‘শুভেন্দুর জন্যই তৃণমূল আমাকে নিচ্ছে না’

 কুল হারিয়ে তৃণমূলে আসতে মরিয়া একদা সিপিএম নেতা। কিন্তু পরাছেন না। আর সেজন্য পূর্ব মেদিনীপুরের প্রতাপশালী তৃণমূল নেতাকেই সরাসরি দায়ী করছেন লক্ষ্মণ শেঠ... 

Updated By: Nov 12, 2018, 05:58 PM IST
‘শুভেন্দুর জন্যই তৃণমূল আমাকে নিচ্ছে না’

নিজস্ব প্রতিবেদন: এক সময় তিনি ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের শেষ কথা। বাম আমলে তাঁর নাম করেই হাতে মাথা কাটত সিপিএম। জ্যোতি বসুর আমল থেকে বামেরা ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত, লক্ষ্মণ শেঠের দাপট যে দিন দিন বেড়েছে, এ কথা সর্বজনবিদিত। অস্বীকার করে না সিপিএমও। যদিও পালা বদলের পর বামেরা ক্ষয়িষ্ণু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমতা কমেছে লক্ষ্মণ শেঠেরও। ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়েছে তাঁর স্ত্রী তমালিকা পণ্ডা শেঠেরও। ২০১৪ সিপিএমও তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে।  বছর দুই হল গত হয়েছেন তাঁর স্ত্রীও। এমন অবস্থায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন এই প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ। তবে রামের ঘরে গিয়েও সংসার করতে পারলেন না লক্ষ্মণ! সেখানেও বিচ্ছেদ! এ বছরই তাঁকে ঘার ধাক্কা দিয়ে দল থেকে তাড়িয়ে দেন দিলীপ ঘোষরা। শেষমেশ উপায় না পেয়ে তৃমমূলের দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন- ছট পুজোয় এবার ২ দিন ছুটি, বড় ঘোষণা নবান্নের

একটা সময় তৃণমূল বিরোধী লক্ষ্মণ শেঠ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি এমন আনুগত্য দেখাতে শুরু করেন, যে দলের অনেকেই তাঁকে তৃণমূল পরিবারে সামিল করারও কথা ভাবেন। তবে বাধ সাধেন একজনই। ‘নন্দীগ্রামের গণহত্যার নায়ক’কে কোনও ভাবেই দলে নেওয়া হবে না, বদ্ধপরিকর রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মেদিনীপুরের অবিসংবাদিত এই তৃণমূল নেতার সাফ কথা, “উনি (লক্ষ্মণ শেঠ) বলছেন নন্দীগ্রামের ঘটনায় বুদ্ধবাবুর সরকার দায়ী। কিন্তু মানুষ তো সামনে ওনাকেই দেখেছে। আমি কখনই তা ভুলে যেতে পারি না, ভুলবও না। নন্দীগ্রামের মানুষ যে আস্থার উপর দাঁড়িয়ে লড়াই সংগ্রাম চালিয়েছে, সেই আস্থা থেকে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনও বিচ্যুতি হবে না। আমার কোনও পরিবর্তন হবে না”। এখানেই শেষ নয়, লক্ষ্মণ শেঠ চাইলেও যে তিনি তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলবেন সেকথাও সাফ জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

আরও পড়ুন- গতি বাড়িয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’, ১৫ তারিখ প্রভাব দেখবে পশ্চিমবঙ্গ!

অন্যদিকে,  কুল হারিয়ে তৃণমূলে আসতে মরিয়া একদা সিপিএম নেতা। কিন্তু পরাছেন না। আর সেজন্য পূর্ব মেদিনীপুরের প্রতাপশালী তৃণমূল নেতাকেই সরাসরি দায়ী করছেন লক্ষ্মণ শেঠ। তাঁর কথায়, “শুভেন্দু অধিকারী আমার ফোনই ধরে না। ও রাজি হলেই তৃণমূল আমাকে নবে”।

আরও পড়ুন- সামনাসামনি বসে বর-কনে, অনুষ্ঠান বাড়িতে আচমকাই হাজির ‘বিশেষ অতিথি’, ভেস্তে গেল বিয়ে

সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বাম নেতাই স্রেফ তৃণমূলে যোগ দেওয়াই নয়,শাসক দলের টিকিটে জিতে মন্ত্রীও হয়েছেন। বাম আমলের  প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা উদয়ন গুহ-রা কাস্তে-হাতুড়ির সঙ্গ ছেড়েই ঘাসফুলে এসেছেন।  লক্ষ্মণ শেঠেও মনে প্রাণে পূর্বসূরিদের পথে হাঁটতে চাইছেন। তবে শুভেন্দু অধিকারী যতদিন রয়েছেন, ততদিন তাঁর এই মনস্কামনা অপূর্ণ থাকবে  বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।

.