Uluberia:'চিকিৎসার টাকা চাই', শয্যাশায়ী বাবাকে ভ্যানে চাপিয়ে পথে পথে ঘুরছে ১১ বছরের মেয়ে

পরিবারের একমাত্র উপার্জন করার মতো লোক ছিলেন বাবা। বছর পঞ্চাশের সুশান্ত মণ্ডলই দীর্ঘদিন শষ্যাশায়ী

Updated By: Dec 11, 2021, 04:53 PM IST
Uluberia:'চিকিৎসার টাকা চাই', শয্যাশায়ী বাবাকে ভ্যানে চাপিয়ে পথে পথে ঘুরছে ১১ বছরের মেয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদন: যে বয়সে পড়াশোনা নিয়ে থাকার কথা সেই বয়সেই অসুস্থ বাবাকে নিয়ে সাহায্যের আশায় রাস্তায় মাত্র ১১ বছরের মেয়ে।

হাওড়ার গ্রাম থেকে অসুস্থ বাবাকে ভ্য়ানে চাপিয়ে উলুবেরিয়ার রাস্তায় ঘুরছে এগারো বছরের ঝিলিক। চিকিত্সা করানোর সামর্থ নেই। সংসারে প্রবল অনটন। ভরসা এখন রাস্তা। পাশে দাঁড়ানোর মতো মা ছাড়া কেউ নেই। তাই নিজেই ভ্যান চালিয়ে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে ঘুরছে কিশোরী।

পরিবারের একমাত্র উপার্জন করার মতো লোক ছিলেন বাবা। বছর পঞ্চাশের সুশান্ত মণ্ডলই দীর্ঘদিন শষ্যাশায়ী। শরীরের একাধিক অঙ্গ প্রতঙ্গ এখন আর কাজ করছে না। আয় বন্ধ। ফলে ঝিলিক ও তার মায়ের সামনে এখন শুধুই অন্ধকার। তাতেও দমে যেতে রাজি নয় এগারো বছরের মেয়ে। অসুস্থ বাবাকে ভ্যানে চাপিয়ে নিজেই ঘুরছে উলুবেরিয়ায় রাস্তায় রাস্তায়। ভ্যানে শুয়ে রয়েছেন অসুস্থ সুশান্ত মণ্ডল। রোদ, বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে তাঁর মাথায় খাটিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি ছাতা। এরকম অবস্থায় শহরের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে বাবার চিকিত্সার জন্য সাহায্য চাইছে ঝিলিক।

প্রায়ই শোনা যায় বাবা-মার দায়িত্ব নিতে চাইছে না সন্তান। কোথাও বৃদ্ধাশ্রম তো কোথাও বাবা-মাকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা চোখে পড়ছে সংবাদমাধ্যমে। সেখানে এমন এক দৃশ্য হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বাবাকে নিয়ে সকালেই রামচন্দ্রপুর থেকে বেরিয়ে পড়ে ভ্যান চালিয়ে। রোজ যে সাহায্যে মেলে তা নয়। কখনও কখনও খালি হাতেও ফিরতে হয়।  কখনও কখনও সারাদিন কাওয়াও হয় না। ঘরে ফিরে শরীর আর সাড়া দেয় না। তবুও বাবার সাহায়্যের জন্য ছুটে যেতে হয় ঝিলিককে।

কী বলছে ঝিলিক? জি ২৪ ঘণ্টাকে ঝিলিক জানায়, রামচন্দ্রপুরে আমাদের বাড়ি। সাহায্যের জন্য রোজই বাবাকে নিয়ে বের হই। চিকিত্সার পাশাপাশি সংসারে অভাব রয়েছে। সাহায্যের জন্য আমরা আসি। নিজেই টলি চালিয়ে নিয়ে আসি। সবদিন চান-খাওয়া হয় না। 

এই ঘটনা নিয়ে বিশিষ্ট সমাজকর্মী বোলান গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, এরকম মর্মান্তিক দৃশ্য হয়তো আরও দেখা যাবে। শুনতে পাই বিভিন্ন জায়গায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও চিকিত্সার জন্য কেন গ্রাম ছেড়ে এতদূর আসতে হবে। মানুষের খাদ্য বস্ত্র চিকিত্সার ব্যবস্থা এখনও আমরা করে উঠতে পারিনি। এটা দুর্ভাগ্যের। 

এমন ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। জি ২৪ ঘণ্টাকে তিনি বলেন, গোটা বিষয়টি এখনও জানি না। এনিয়ে খোঁজখবর করার জন্য উলুবেরিয়ায় আমাদের যেসব আধিকারিকরা রয়েছে তাদের পাঠাচ্ছি।

আরও পড়ুন-Zee 24 Ghanta Impact: অসুস্থ বাবাকে নিয়ে রাস্তায় ১১ বছরের ঝিলিক, সাহায্যের হাত বাড়ালেন Dev

শিশু অধিকার কর্মী সত্যগোপাল দে এই ঘটনা নিয়ে বলেন, সরকারের বেশকিছু সুযোগ সুবিধে থাকা সত্ত্বেও কেন একজন ১১ বছরের মেয়েকে এভাবে পথে পথে ঘুরতে হচ্ছে সেটাই এখন প্রশ্ন। তবে জি ২৪ ঘণ্টার প্রচারের পর বিভিন্ন মহল থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে আশা করছি। 

এমন এক কথা জেনেছেন সাংসদ দেবও। তিনি বলেন, এরকম এক ঘটনা মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য জি ২৪ ঘণ্টাকে ধন্যবাদ। দেখে সত্যিই খারাপ লাগছে। আমার পক্ষ থেকে যতটা পারা যায় চেষ্টা করব। ওনাকে ঠিক করতে দিতে পারব এমনটা বলতে পারি না। তবে তবে আমাদের চেষ্টা থাকবে ঝিলিকের বাবা যেন ঠিক হয়ে যায়। ওকে যেন ভ্যানে নিয়ে ঘুরতে না হয়। সবাইকে একসঙ্গে মিলে ওর সঙ্গে থাকতে হবে। 

 Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.