মানুষের উপকারকেই শিবসেবা: স্বামী আত্মস্থানন্দ
মরতে তো একদিন হবেই। কিন্তু মানুষকে আপন বোধে সেবা করতে করতে মরার চেয়ে ভাল কিছু নেই। এমন দর্শনে বিশ্বাসী মানুষটি দীর্ঘ কর্তব্যপথ পেরিয়ে, অবশেষে চিরঘুমে গেলেন। প্রেসিডেন্সির মেধাবী ছাত্র সব ছেড়ে সন্ন্যাসী। যেখানে আর্তের ক্রন্দন, সেখানেই পৌছে গেছেন। ত্যাগব্রতের অনির্বাণ দীপশিখা স্বামী আত্মস্থানন্দ।
ওয়েব ডেস্ক: মরতে তো একদিন হবেই। কিন্তু মানুষকে আপন বোধে সেবা করতে করতে মরার চেয়ে ভাল কিছু নেই। এমন দর্শনে বিশ্বাসী মানুষটি দীর্ঘ কর্তব্যপথ পেরিয়ে, অবশেষে চিরঘুমে গেলেন। প্রেসিডেন্সির মেধাবী ছাত্র সব ছেড়ে সন্ন্যাসী। যেখানে আর্তের ক্রন্দন, সেখানেই পৌছে গেছেন। ত্যাগব্রতের অনির্বাণ দীপশিখা স্বামী আত্মস্থানন্দ।
জুড়াইতে চাই, কোথায় জুড়াই, কোথা হতে আসি, কোথা ভেসে যাই...
বহমানতা জীবনের ধর্ম। উত্স থেকেই আসে সবাই। কিন্তু ভাসতে ভাসতে কে যে কোন মোহনায় গিয়ে উঠবে, বুঝে ওঠা বড় দায়। প্রেসিডেন্সির মেধাবী ছাত্র। তার তরী ভিড়েছিল বেলুড়ের রামকৃষ্ণ ঘাটে। তারপর জীবন জুড়ে শুধু একটাই শব্দ - সেবা আর সেবা। ১৯১৯ সালের ১০ মে জন্ম। ৯৮ বছরের জীবনদীপ নিভল রবিবার। অবিভক্ত বাংলায় ঢাকার কাছে সবজপুরে জন্ম। ১৯৩৮ সালে শ্রীরামকৃষ্ণের সন্ন্যাসী শিষ্য বিজ্ঞানানন্দের কাছে দীক্ষা নেন আত্মস্থানন্দ। ১৯৪১ সালের ৩ জানুয়ারি ২২ বছর বয়সে বেলুড় মঠে যোগ দেন। ১৯৪৫ সালে ব্রহ্মচর্য গ্রহণ। ১৯৪৯ সালে সন্ন্যাস গ্রহণ। নতুন নাম হয় স্বামী আত্মস্থানন্দ। ২০০৭ সালের ৩ ডিসেম্বর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ১৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন।
স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে উদ্বুদ্ধ। আত্মশ্রাদ্ধ সম্পন্ন করে সন্ন্যাসীর ব্রত নিয়েছিলেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে মানুষের উপকারকেই শিবসেবা বলে মনে করতেন স্বামী আত্মস্থানন্দ। রাঁচিতে টিবি রোগীদের স্বাস্থ্যোদ্ধার কেন্দ্রে নিরলস ভাবে খেটে গিয়েছেন। ১৯৫৮ সালে রেঙ্গুন সেবাশ্রমের দায়িত্ব নিয়ে যান। তাঁর তত্ত্বাবধানে অচিরেই বর্মার সেরা হাসপাতাল হয়ে ওঠে রেঙ্গুন সেবাশ্রম।
দেশে বিদেশে রামকৃষ্ণ ভাবাদর্শ প্রচার করেছেন। মায়ের কথা, স্বামীজির বাণী, বেদান্তের আদর্শ অন্তস্থ করেছিলেন তিনি। তাঁর শিক্ষা ও কাজেও ছিল সেই আদর্শের প্রতিফলন। সুবক্তা, পণ্ডিত, বহুমুখী জ্ঞানের মানুষটির প্রয়াণ নিঃসন্দেহে নক্ষত্র পতন। যিনি বলতেন, মরতে তো একদিন হবেই। কিন্তু মানুষকে আপন বোধে সেবা করতে করতে মরার চেয়ে ভাল কিছু নেই।