Sujay Krishna Bhadra: 'সাহেব অভিষেকের স্তাবক! কালীঘাটের কাকুর পর কে? ক্রমশ প্রকাশ্য...'
'কালীঘাটের কাকু একটা কথা বলেছেন যে তাঁর সাহেব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেননি! বলেছেন, তাঁর সাহেব! তাই তাঁকে কেউ কিছু করতে পারবেন না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যদি অনিয়ম বেনিয়ম হয়, আর যদি আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হয়, তাহলেও তাঁকে কেউ ছুঁতে পারবে না! এমন কথা বলার অর্থ তাঁর স্তাবক।'
প্রদ্যুৎ দাস: কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র গ্রেফতার প্রসঙ্গে বুধবার সকালে জলপাইগুড়িতে বিমান বসু বলেন, 'এটা অনেকেই অনুমান করছিলেন যে এরপরে কালীঘাটের কাকু। কিন্তু তারপরে কে? এটা এখনই বলা যাবে না। আস্তে আস্তে প্রকাশিতব্য।' সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর গ্রেফতার প্রসঙ্গে বুধবার সকালে জলপাইগুড়িতে বিমান বসু আরও বলেন, 'যেভাবে সম্পত্তি বেড়েছে আর এই সম্পত্তি বাড়ার লিস্ট যেভাবে বেরচ্ছিল তাতে বোঝাই যাচ্ছিল! ইডি যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তাতে আরও বোঝা যাচ্ছিল যে কালীঘাটের কাকু নামে যিনি বিখ্যাত তিনি গ্রেফতার হতে পারেন। আর কালীঘাটের কাকু একটা কথা বলেছেন যে তাঁর সাহেব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেননি! বলেছেন, তাঁর সাহেব! তাই তাঁকে কেউ কিছু করতে পারবেন না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যদি অনিয়ম বেনিয়ম হয়, আর যদি আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হয়, তাহলেও তাঁকে কেউ ছুঁতে পারবে না! এমন কথা বলার অর্থ তাঁর স্তাবক। কাজেই এখন যখন কোনও তথ্য প্রমাণ পেয়েছে, সম্পত্তির হদিশ সহ ব্যাংক ডিটেলস পেয়েছে, তখন তাঁদের গ্রেফতার করেছে। এবার আইনানুগ ব্যবস্থা হবে।'
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার হন কালীঘাটের কাকু সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। তদন্তে অসহযোগিতা, বয়ানে অসঙ্গতি, তথ্য গোপনের চেষ্টা, তদন্তকারী আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে। ইডি সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কালীঘাটের কাকুকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার তাঁকে সঠিক উত্তর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি উত্তর দেননি। কুন্তল ঘোষের কাছে থেকে টাকা নিয়ে, সেই টাকা কোথায় পাঠাতেন? কার নির্দেশে চাকরি দুর্নীতির এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা নিতেন তিনি? সেই প্রশ্নের উত্তর দেননি ‘কালিঘাটের কাকু’। ইডি-র দাবি সেই সব প্রশ্নের উত্তরই জানা কালীঘাটের কাকুর। কিন্তু তথ্য গোপন করার জন্য উত্তর না দিয়ে মেজাজ হারান তিনি। পালটা চোটপাট করেন ইডি আধিকারিকদের উপর।
গত ২০ মে তাঁর বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালিয়ে যে তিনটি কোম্পানির নথি পেয়েছে ইডি, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যে কোম্পানিগুলির অ্যাকাউন্টে প্রচুর কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে দাবি ইডি। এছাড়াও দেড় হাজার পাতার নথি, ও ডিজিটাল এভিডেন্স উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং তথ্য পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি ইডি-র। সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার কোনও সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন কালীঘাটের কাকু। জিজ্ঞাসাবাদে যখন লাগাতার অসহযোগিতা করছেন কালীঘাটের কাকু, ঠিক তখন তার কাছে থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোন এবং এর আগেই গ্রেফতার হওয়া আর এক তৃণমূল নেতার মোবাইল ফোন অন করা হয়।
সেখান দেখা যায়, সেই তৃণমূল নেতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হয়েছে কালীঘাটের কাকুর। সেখানে সেই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসে। সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কোনও উত্তর দেননি সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। বিগত কয়েক বছরে তার সম্পত্তির বৃদ্ধির উপরেও নজর রয়েছে ইডি-র। সেই নিয়েও কোনও উত্তর দেননি ‘কালীঘাটের কাকু’। সেই বিষয়ে অসহযোগিতার অভিযোগ কাকুর বিরুদ্ধে।