লকডাউন! ৩ মাস ধরে নষ্ট টিউবওয়েল, পানীয় জলের সংকটে বল্লভপুরের নতুনগ্রাম
লকডাউন চলছে। রাস্তায় বের হলে পুলিসের বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পুলিসের বাধার থেকেও বড় সমস্যা হল পাশের গ্রামকে নিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদন: শান্তিপুর থানায় অন্তর্গত বল্লভপুর নতুনপাড়া গ্রাম। এই গ্রামে ৮০টি পরিবারের প্রায় তিনশো জন মানুষের বসবাস। লকডাউন চলাকালীন এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে এই গ্রামের পরিবারগুলিকে। না, খাদ্যসামগ্রী নিয়ে নয়। পানীয় জল।
পঞ্চায়েত এলাকার এই গ্রামটিতে আশিটি পরিবারের পানীয় জলের জন্য বরাদ্দ একটি মাত্র ডিপ টিউবওয়েল। কিন্তু প্রায় দেড় মাস ধরে এই টিউবওয়েলটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে পানীয় জলের জন্য প্রচণ্ড কষ্ট করতে হয় বল্লভপুর নতুনপাড়া গ্রামের মানুষদের। বাধ্য হয়ে তাঁরা পানীয় জল আনতে যান পাশের গ্রামে। কিন্তু লকডাউন চলাকালীন পাশের গ্রাম থেকে জল আনা নিয়েও তৈরি হয়েছে সমস্যা।
লকডাউন চলছে। রাস্তায় বের হলে পুলিসের বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পুলিসের বাধার থেকেও বড় সমস্যা হল পাশের গ্রামকে নিয়ে। অভিযোগ, করোনা আতঙ্কের জন্য বল্লভপুর নতুনপাড়া গ্রামের মানুষদের ঢুকতে দিচ্ছে না পাশের গ্রামের মানুষ। যার ফলে চরম পানীয় জলের কষ্টে দিন কাটছে বল্লভপুর নতুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন- লকডাউনের জেরে দূষণ কমলো নদীতেও; ঝকঝকে পরিষ্কার জল বইছে গঙ্গা-যমুনায়!
এই ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, "সবাই দলবদ্ধভাবে জল আনতে যেত। প্রথমদিকে সেটা গ্রামবাসীদের বারণ করা হয়। এর জন্য গ্রামবাসীদের উপর কোন বলপ্রয়োগ করা হয়নি। তাদের বুঝিয়ে বলা হয়েছে একসঙ্গে সবাই যাবেন না। করোনা আতঙ্কে এখন পাশের গ্রামের লোকজনই তাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। এতে আমাদের কিছু করার নেই।"
একটা গ্রামে তিনশো জনের পানীয় জলের একমাত্র সোর্স এই টিউবওয়েল। তাও ৩ মাস ধরে খারাপ হয়ে পড়ে আছে। পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে । এই সমস্যা নিয়ে বল্লভপুর নতুনপাড়া গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সুধীর রাজোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তাঁর বক্তব্য, "আমি পঞ্চায়েতের বিরোধী দল অর্থাৎ বিজেপির সদস্য । এই টিউবওয়েলটি খারাপ সেটা দেড় মাস ধরে বলে আসছি প্রধানকে। এটাও বলেছি এলাকার আশিটি পরিবার প্রতিদিন জলের কষ্টে দিন কাটচ্ছে । তবুও আমার কথাকে পঞ্চায়েত কোন গুরুত্ব দেয়নি। আজ লকডাউন হাওয়ার ফলে ঘটনাটি এইভাবে প্রকাশ্যে এসেছে । এখন সব বন্ধ। তবুও যাতে বল্লভপুর নতুনপাড়া গ্রামের মানুষের জলের কষ্ট কাটানো যায় তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সুধীর রাজোয়ার।
এই গ্রামের অধিকাংশ পরিবার দিনমজুর, কেউ বা রিক্সাচালক। এক কথায় দিন আনে দিন খায়। লকডাউন চলাকালীন এই গ্রামের আশিটি পরিবারের খাবারের সমস্যা তো আছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পানীয় জল। গ্রামবাসীদের পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে একটাই দাবি এই চৈত্রের প্রচণ্ড গরমে বাঁচার জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দিন।