রাখঢাক না রেখে দলের লাইন ভেঙেই কংগ্রেসের মঞ্চে সিপিএম নেতানেত্রীরা

দুদলেরই নিচুতলা থেকে জোটের দাবি উঠছিল। জোটপন্থীরাই চাইছিলেন হাত ধরুক কাস্তে হাতুড়ি। 

Updated By: Jun 27, 2019, 11:37 PM IST
রাখঢাক না রেখে দলের লাইন ভেঙেই কংগ্রেসের মঞ্চে সিপিএম নেতানেত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদন: হাত ধরলেও একসঙ্গে দেখা দেব না। সিপিএমের এমন পার্টি লাইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বারাকপুরে কংগ্রেসের মঞ্চে বসলেন তড়িত্ তোপদার ও গার্গী চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, বাস্তবের দাবি মেনেই এহেন সিদ্ধান্ত।      

২০১৬ সালে সেই ছবি। বৃহদাকার মালার বন্ধনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও রাহুল গান্ধী। ওই ছবিটি বেঁধে দিয়েছিলেন জোটের সুর। কিন্তু বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর তাল কাটল।

আর এক মঞ্চে দেখা যায়নি বাম-কংগ্রেস নেতাদের। লোকসভা ভোটেও শেষ পর্যন্ত দানা বাঁধেনি জোট। বিমান বসুদের শর্তই ছিল, সমাঝোতা হলেও একসঙ্গে নেতারা থাকবেন না। তখনই পার্টির এমন লাইন নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি' কৌশলে আদৌ কি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা যাবে? জোটটা হয়নি। তবে শিক্ষা দিয়েছে লোকসভা ভোটের ফল। রাজ্যে খাতাই খুলতে পারেনি বামেরা। আর কংগ্রেস উত্তরবঙ্গে তাদের দুটি আসন ধরে রেখেছে। তার মধ্যে বহরমপুর আবার অধীর চৌধুরীর ব্যক্তিগত মুন্সিয়ানায়। ২০২১ সালের আগে বাস্তব পরিস্থিতি মেনেই দুই দল আবার এসেছে কাছাকাছি। বিধানসভাতেও কক্ষ সমন্বয় করছেন সুজন-মান্নানরা। এবার ভাটপাড়ায় কংগ্রেসের মঞ্চেও হাজির হয়ে গেলেন দু'দলের নেতারা।        

রাজ্যে সর্বত্র শান্তি ফেরানো, ভাটপাড়ার পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার দাবিতে বারাকপুরে গণ অবস্থানে বসে কংগ্রেস। মঙ্গলবার ভাটপাড়ায় শান্তি মিছিলে পা মেলান বিমান বসু-সোমেন মিত্র। আর বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির দুই সদস্য তড়িত্‍ তোপদার-গার্গী চট্টোপাধ্যায়। দুজনের বক্তব্যেই স্পষ্ট, সময়ের বাস্তবতা মেনে কংগ্রেসের সঙ্গে আন্দোলনে আপত্তি নেই। একইসুর কংগ্রেস নেতাদের গলাতেও। দলীয় লাইন উপেক্ষা করলেন? তড়িত্ তোপদারের বক্তব্য, লিখিত নির্দেশ হয় না। সময়ের প্রয়োজন তাই বসেছি। একইসুরে গার্গী বলেন,''কিছু সম্পর্ক হয় দীর্ঘস্থায়ী। কিছু সম্পর্ক হয় ক্ষণস্থায়ী। কিছু সম্পর্ক হয় সময়ের প্রয়োজনে''।  

দুদলেরই নিচুতলা থেকে জোটের দাবি উঠছিল। জোটপন্থীরাই চাইছিলেন হাত ধরুক কাস্তে হাতুড়ি। ভাটপাড়ার সাম্প্রতিক অশান্তিকে সামনে রেখে সেইলক্ষ্যে একধাপ এগোলো দুই শিবির। তবে পুরসভা-বিধানসভা ভোটে কি একসঙ্গে পথ চলবে হাত-হাতুড়ি?  রাজনৈতিক মহলের মতে, চূড়ান্ত কথা বলার সময় না এলেও, বারাকপুরে থেকে পথচলা শুরু হল বলা যেতেই পারে।

আরও পড়ুন- পড়ুয়াদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি কেন? কী ষড়যন্ত্র? ডাইনিং নির্দেশিকায় প্রশ্ন দিলীপের

.