করোনা মোকাবিলায় রেল! কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপে যুদ্ধকালীন তত্পরতায় তৈরি হচ্ছে আইসোলেশন কোচ
রেলমন্ত্রক থেকে চল্লিশটি আইসোলেশন কোচ তৈরির অনুমোদন পেয়েছে কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপ।
নিজস্ব প্রতিবেদন- করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লকডাউন চলছে। পাশাপাশি চলছে দেশকে করোনা মুক্ত করার চেষ্টা। এই দুর্যোগ মেকাবিলায় দরকার আইসোলেশন সেন্টার। কিন্তু এত আইসোলেশন সেন্টার কোথায় পাওয়া যাবে? এই সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে এসেছে ভারতীয় রেল। বিভিন্ন রাজ্যে পুরনো রেলের বগিগুলোকে আইসোলেশন কোচ বানিয়ে সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্তদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে সেখানে। দেশজুড়ে আইসোলেশন সেন্টারের অভাব মেটাতে ময়দানে নেমে পড়েছে ভারতীয় রেল। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আইসোলেশন রেল কোচ তৈরির কাজ চলছে কাঁচরাপাড়া রেলওয়ে ওয়ার্কশপে।
রেলমন্ত্রক থেকে চল্লিশটি আইসোলেশন কোচ তৈরির অনুমোদন পেয়েছে কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপ। পনেরো বছরের পুরনো থ্রি টায়ার জেনারেল বগিগুলোকে মেরামত করে তৈরি করা হচ্ছে আইসোলেশন ইউনিট। কোচের মূল গঠনের কোনও পরিবর্তন করা হচ্ছে না। কিন্তু ভিতরের সমস্ত ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করা হচ্ছে। বদলে ফেলা হয়েছে কোচ, বাথরুম। পুরো বগি নতুন করে রং করা হয়েছে। জানালায় লাগানো হয়েছে মশার নেট। সেইসঙ্গে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছে স্যানিটেশনের দিকে। পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত পরিবেশ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে রেলের এই আইসোলেশন কোচগুলোকে। এছাড়া কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় কোনও ব্যাক্তির সমস্যা হলে থাকছে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা। রোগীদের জন্য নানা সুযোগসুবিধা থাকছে আইসোলেশন রেল কোচে।
আরে পড়ুন— লকডাউনে বন্ধ ল্যাবরেটরি, বীরভূমে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের
কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই আইসোলেশন রেল কোচ তৈরি কাজ চলছে ডেপুটি মেকানিক্যাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার রমেন মল্লিক এবং ডেপুটি ম্যানেজার মেকানিক্যাল অনিমেষ ঘোষের তত্ত্বাবধানে। তারা জানান, "রেল বোর্ড থেকে মোট চল্লিশটি আইসোলেশন কোচ তৈরির অনুমোদন পেয়েছে কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপ। ইতিমধ্যে কুড়িটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই ওয়ার্কশপে নটি ডিভিশনের জন্য আইসোলেশন কোচ তৈরি হচ্ছে।" ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ডিভিশনে আইসোলেশন কোচ পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডিভিশনগুলি হল শিয়ালদহ, হাওড়া, মালদা এবং আসানসোল। এই কোচগুলো তৈরি করার পর নটি ডিভিশনের মূলত জংশন স্টেশনগুলোতে এই আইসোলেশন কোচগুলিকে রাখা হবে।
কোচ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হবে যেখানে বিদ্যুতের কোনও সমস্যা নেই এবং যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক। এতদিন যাত্রীদের কোচ তৈরি করে এসেছেন এই প্রথম মেডিকেল কোচ তৈরি করতে কাদের সাহায্য নিয়েছেন? উত্তরে রমেন মল্লিক জানান, "কোচ তৈরি করার ক্ষেত্রে খুব একটা বড়সড় গঠনমূলক পরিবর্তন করা হয়নি। তবে যেহেতু আইসোলেশন কোচ। তাই চিকিতসার বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। রেলের মেডিকেল টিমের সাহায্য আমরা নিয়েছি।" রেল সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেয়। এতদিন যাত্রীদের যাতায়াতের সুখ সাচ্ছন্দ্যের পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। এই প্রথম সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের পরিষেবা দিতে পেরে ভীষণ মানসিক তৃপ্তি পেয়েছেন রেলকর্মীরা।