গ্রাউন্ড জিরো রিপোর্ট : মাটির নীচে কংক্রিটের কাঠামো, ১২ বছর পেরিয়েও Singur-এ চাষবাস বিশ বাঁও জলে

কারখানার জন্য মাটির নীচে গড়ে তোলা হয়েছিল ৭ থেকে ৮ স্তরের কংক্রিটের কাঠামো। পাইপ বসিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল নিকাশী ব্যবস্থা। সবমিলিয়ে মাটির উপরের স্তরের সঙ্গে নীচের স্তরের কোনও সংযোগ নেই।

Updated By: Dec 26, 2020, 08:17 PM IST
গ্রাউন্ড জিরো রিপোর্ট : মাটির নীচে কংক্রিটের কাঠামো, ১২ বছর পেরিয়েও Singur-এ চাষবাস বিশ বাঁও জলে

পূজা মেহতা : সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাসস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। সিঙ্গুর রেলস্টেশনের কাছে ১১ একর জমির উপর তৈরি হচ্ছে এই পার্ক। আর মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই রাজ্য রাজনীতিতে আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে নতুন করে যেন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে সিঙ্গুর (Singur) প্রসঙ্গ। শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। কিন্তু এই কৃষি-শিল্পের দোলাচাল, শাসক-বিরোধী তরজার মাঝে কেমন আছে সিঙ্গুর? টাটার ন্যানো কারখানা বিদায়ের পর ১২ বছর কেটে গিয়েছে। কারখানা হয়নি। চাষ? সেটা হয়েছে কি? কী পরিস্থিতি সেখানকার চাষজমির? গ্রাউন্ড জিরো ঘুরে দেখল আমাদের প্রতিনিধি।

৯৯৭ একর জমির উপর কারখানা হওয়ার কথা ছিল। সেইমত শুরু হয়েছিল কাজও। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপোড়েনে মাঝপথেই ছন্দপতন। বাংলার সিঙ্গুর থেকে গুজরাটের সানন্দে ন্যানো কারখানার বিদায়। পরিত্যক্ত কারখানার সেই জমিকে পুনরায় চাষযোগ্য করে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি। কারখানার জন্য মাটির নীচে গড়ে তোলা হয়েছিল ৭ থেকে ৮ স্তরের কংক্রিটের কাঠামো। এই ১২ বছরে তা পুরো সরানো সম্ভব হয়নি। কারখানার জন্য মাটির নীচে পাইপ বসিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল নিকাশী ব্যবস্থা। সিঙ্গুরে (Singur) গিয়ে দেখা গেল, সেইসব পাইপ এখনও পড়ে। কংক্রিটের কাঠামো, নিকাশি ব্যবস্থা সবমিলিয়ে মাটির উপরের স্তরের সঙ্গে নীচের স্তরের কোনও সংযোগ নেই। পড়ে থেকে থেকে এই ১২ বছরে মাটি হারিয়েছে তার গুণাগুণও। ট্রাক্টর চালিয়ে, হাল দিয়ে জমিকে পুরনো চাষ অবস্থায় ফেরানোর চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু মাটির নীচে থাকা কংক্রিটের কাঠামোর জন্য তা সফল হয়নি। ফলে একদিকে শিল্প হয়নি, অন্যদিকে চাষও বন্ধ। বাস্তব ছবি বলছে সেকথাই।

এক দশক পর সিঙ্গুরে মুখ্যমন্ত্রীর শিল্প ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘোষণার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, নিজের স্বার্থেই সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানার বিরোধিতা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আন্দোলনে সামিল হয়ে ভুল করেছিলেন তাঁরা। সিঙ্গুরে যদি শিল্প হত, তাহলে চা বিক্রি করেও সংসার চালাতে পারতেন। এখন কাজের জন্য লিলুয়া, বালির মতো জায়গায় যেতে হচ্ছে। আবার রাজ্য সরকারের কৃষিভিত্তিক শিল্পস্থাপনের উদ্যোগকে আবার স্বাগত জানিয়েছেন সিঙ্গুরবাসীদের অপর একটি অংশ। অন্যদিকে বিরোধীরা তোপ দেগেছেন, 'ভোটের আগে টোপ' বলে। দুটি বিধানসভা নির্বাচন পেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে এখন সিঙ্গুরে শিল্পের কথা। আর বামেদের পাল্টা প্রশ্ন, "সিঙ্গুরে শিল্প করার সময় কোথায়?"

আরও পড়ুন, 'মতপার্থক্য যেন শ্রদ্ধার অন্তরায় না হয়, সব রাজনৈতিক দলই এই দোষে দুষ্ট'

.