'ও দিদি,ভোট দিয়েছি,ছেলেটা ফিরবে তো?', ভোটের লাইনে আজও ছেলেকে খোঁজে মায়ের মন
জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে। কিন্তু ছেলে? সে কবে ফিরবে?
কমলিকা সেনগুপ্ত : বছর ঘুরে ঘুরে ভোট আসে। আর ভোট এলেই মা ছুটে যায় ছেলের খোঁজে। ভোটের লাইনে তন্ন তন্ন করে ছেলেকে খুঁজে ফেরে মায়ের চোখ। এবারও তার অন্যথা হল না। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেই এবারও ভোট দিলেন নিখোঁজ পুলিস কর্মী কাঞ্চন গড়াইয়ের বৃদ্ধ মা-বাবা।
পায়ে পায়ে পিছিয়ে যেতে হবে দশটা বছর। সালটা ২০০৯। ভোটের ডিউটিতেই গিয়েই লালগড় থেকে নিখোঁজ হয়ে যান পুলিস কর্মী কাঞ্চন গড়াই আর সাবির মোল্লা। মাওবাদীরা তুলে নিয়ে যায় দুজনকে। এরপর দশ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু ঘরের ছেলে আর ঘরে ফেরেনি। এখনও ভোট আসলেই মায়ের চোখ ছলছল করে ওঠে। ছেলের খোঁজ মিলবে? আশায় বুক বাঁধে বৃদ্ধ বাবা, মা। ছেলের ছবির দিকে তাকালেই হু হু করে ওঠে মন। বার বার আঁচলের খুঁট দিয়ে চোখ মুছতে থাকেন কাঞ্চন গড়াইয়ের মা।
বাঁকুড়ার ছাদনার সকারপাড়া গ্রামে বাড়ি কাঞ্চন গড়াইয়ের। ভোটের ডিউটিতে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল তরতাজা ছেলেটা। প্রতিবার তাই ভোট দিতে গিয়ে উদভ্রান্ত বাবা, মায়ের চোখ সর্বত্র খুঁজে ফেরে হারানো ছেলেকে। খাঁকি পোশাকে পাহারারত নিরাপত্তারক্ষীদের ভিড়ে মিশে নেই তো তাঁদের হারানো ছেলে? এবারেও ভোট দিতে গিয়ে ভোটারদের কাছে হারানো ছেলের খোঁজ নিয়েছেন মা মিনতি গড়াই।
আরও পড়ুন, কেশপুরে গুলি চালাল ভারতীর নিরাপত্তারক্ষী, গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী
জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে। কিন্তু ছেলে? সে কবে ফিরবে? অপেক্ষায় চোখের জল বাঁধ মানে না মিনতি গড়াইয়ের। ভোট মানে হার-জিত। ভোট মানে লড়াই। কিন্তু মিনতি গড়াই আর তাঁর স্বামীর কাছে ভোট মানে ছেলেকে ফেরত পাওয়ার একমাত্র রাস্তা। সাংবাদিক দেখেই আকুল চোখে মায়ের ব্যাকুল মনের শুধু একটাই প্রশ্ন, "ও দিদি, ভোট দিয়েছি। ছেলেটা ফিরবে তো?"