'রাজ্যপালকে ছোট করছেন আমলারা, ১১ তারিখ ৪ ঘণ্টা কার পাবলিসিটি হয়েছিল সবাই জানে', বিস্ফোরক ধনখড়
আজ উত্তর ২৪ পরগনার ধামাখালি ও সজনেখালিতে প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেই বৈঠক ভেস্তে যায়। একইসঙ্গে আজ ১১ তারিখের কার্নিভ্যাল নিয়ে ফের তোপ দাগেন জগদীপ ধনখড়।
শ্রেয়সী গাঙ্গুলি : ফের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যপাল। নতুন মাত্রা পেল রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। জগদীপ ধনখড় অভিযোগ করেছেন, "রাজ্যপালকে ছোটো দেখাতেই আমলারা আসেননি। মুখ্যমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রীরা এলে তাঁরা আসেন।" আজ উত্তর ২৪ পরগনার ধামাখালি ও সজনেখালিতে প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু দুটি বৈঠকের একটিতেও যোগ দিতে আসেননি প্রশাসনের কেউ। ধামাখালির পর ভেস্তে গেল সজনেখালির বৈঠকও। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরই ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যপাল। শুধু বৈঠক নিয়ে নয়, এদিন ফের একবার কার্নিভ্যাল নিয়েও তোপ দাগেন রাজ্যপাল। বলেন, "সবাই জানে ১১ তারিখ কার পাবলিসিটি হয়েছিল ৪ ঘণ্টা ধরে।"
আজ ধামাখালিতে ডিএম, এসপি, সভাধিপতিদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। এদিকে রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণ ছাড়া কোনও বৈঠকে যাওয়া সম্ভব নয়। চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে সাফ জানান উত্তর ২৪ পরগনা জেলাশাসক। এমনকি জেলাশাসক নিজেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। এরফলে পণ্ড হয়ে যায় বৈঠক। আর এতেই চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পরিস্থিতিকে সাংবিধানিক সংকট বলে বর্ণনা করেন রাজ্যপাল। "রাজ্য়পাল কি রাজ্য সরকারের অধীনস্থ? রাজ্যপাল কথা বলতে চাইলে সরকারের অনুমতি লাগবে কেন?" প্রশ্ন তোলেন তিনি। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত এটাই প্রথম নয়। এর আগে শিলিগুড়িতেও রাজ্যপালের ডাকা প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে আসেননি তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি থেকে প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সেই ঘটনাতেও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন রাজ্যপাল। এবারও ধামাখালিতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। শুধু তাই নয়, ধামাখালির পর সজনেখালিতেও প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা ছিল ধনখড়ের। সেই বৈঠকে এসপি ও সভাধিপতিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা থাকলেও, একই চিঠিতে কাউকে আমন্ত্রণ জানাতে অস্বীকার করেন জেলাশাসক। স্পষ্ট জানান, রাজ্যের অনুমতি ছাড়া কাউকে আমন্ত্রণ সম্ভব নয়। আরও বলেন, উচ্চপর্যায়ের আধিকারিকরা মুখ্যমন্ত্রীর শিলিগুলি সফরে ব্যস্ত থাকার কারণে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। এরপর সজনেখালিতে বৈঠকের সময় দেখা যায়, জেলা শাসক, এসপি কেউ উপস্থিত নেই। জনপ্রতিনিধিদের চেয়ারও ফাঁকা।
আরও পড়ুন, 'ভারত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাধারা অভিনব', মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রশংসা নোবেলজয়ী অভিজিতের
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের সূত্রপাত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে নিগ্রহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এরপর জিয়াগঞ্জে শিক্ষক পরিবারের খুনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যে সেই ফাটল আরও চওড়া হয়। সংঘাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়, যখন রাজ্যপাল অভিযোগ করেন কার্নিভালের দিন তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়ে অপমান করেছে রাজ্য সরকার। তাঁকে 'সেন্সর' করা হয়েছিল। তিনি সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানের ৪ ঘণ্টা উপস্থিত থাকলেও, তাঁকে কোনও সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়নি। তাঁর উপস্থিতিকে উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি।