বৃদ্ধাশ্রমে স্বাধীনতার সকাল
ওয়েব ডেস্ক: স্বাধীনতার সকালটা ওদের কাছে অন্যরকম। জাতীয় সঙ্গীতের সুরে ঘুম ভাঙে ওদের। সারাদিন ধরে নানা ব্যস্ততা। কিন্তু এতকিছুর পরেও ওদের মনটা পড়ে থাকে অন্য কোথাও, অন্য কোনওখানে।
ছেলেকে না পাঠানো সেই চিঠি
স্বাধীনতা দিবস। মনে পড়ে তোর সেই ছোটবেলার কথা। ঘুম থেকে উঠেই একছুটে স্কুল। হাতে একটা তেরঙা পতাকা। তারপর আধো গলায় জনগণমন অধি... রাত জেগে শেখাতে হত আমাকে... তাও আবার তোর কত বায়না...স্কুল থেকে এসে শুরু হত তোর গল্প...মনে আছে বাবাই, একবার আধখাওয়া জিলিপিটা নিয়ে এসেছিলি আমার জন্য...
আজকের দিনটা সকাল থেকে আমরা খুব ব্যস্ত রে... ঘুম থেকে উঠেই নানা অনুষ্ঠান...পতাকা তোলা হল...আজ আমাদের স্পেশাল মেনু...তিতিনের মতোন কতগুলি বাচ্চাও এসেছিল... ঠাম্মা ঠাম্মা করে সেকি আবদার... উঠেছিস বাবা ঘুম থেকে?
এই চিঠি শুধু এক মায়ের নয়। বৃদ্ধাশ্রমে থাকা সব মায়েরাই মনে মনে রোজ চিঠি পাঠায় ছেলেকে। আর দিনটা যদি কোনও বিশেষ দিন হয় তাহলে তো কথাই নেই। পুরনো দিনগুলো যেন বড্ড মনে পড়ে যায়।
বৃদ্ধাশ্রম। একসঙ্গে প্রায় ১০০ জন থাকেন। একেক জনের একেকটা কারণ। কারোর ফ্ল্যাটটা ছোট। মায়ের জন্য জায়গা বড় কম। আবার কারোর বাড়িতে রোজ অশান্তি। এটা ওটা লেগেই রয়েছে। তাই একদিন ছেলে আর ছেলের বউকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে ঘর ছেড়ে নতুন ঠিকানায় উঠে আসা। ওরা তো ভাল থাক।
ছেলে বিয়ে করতে চাইত না। এই নিয়ে মা ছেলেতে অশান্তি। একদিন রাগ করে বাড়ি ছেড়ে সোজা বৃদ্ধাশ্রমে। ভেবেছিলেন ছেলে বোধয় হাত ধরে বাড়ি নিয়ে যাবে। তিনবছর হয়ে গেল, একবারের জন্য ছেলে আসেনি। অনেক গল্প এরকম। বুকে পাথর গুঁজে বসে থাকা। আর এরইমধ্যে আনন্দ খুঁজে নেওয়া। নাতনির মুখ মনে পড়লে বুকটা হুহু করে ওঠে। ছেলের একবার মা ডাক শোনার জন্য অনন্ত অপেক্ষা। তবুও ওদের কাছে জানতে চান কেমন আছেন আপনারা? দুচোখের জল ঢেকে উত্তর আসবে,ভালোই আছি।