মাঘে ছাদনাতলায় সানাই বাজার আগেই, মায়ের বকায় চরম সিদ্ধান্ত নিল কিশোরী
মাঘ মাসের ২ তারিখে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু কিছু দিন আগে হঠাত্ই ফোন করে ওই যুবক জানায় যে তার বিয়েতে মত নেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। বিয়ে ঠিক করেছিল পরিবার। আগামী মাঘ মাসেই বিয়ে স্থির হয়েছিল। কিন্তু সম্পর্কে টানাপোড়েনের জেরে সম্পর্ক পরিণতি পাওয়ার আগেই আত্মঘাতী হল নবম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুরে।
নরেন্দ্রপুরের গোপালনগরের বাসিন্দা নবম শ্রেণির ছাত্রী সাথী বৈদ্যের সঙ্গে বুবাই নস্কর নামে এক যুবকের প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ঘুটিয়ারি শরিফ এলাকাব বাসিন্দা বুবাই নস্কর ৷ সাথী বৈদ্যের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই বাড়ির সম্মতিতে বিয়েও ঠিক হয়ে গিয়েছিল যুগলের। মাঘ মাসের ২ তারিখে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল দুজনের ৷ কিন্তু তার আগেই সম্পর্কে জটিলতা দেখা দেয়। টানাপোড়েন শুরু হয়ে যায়।
আরও পড়ুন, বর-কনে তৈরি, মন্ত্র পড়ে চারহাত এক হওয়ার অপেক্ষা, এমন সময় বিয়েবাড়িতে ছন্দপতন
মৃতার মা অনিমা বৈদ্য জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে হঠাত্ই ফোন করে ওই যুবক জানায় যে তার বিয়েতে মত নেই। ওই ছাত্রীকে বিয়ে করতে সে রাজী নয় ৷ খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে ওই যুবক। আর সেকারণেই বিয়েতে বেঁকে বসেছে ওই যুবক।
একথা জানাজানি হওয়ার পরই ওই যুবকের সঙ্গে ছাত্রীর সম্পর্কের অবনতি হয় ৷ ফোনে দুজনের মধ্যে বেশ কয়েকবার কথা কাটাকাটি হয়। মৃতার মায়ের অভিযোগ, ওই ছাত্রী স্কুলে যাওয়ার পথে বা রাস্তায় বেরলেই অভিযুক্ত যুবক তাকে উত্যক্ত করতে শুরু করে। বেশ কয়েকবার ওই যুবককে বুঝিয়েও কাজ হয়নি।
এদিকে, আগামী সোমবার থেকে স্কুলে পরীক্ষা শুরু। এই পরিস্থিতিতে এসব বিষয়ে আর মাথা না ঘামিয়ে, ওই ছাত্রীকে পড়াশোনায় মন দেওয়ার কথা বলেন অনিমা বৈদ্য। কিন্তু মানসিক অবসাদে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল ওই কিশোরী। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে টিভি দেখা নিয়ে মেয়েকে খানিক বকাবকিও করেন মা। আর তারপরই আত্মঘাতী হয় ওই ছাত্রী।
আরও পড়ুন, দাদার বন্ধুর সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় বোন, কেউ ভাবতে পারেনি পরিণতি এমন নৃশংস হতে পারে!
মায়ের কাছে বকুনি খেয়ে শৌচাগারে যায় ওই ছাত্রী। দীর্ঘক্ষণ শৌচাগার থেকে না বেরলে সন্দেহ হয় বাড়ির লোকের। দরজা ভেঙে দেখা যায়, শৌচাগারের মধ্যেই গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ওই কিশোরী।
সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় নরেন্দ্রপুর থানায় ৷ পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে৷ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিস। তবে, পরিবার কী করে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে ঠিক করল, সেটাও অবশ্যই প্রশ্নসাপেক্ষ।