Budge Budge Cracker Godown Fire: ফের বাজির গোডাউনে বিস্ফোরণ, মৃত ৩; গ্রেফতার ৩৪
গত ২১ মার্চ দৌলতপুর মেইন রোড লাগোয়া পুটখালি এলাকায় একটি বাড়িতে ঠিক একইভাবে বাজি বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেবারও তিন জনের মৃত্য হয়। এসেছিলেন দমদল মন্ত্রী সুজিত বসু। কিভাবে সব ব্যাবসায়ী ও নির্মাতাদের এক ছাতার তলায় এনে নিরাপত্তা ও অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থায় জোর দেওয়া যায়, তা থানা ও পৌরসভাকে খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন তিনি। এই প্রয়াস খুব বেশি এগোয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
অয়ন ঘোষাল: পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ। বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে রবিবার প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বজবজের চিংড়িপোতা গ্রামে। রবিবার সন্ধ্যায় সেখানকার একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। এক জন গুরুতর আহত অবস্থায় বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জানা গিয়েছে তাঁরও মৃত্যু হয়েছে সোমবার সকালে।
এই বিস্ফোরণের ঘটনার পরই পুলিসে তৎপরতা শুরু হয়েছে ওই গ্রামে। পুলিস বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার কেজি বাজি ও বাজি তৈরির মশলা উদ্ধার করেছে। বিস্ফোরণের ঘটনার পর পুরুষরা এলাকা ছাড়া। ওই গ্রামে কমবেশি অধিকাংশ বাড়িতেই বাজি তৈরি করা হয়। অধিকাংশ জনেরই লাইসেন্স নেই। পুলিস সব জানে বলেও দাবি নাম প্রকাশে ও ক্যামেরার সামনে আসতে নারাজ এলাকাবাসীর।
আরও পড়ুন: Nusrat Jahan: পঞ্চায়েত ভোটে বড় একটা বাঁশ দিয়ে.....বসিরহাটে বিস্ফোরক নুসরত
পাশাপাশি গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরণের ঘটনা দেখানোর জন্যই পুলিস অতিসক্রিয়। গোটা ঘটনা ভুল ভাবে মিডিয়ায় উপস্থাপিত হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। সে জন্য সোমবার সকাল থেকেই গ্রামে ঢোকার রাস্তা অবরোধ করেছেন গ্রামবাসীরা। সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঢোকার রাস্তা থেকে সংবাদমাধ্যমের গাড়িও ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিসের অ্যাডিশনাল এসপি অর্ক বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাজি বাজেয়াপ্ত করার অভিযান চলছে। তুবড়ি, চকলেট, চরকা, রকেট, সেল, তারাবাতি, রংমশাল সহ প্রচুর মশলা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Jalpaiguri: বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন চা-শ্রমিকেরা! চা-পাতা বিকোচ্ছে ১৫ টাকা প্রতি কেজি...
গত ২১ মার্চ দৌলতপুর মেইন রোড লাগোয়া পুটখালি এলাকায় একটি বাড়িতে ঠিক একইভাবে বাজি বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেবারও তিন জনের মৃত্য হয়। এসেছিলেন দমদল মন্ত্রী সুজিত বসু। কিভাবে সব ব্যাবসায়ী ও নির্মাতাদের এক ছাতার তলায় এনে নিরাপত্তা ও অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থায় জোর দেওয়া যায়, তা থানা ও পৌরসভাকে খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন তিনি। এই প্রয়াস খুব বেশি এগোয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
ঠিক কোন নিয়ম ভাঙলে সেই বাজি কারখানাকে বেআইনি বলা যাবে?
প্রশাসন সূত্রে খবর, মূলত নিয়ম রয়েছে, ১৫ কেজি পর্যন্ত বাজি এবং বাজির মশলা তৈরির জন্য লাইসেন্স দেন জেলাশাসক। ১৫ কেজি থেকে ৫০০ কেজি হলে ‘কন্ট্রোলার অব এক্সপ্লোসিভস’-এর কাছ থেকে লাইসেন্স নেওয়ার নিয়ম থাকে। কিন্তু তারও বেশি ওজনের বাজির ব্যবসার যদি করতে হয়, তাহলে লাইসেন্স দেন ‘চিফ কন্ট্রোলার’।
পাশাপাশি, মশলা তৈরি, বাজি তৈরি এবং তা প্যাকেটবন্দি করার কাজও আলাদাভাবে করার জন্য লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক। এর আগেও বজবজে একাধিকবার এই ঘটনা ঘটেছে। মাস ছয়েক আগে পরিবেশ দফতর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার পুলিস এবং জেলা প্রশাসনকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি হয়। কথা ছিল তারা নজরদারি চালাবে।
পরিবেশ দফতরের হিসাব বলছে, এই সব কাজের জায়গার মধ্যে দূরত্ব থাকা উচিত ১৫ মিটার করে। কিন্তু গত কয়েক বছরে যে কমিটি তৈরি হয়েছে, তারা এগুলি কিছুই খতিয়ে দেখেনি বলে অভিযোগ উঠছে। সেই কারণে এই সব নিয়ম থেকে যায় শুধু খাতায়-কলমেই।