সেইসময় থেকেই অজ্ঞাতবাসে চলে যান বিমল গুরুং ও রোশন গিরি। তাঁদের সঙ্গেই অজ্ঞাতবাসে চলে যান গুরুং ঘনিষ্ঠ বেশকিছু নেতানেত্রীও।
এখন সামনে লোকসভা নির্বাচন। বিনয় তামাং,অনীত থাপারা জানিয়ে দিয়েছেন এই লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে সমর্থন করবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। অমর সিং রাইকে দাঁর্জিলিং আসন থেকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এহেন পরিস্থিতিতে বিমল গুরুং ও রোশন গিরি রাজনৈতিকভাবে দার্জিলিংয়ে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হওয়ার মুখে। তাঁরা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন, লোকসভা নির্বাচনে পাহাড়ের রাজনীতিতে কামব্যাক করতে না পারলে, পাহাড়ে অতীত হয়ে যাবেন। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিমল গুরং ও রোশন গিরিরা।
পাশাপাশি রাজনৈতিক মহল মনে করছে, গুরুংপন্থী কাউকে সামনে রেখেই এবারও পাহাড়ে আসন দখলে রাখতে চাইছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু বিমল গুরুং ও রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে যেরকম কঠোর ধারা রয়েছে, তাতে প্রকাশ্যে এলে তাঁদের ষোলোআনা গ্রেফতারির সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় আদালতের নির্দেশ-ই একমাত্র রক্ষাকবচ হতে পারে। আর তাই আদালতের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন, সোদপুরে শুটআউট! তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে ৫ রাউন্ড গুলি
বিমল গুরুংদের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের কাছে উত্তর চেয়েছে শীর্ষ আদালত। ফলে বল এখন রাজ্য সরকারের কোর্টে। এবার রাজ্য সরকার কী উত্তর দেয়, তার উপরই নির্ভর করছে এই মামলার পরবর্তী গতিপ্রকৃতি। যদিও এই বিষয়ে জি ২৪ ঘণ্টার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে, এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি রোশন গিরি।