বামপন্থী বুদ্ধদেবকে সম্মান করেন মমতা

রাজ্যের বর্তমান বাম আন্দোলন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বু্দ্ধবাবুর বামপন্থী মতাদর্শকে আমি সম্মান করি। তবে ওঁর আলাদা মত আর আমার আলাদা। রাজনৈতিক ভেদাভেদ রয়েছে। কিন্তু আশা করি, উনিও মনে করেন বিজেপি-আরএসএসকে রোখা উচিত।’’

Updated By: May 11, 2018, 09:44 PM IST
বামপন্থী বুদ্ধদেবকে সম্মান করেন মমতা

নিজস্ব প্রতিবেদন:   একসময়কার প্রতিদ্বন্দ্বী। বিরোধ, মতাদর্শগত বিভেদ, সমালোচনা, কটাক্ষ, তীক্ষ্ণ বাক্যবাণ- বঙ্গ রাজনীতির একসময়ের যুযুধান প্রতিপক্ষের প্রতি আক্রমণ আজ ইতিহাস। কিন্তু তবুও আজকের নেত্রীর মনে কোথাও যেন রয়ে গিয়েছে সেই প্রতিপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধাও। কথা হচ্ছে রাজ্যের প্রাক্তন বনাম বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে। জি ২৪ ঘণ্টায় একান্ত আলাপচারিতায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে নিজের মনভাব ব্যক্ত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অসুস্থ বুদ্ধবাবুকে এর আগে পাম অ্যাভিনিউ-এর বাড়িতে দেখতে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সরাসরি জানালেন, বুদ্ধবাবু যে মার্ক্সীয় মতাদর্শে দিক্ষীত, তা তিনি বিশ্বাস করেন এবং তাঁর আদর্শকে তিনি শ্রদ্ধা করেন।

এদিন জি ২৪ ঘণ্টার সম্পাদক অনির্বাণ চৌধুরীর মুখে বুদ্ধবাবু নামটা উচ্চরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কিছুটা নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর স্মৃতিতে ভেসে ওঠে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম পর্বের কথা। তবে সেই রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের জন্য এদিনও লাল শিবিরকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। তবুও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধার কথা প্রকাশ পেল এদিনের কথা-বার্তায়।

রাজ্যের বর্তমান বাম আন্দোলন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বু্দ্ধবাবুর বামপন্থী মতাদর্শকে আমি সম্মান করি। তবে ওঁর আলাদা মত আর আমার আলাদা। রাজনৈতিক ভেদাভেদ রয়েছে। কিন্তু আশা করি, উনিও মনে করেন বিজেপি-আরএসএসকে রোখা উচিত।’’

সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা গেরুয়া শিবিরের প্রতি কিছু বামপন্থীর ঝোঁক প্রসঙ্গেই এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বুদ্ধবাবু অন্য রাজনীতির লোক, আমি অন্য রাজনীতির। তবুও এটা বলি, বুদ্ধবাবু বিজেপির সমর্থক নন। দলটা বিকিয়ে যাক, সেটা উনি চাননি।’’ তিনি আরও বললেন, ‘‘সব বামপন্থীরা এক নয়, সবাই চাননি দলটা বিকিয়ে যাক। অনিলবাবু বেঁচে থাকলে, তিনিও চাইতেন না।’’

এদিন কথায় কথায় মমতা বলেন, ‘বুদ্ধবাবু আমাকে একা অনেক কথা বলেছেন। বন্ধ ঘরের সেসব কথা আমি বাইরে বলব না। সেসব কথা প্রকাশ্যে বলা আমার নৈতিকতার বিরুদ্ধ।’’  শুধু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যই নন, জ্যোতিবাবুও যে তাঁকে বেশ কিছু কথা বলে গিয়েছিলেন, তাও এদিন বলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘জ্যোতিবাবুও আমাকে ডেকে অনেক কথা বলে গিয়েছেন। আজ সেসব অতীত। তা আমি কখনই প্রকাশ্যে বলব না।’’

মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের এই মন্তব্য বঙ্গ রাজনীতিতে হারিয়ে যেতে চলা পারস্পরিক সম্মান ও সৌজন্য বোধের এক নজির হয়ে রইল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

 

 

.