Dilip Ghosh: 'এরপর রাস্তায় বেরোলে লোকে জামা-কাপড় খুলে নেবে'! কাকে এই হুঁশিয়ারি দিলেন দিলীপ ঘোষ?
Dilip Ghosh: দিলীপ ঘোষকে ঘিরে 'গো-ব্যাক' স্লোগান উঠেছিল। তারই পাল্টা তিনি তৃণমূলকর্মীদের বুকে পা তুলে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন! জিভ টেনে ছিঁড়ে নেওয়ারও হুমকি দেন। সব মিলিয়ে শুক্রবার সকালে ঘটনাবহুল ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজ্যে গণতন্ত্র আছে তাই দিলীপবাবুরা যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং যা ইচ্ছে তাই বলছেন, গতকাল, শুক্রবার এই মন্তব্য় করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আজ, শনিবার চন্দ্রিমার সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রীতিমতো বোমা ফাটালেন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। শনিবার পাল্টা দিলীপের মন্তব্য-- 'বুকে পা দিয়ে হাঁটব, পারলে আটকে দেখাক। রাজ্যটা ওঁর বাপের জমিদারি নাকি? রাস্তার কুকুরও জিগ্যেস করবে না, কেমন আছো? রাস্তায় বেরোলে লোকে জামা-কাপড় খুলে নেবে।' তিনি আরও বলেন, আর বেশি দিন নয়, কয়েক মাসের মধ্যে এটা ঘটবে। কুণাল ঘোষ দিলীপের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন-- দিলীপদা আসলে মানসিক অবসাদ থেকে এই সব কথা বলছেন। কথাগুলি উনি আসলে বলতে চাইছেন সুকান্ত মজুমদারকে, কিন্তু কথাটা তো ওভাবে বলতে পারছেন না, দল ওঁকে বের করে দেবে, তাই এই ভাবে বলছেন। আর একা দিলীপবাবুরই পা আছে, অন্যদের নেই, এমন ভাবার তো কোনও কারণ নেই! দিলীপের মতো একজন সিনিয়র নেতার এই রকম মুখের ভাষা নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: Malda: পিসির প্রেমে আত্মঘাতী ভাইপো! মালদহে চুল কেটে ঘোরানো হল মহিলাকে, মারধর
শনিবার দিলীপ ঘোষ বলেন-- 'বুকে পা দিয়ে হাঁটব, পারলে আটকে দেখাক। গণতন্ত্র ওঁদের দয়ায় নাকি? গণতন্ত্র আছে কেন্দ্রের জন্য। তাই করে খাচ্ছে। না হলে যে কোনও ভেঙে দিত সরকার। তখন ভিখারি হয়ে যাবে, রাস্তার কুকুরও জিগ্যেস করবে না, কেমন আছো? রাস্তায় বেরোলে লোকে জামা-কাপড় খুলে নেবে।' আর বেশি দিন নয়, কয়েক মাসছয়েকের মধ্যে এটা হবে।'
দিলীপ ঘোষকে ঘিরে 'গো-ব্যাক' স্লোগান উঠেছিল। তারই পাল্টা তিনি তৃণমূলকর্মীদের বুকে পা তুলে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন! জিভ টেনে ছিঁড়ে নেওয়ারও হুমকি দেন। সবমিলিয়ে শুক্রবার সকালে ঘটনাবহুল পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়। সকালে বেলদা বাজার-স্টেশন এলাকায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মর্নিং ওয়াকে বের হন দিলীপ ঘোষ। তখনই স্থানীয় বিধায়ক সূর্যকান্ত আঢ্যর বাড়ি থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে সাংসদ দিলীপ ঘোষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। ওঠে 'গো-ব্যাক' স্লোগান। আর তখনই তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে পালটা আক্রমণাত্মক কথা বলেন সাংসদ। বলেন, 'তোদের বুকে পা দেব রে। সকাল সকাল চোরেদের মুখ দেখতে হল। দিনটাই খারাপ যাবে রে।' পরে তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, 'বেলদা বাজার-স্টেশন এলাকায় মর্নিং ওয়াক করতে বেরিয়েছিলাম। হঠাৎ তৃণমূলের কিছু লোক, পঞ্চায়েত সদস্য, আমাদের পিছনে স্লোগান দিতে শুরু করে। কীসের কষ্ট আমি বুঝতে পারছি না! কোনওদিন সকালে হাঁটে না। কাটমানি খায় আর ঘুমায়।' এর পরই তাঁকে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ১০০ দিনের কাজের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে কার্যত মেজাজ হারান দিলীপ ঘোষ। বলেন, 'বলুক না, জিভ টেনে ছিঁড়ে না দিই। কার বাপের হিম্মত আছে। টাকা ওরা ঝেড়ে দিয়েছে, তাই টাকা আসছে না। যেদিন হিসেব দেবে, সেদিন টাকা আসবে।'
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে 'সিবিআই সেটিং' তত্ত্বের কথা বলে দলের বিরাগভাজন হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, 'গত কয়েক বছর ধরে সিবিআই এখানে সেটিং করছিল। এখানে সিবিআই তদন্ত চলছিল। কিন্তু কোনও এফেক্ট হচ্ছিল না, ধরা পড়ছিল না। কারণ কী? এখানেও সর্ষের মধ্যে ভূত ছিল। কিছু অফিসার ছিল। অনেকে বিক্রিও হয়।' তাঁর এহেন মন্তব্যের পর বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তাঁকে সতর্কও করা হয়। এমনকি সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার বিষয়েও 'সেন্সর' করা হয়েছিল তাঁকে।