Duttapukur Blast: 'খাবার কেনার ১০ টাকাও নেই, ১৮ হাজারে স্বামীকে নেব কীভাবে?',কেঁদেই আকুল কলেজের বিবি

পুলিস সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, দেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবে না তারা। ওদিকে পরিবারের সদস্যদের স্পষ্ট কথা, ৯০ হাজার টাকা দিয়ে দেহ নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় তাঁদের পক্ষে। 

Updated By: Aug 28, 2023, 03:26 PM IST
Duttapukur Blast: 'খাবার কেনার ১০ টাকাও নেই, ১৮ হাজারে স্বামীকে নেব কীভাবে?',কেঁদেই আকুল কলেজের বিবি

মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে মুর্শিদাবাদের একই পরিবারের যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিজনেরা এখন কীভাবে দেহ নিয়ে যাবেন সেটা ভেবেই আকুল। বারাসত হাসপাতালের বাইরের গাড়ি দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য দেহ পিছু ১৮ হাজার টাকা করে চেয়েছে। অর্থাৎ, মুর্শিদাবাদের ৫ জনের দেহ নিয়ে যেতে মোট ৯০ হাজার টাকা দিতে হবে পরিবারকে। কিন্তু যেখানে খাবার কিনে খাওয়ার জন্য মাত্র ১০ টাকাও নেই, সেখানে এত টাকা কীভাবে দেবে পরিবার? ভেবে কূল কিনারা পাচ্ছেন না তাঁরা। পুলিসও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, কোনও সাহায্য করতে পারবে না তারা। 

পুলিসকে বললে পুলিস সাফ জানিয়ে দেয়, দেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবে না তারা। ওদিকে পরিবারের সদস্যদের স্পষ্ট কথা, ৯০ হাজার টাকা দিয়ে দেহ নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় তাঁদের পক্ষে। বিস্ফোরণে নিহত কলেজ শেখের স্ত্রী লুফানি বিবি ক্রমাগত কেঁদে চলেছেন। বলছেন, '১০ টাকা নেই কিছু কিনে খাবার জন্যও। ১৮ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে কীভাবে নিয়ে যাব? আমার স্বামীকে এখানে ফেলেও তো যেতে পারব না!'  সব মিলিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন তাঁরা। হা পিত্যেশ করে বসে আছেন বারাসত হাসপাতালের বাইরে। 

বিস্ফোরণে নিহত মোট ৯ জনের দেহ শনাক্ত হয়েছে। নিহতরা কলেজ শেখ (৪০), রনি শেখ (১৬), জিরাট শেখ (৫০), মাসুম শেখ (১৬), আন্দাজ শেখ (১৯), শাহবাজ আলম (২৪), কেরামত আলি (৪৫), রবিউল আলি (২১) ও সামসুল আলি (৫০)। এর মধ্যে একই পরিবারের রয়েছেন ৫ জন। এদিন কলেজ শেখের দেহ শনাক্ত করেন স্ত্রী লুফানি বিবি।  রনি শেখের দেহ শনাক্ত করেন মা আলিদা পারভিন। নিহতদের তালিকায় আছেন জিরাট শেখ, মাসুম শেখ ও আন্দাজ শেখ। সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন এই ৫ জন। লেবারের কাজ করতে এসেছেন বলে জানিয়েছিলেন বাড়িতে। কাল বাড়ির লোক জানতে পারেন যে এরকম ঘটনা ঘটেছে। 

মুর্শিদাবাদের সুতি থানার নতুন চাঁদড়া গ্রামে আন্দাজদের। আন্দাজের মা জানিয়েছেন, ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাচ্ছে বলে, বাইরে যায় বেশ কিছুদিন আগে। প্রতি মাসে সেখান থেকে টাকাও পাঠাত। তিনিও সেটাই জানতেন যে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে বাইরে গিয়েছে। কিন্তু আসলে যে বাজি বানাত, সেটা তাঁর জানা ছিল না। জানতে পারলেন, বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর। গতকাল আন্দাজের মা জানতে পারেন যে, তাঁর ছেলে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও নতুন চাদরা গ্রামটি বাজি তৈরির গ্রাম বলেই পরিচিত। এই গ্রামে রয়েছেন একাধিক বাজি তৈরির দক্ষ কারিগর।

রবিবারের দুপুরে বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রাম। বিস্ফোরণের  ২১ ঘণ্টা পরেও দত্তপুকুরকাণ্ডে উদ্ধার হয়েছে ছিন্নভিন্ন হাত-মুণ্ডু! ঘটনাস্থল থেকে ৮০ মিটারের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে হাত। এক প্রতিবেশীর বাঁশ বাগানের পাশে পড়ে মুণ্ডু। পুকুরে ভাসছে দেহ। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে দেহাংশ কয়েকশো মিটার দূরে ছিটকে গিয়ে পড়ে। কিন্তু কী কারণে বিস্ফোরণের অভিঘাত এত বেশি? তদন্তে নেমে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একসঙ্গে বিপুল পরিমাণে শব্দবাজি মজুত করা ছিল। স্টোন চিপস, বারুদ ও রাসায়নিক দিয়ে তৈরি হত এই বাজি। একসঙ্গে বিপুল পরিমাণে মজুত করা সেই বাজি-ই ফাটায় বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল অনেক বেশি।

আরও পড়ুন, Mamata Banerjee: 'কোনও কোনও পুলিস চোখ বুজে বেআইনি কাজ দেখছে', বিস্ফোরণকাণ্ডে তীব্র তোপ মমতার

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

.