Egra Blast | Mamata Banerjee: 'ওসি ব্যবস্থা না নিলে আমাকে জানাবেন, সরিয়ে দেব', খাদিকুলের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সিএসের দায়িত্বে ২ মাসের মধ্যে রিপোর্ট পাব। ক্লাস্টার হবে। পঞ্চায়েতের এক্তিয়ারে পড়েনা'। খাদিকুলকান্ডে ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রামে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, 'ইন্টেলিজেন্স ফেলিওর ছিল। কোথাও বেআইনি বাজি কারখানা দেখলেই ওসিকে খবর দিন। ওসি ব্যবস্থা না নিলে আমাকে জানান। সরিয়ে দেব ওসিকে'।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাজি কারখানায় মৃতের পরিবারদের আর্থিক সহায়তা দিতে শনিবার এগরার খাদিকুলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এরপর সেখান থেকেই মমতা যাবেন শালবনির জনসভায়। গত বৃহস্পতিবার এগরায় মুখ্যমন্ত্রীর সফর শেষ মুহুর্তে স্থগিত হয়। বিস্ফোরণের জায়গা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরেই তৈরি করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল। সেখান থেকেই মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনা নিচ্ছি বেআইনি বাজি নিয়ে। সরকার থেকে গ্রিন বাজি কারখানা নিয়ে ক্লাস্টার করব। চাকরীটাও বাঁচবে। ফায়ার ক্র্যাকার বেআইনি। এতগুলো লোককে নিয়ে মরে গেল। আমরা প্রথম থেকেই যোগাযোগ রাখছি’। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘বেআইনি বাজি কারখানায় যারা কাজ করেন তারা গরিব মানুষ তাদের যাতে চাকরি না হারাতে হয় তার জন্য রাজ্যের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারিভাবে বাজি কারখানা গড়ে তোলা হবে। সেটা অবশ্যই গ্রীন ক্রেকার পদ্ধতিতে তৈরি করা হবে। ফায়ার ক্রেকার অনুমোদন দেওয়া হবে না’। তিনি গ্রামবাসীদের বললেন, ‘এটা একটি উড়িষ্যা বর্ডার। এই বর্ডার দিয়ে ঝাড়খন্ড-উড়িষ্যায় বেআইনি বাজি সামগ্রী সরবরাহ চলত। সরকারি ভাবে বাজি কারখানা গড়ে তোলার পর যারা যারা উৎসাহী বাজি কারখানা করতে চান তারা আবেদন করতে পারেন। কারণ বাজি ও মানুষের প্রয়োজন বিভিন্ন উৎসবে লাগে’।
আরও পড়ুন: Sougata Roy: 'সব পুলিসকর্মী ভালো নয়, ঘুষ খায় কাজ করে না!' বিস্ফোরক সাংসদ সৌগত
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মানবিক উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছি। অনেকে রাজনীতির জলঘোলা করেছে। আমি রাজনীতি করতে আসিনি। পরিবারগুলি আড়াই লাখ আর পরিবারের একজন করে হোমগার্ডের চাকরী পাবে। বিদ্যুতে যাদের মৃত্যু হয়েছে সেই পরিবারগুলি ২ লাখ করে পাবে। কাল থেকেই হোম গার্ডের চাকরীতে যোগ দেবে। নিয়োগপত্র আমি দিয়ে যাচ্ছি’।
তিনি বলেন, যার যার পড়াশুনোর সমস্যা আছে সেই নামগুলি লিখিয়ে দিতে বলেন তিনি। বার্ধক্য ভাতা নিয়ে কার সমস্যা হচ্ছে সেই প্রশ্নও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভানু বাগ সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যিনি বেআইনি বাজি কারখানা করেছেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি মারা যান। যদি কোথাও ফায়ার ক্রাকার দেখেন সঙ্গে সঙ্গে ওসিকে জানাবেন। ওসি ব্যবস্থা না নিলে আমাকে জানাবেন। আমি সরিয়ে দেব। এখানকার ওসিকেও সরিয়ে দিয়েছি। ইন্টেলিজেন্সের ফেলিওর ছিল। আমি এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইছি’।
আরও পড়ুন: Bengal Weather: জেলায় জেলায় ঝোড়ো হাওয়া-বৃষ্টি, স্বস্তির আবহাওয়া বঙ্গে
গত ১৬ মে খাদিকুলে বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ১২ জন। ঘটনার পরদিনই এলাকায় মিছিল করে এনআইএ তদন্তের দাবী জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও রাজ্য সরকার ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। গ্রেফতার করা হয় ভানুবাগের স্ত্রী, ছেলে ও ভাইপোকে। ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় সাংসদ দিলীপ ঘোষও। এলাকায় পৌঁছে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, দোলা সেনরা। খাদিকুলের পরপর রাজ্যে একাধিক জায়গায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মুখ্যমন্ত্রী আসার কারণে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে এলাকা। বসানো হয়েছে গার্ডরেল। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের তীব্র নিন্দা করেছে বিজেপি।
কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ওনার লোকেরা বোমা ফাটিয়ে মানুষ মারবে। আর উনি প্যাকেজ দেবেন। এই প্যাকেজ দিয়ে কতদিন চালাবেন? বোমা কারখানা বন্ধ করছেন না কেন? বোমা সাপ্লাইয়ের হাব হয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গ। আমি আফগানিস্তান বললে ববি হাকিমের কষ্ট হয়। এ রাজ্য আফগানিস্তান, সিরিয়া সব হয়ে গেছে। লোকে কেন আপনাদের আক্রমণ করছে? কেন চোর বলছে? ওরা অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে গিয়েছে।‘