চোরাশিকারির পাতা ফাঁদে আটকে চিতাবাঘ! গর্জনের আওয়াজে শেষমেশ উদ্ধার
শনিবার চা বাগানের শ্রমিকরা সেই বাগানের পাশে থাকা ঝোপের মাঝখান দিয়ে যাবার সময় চিতা বাঘের গর্জন শুনতে পায়। প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাগানের শ্রমিকরা। পরে দূর থেকে দেখতে পান যে একটি চিতাবাঘ পায়ে ফাঁদ লাগা অবস্থায় ছটফট করছে। এরপরে বিষয়টি জানানো হয় বিন্নাগুরি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের কর্মীদের।
প্রদ্যুৎ দাস: চোরা শিকারিদের পাতা ফাঁদে আটকা পড়লো পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো হলদিবাড়ি চা বাগানে। ঘুম পাড়ানি গুলি করে ফাঁদে আটকে পরা চিতা বাঘকে উদ্ধার করল বন কর্মীরা। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার বারারহাট ব্লকের মরাঘাট রেঞ্জের অন্তর্গত সাউথ-মরা ঘাট ১২ নম্বর কম্পার্টমেন্টে। হলদিবাড়ি চা বাগান এবং মরাঘাট জঙ্গলের মাঝে পাতা হয়েছিল বন্যপ্রাণী ধরার ফাঁদ। মূলত চোরা শিকারীরা এই ফাঁদ পেতে থাকে বন শুয়োর, খরগোশ এবং চিতা বাঘ শিকারের জন্য বলেই প্রাথমিক অনুমান।
আর সেই পাতা ফাঁদেই আটকে পড়েছিল পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘটি। শনিবার চা বাগানের শ্রমিকরা সেই বাগানের পাশে থাকা ঝোপের মাঝখান দিয়ে যাবার সময় চিতা বাঘের গর্জন শুনতে পায়। প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাগানের শ্রমিকরা। পরে দূর থেকে দেখতে পান যে একটি চিতাবাঘ পায়ে ফাঁদ লাগা অবস্থায় ছটফট করছে। এরপরে বিষয়টি জানানো হয় বিন্নাগুরি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের কর্মীদের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মরাঘাট রেঞ্জ এবং বিন্নাগুরি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের বন কর্মীরা।
দুপুর থেকে চিতা বাঘ টিকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করা হয় কিন্তু উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। এরপরেই জলপাইগুড়ি থেকে ডাকা হয় ট্যাঙ্কুলাইজার টিমকে। জলপাইগুড়ি থেকে ট্যাঙ্কুলাইজার টিম পৌঁছায় হলদিবাড়ি চা বাগানে। এরপর ঘুমপাড়ানি গুলি করে কাবু করা হয় চিতা বাঘটিকে। এদিকে চোরা শিকারীদের ফাঁদে চিতা বাঘ আটকে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়তে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান সেখানে। ঘুম পাড়ানোর গুলি করে ফাঁদ থেকে মুক্ত করে চিতা বাঘটিকে খাঁচা বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ খয়েরবাড়ি বাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে। সেখানেই চিতা বাঘটির প্রাথমিক চিকিৎসা করা হবে। সুস্থ হলে সেটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে, নাকি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হবে তার সিদ্ধান্ত নেবে বনদফতর।
আপাতত বাঘটির চিকিৎসা চলছে। এই নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে চোরা শিকারিদের উপদ্রব বেড়েই চলেছে। তবে এই নিয়ে ডি এফ ও বিকাশ ভি জানান, ইতিমধ্যেই সেনসেটিভ অঞ্চলগুলোতে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে এবং যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার জন্য রং খেলার আগে চা বাগান ও বনাঞ্চল লাগোয়া গ্রামগুলিতে অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে বাকি চিকিৎসা চলছে যদি সুস্থ হয় সেটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
আরও পড়ুন, 'মমতাও বাইরে গেলে তখন বোমাবাজি করতে পারি, করিনা', বিস্ফোরক সুকান্ত