উত্পাদন আর আয় বাড়াতে মুর্শিদাবাদে ৫৫০ জন রেশম শিল্পীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে ইডিআইআই

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকেই শুরু হচ্ছে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, চলবে তিন বছর ধরে। খাদি গ্রামোদ্যোগ আয়োগ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের ‘স্ফূর্তি’ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।

Reported By: সুদীপ দে | Updated By: Dec 17, 2019, 03:10 PM IST
উত্পাদন আর আয় বাড়াতে মুর্শিদাবাদে ৫৫০ জন রেশম শিল্পীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে ইডিআইআই

নিজস্ব সংবাদদাতা: বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলা বহুদিন ধরেই তার রেশম উৎপাদন এবং রেশমের উত্কৃষ্ট বস্ত্র তৈরির জন্য বিখ্যাত। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রেশম উৎপাদন এবং রেশম শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা আর্থ-সামাজিক ভাবে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন। এ বার তাই রেশম উৎপাদন, রেশম শিল্পের মানোন্নয়ন এবং পাশাপাশি এর সঙ্গে যুক্ত মানুষের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নে উদ্যোগী হল এন্ট্রেপ্রেনিউর ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’ বা ইডিআইআই (EDII)। গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য সুপ্রসিদ্ধ এই প্রতিষ্ঠানটি মুর্শিদাবাদের ৫৫০ জন রেশম শিল্পীকে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকেই শুরু হচ্ছে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, চলবে তিন বছর ধরে। খাদি গ্রামোদ্যোগ আয়োগ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের ‘স্ফূর্তি’ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। ইডিআইআই সূত্রের খবর, এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যে ৫৫০ জন শিল্পীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তাঁদের মধ্যে ২২৬ জনই মহিলা। শিল্পীদের ৪০ শতাংশই তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত।

ইডিআইআই-এর ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার সুবীর রায় বলেন, “গ্রামীণ শিল্পীদের ক্ষমতায়ণ করাই এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্য। রেশম শিল্পীরা এতদিন সুতো তৈরি ও বুননের কাজই করতেন। একটি সুবিধাকেন্দ্র (কমন ফেসিলিটি সেন্টার) গড়ে তুলে তাঁদের আরও পেশাদার ভাবে উৎপাদনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।” বর্তমানে এখানে প্রায় ২ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পর তা বেড়ে অন্তত ৮ কোটি টাকা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। সুবীর রায় আরও বলেন, “রেশম শিল্পীদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে পারলে তাঁদের আয়ও বাড়বে। রেশম শিল্পীরা বর্তমানে মাসে ৩ হাজার ৫০০ টাকা আয় করেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পর তা বেড়ে হবে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা।”

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব আইন কার্যকর না করলে রাষ্ট্রপতি শাসনও জারি হতে পারে রাজ্যে, অভিমত সংবিধান বিশেষজ্ঞদের

ইডিআইআই-এর দাবি, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পর আগামী পাঁচ বছরে রেশমজাত পণ্য উৎপাদনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে আরও অন্তত ২৫০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। জানা গিয়েছে, রেশম বস্ত্রের উত্পাদন বাড়াতে এবং উৎপাদিত পণ্যের গুণমান বাড়ানোর জন্য ৩৫টি ডবল জ্যাকুয়ার্ড তাঁত মেশিন, ৩৫টি সিঙ্গল জ্যাকুয়ার্ড তাঁত মেশিন, ৩০টি পিট লুম আর ৩০টি হস্তচালিত রিলিং ও টুইস্টিং মেশিনও দেওয়া হবে।

রেশম শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নের স্বার্থে প্রথম সারির রফতানি প্রতিষ্ঠান ও একাধিক ই-কর্মাস পোর্টালের সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপনের ব্যবস্থা করবে ইডিআইআই। সংস্থার আশা, ভবিষ্যতে বিদেশে রেশম বস্ত্র রফতানি, আন্তঃরাজ্য বাজারে বিপণনের যোগসূত্র হিসাবে কাজ করবে এই শিল্প তালুক।

.