২ বছরে ৬ বার বদলি, জেলাশাসকের দফতরে আমরণ অনশনে সরকারি কর্মী

শুভঙ্করের দাবি, ২০১২ সালে আমরি হাসপাতালে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সরকারি চাকরি দিয়েছিলেন।

Updated By: Aug 21, 2018, 03:00 PM IST
২ বছরে ৬ বার বদলি, জেলাশাসকের দফতরে আমরণ অনশনে সরকারি কর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদন:  পরনে ব্লু ফুল স্লিভ শার্ট, ফর্মাল ট্রাউজার্স, পায়ে মোজা। জুতো জোড়া খুলে পাশে রাখা। আরেক পাশে রাখা রয়েছে অফিস নিয়ে আসার সাইড ব্যাগ। জেলাশাসকের দফতরে ঢুকতেই দেখা গেল এক ব্যক্তি এইভাবে দেওয়াল হেলান দিয়ে বসে রয়েছেন। বিষয়টা প্রাথমিকভাবে বোঝা যায়নি। যেন কোনও শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। কিন্তু না, প্রশ্ন করতেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।

২০১২ সালে চাকরি পেয়েছিলেন জেলাশাসকের দফতরে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নাকি তাঁকে চাকরিতে নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে টানা ৬ বছর- চাকরিস্থলে তাঁর কোনও স্থায়িত্ব নেই। এই দফতর থেকে ওই দফতর, এই বিভাগ থেকে ওই বিভাগ, শেষ ২ বছরে তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করা হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে এবার পশ্চিম বর্ধমান জেলা শাসকের দফতরের সামনেই অনশনে বসলেন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক সরকারি কর্মচারী।

আরও পড়ুন: দেহ চুল্লিতে ঢোকানো হচ্ছিল, আচমকাই বেজে উঠল শ্মশান কর্মীর ফোন!

শুভঙ্করের দাবি, ২০১২ সালে আমরি হাসপাতালে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সরকারি চাকরি দিয়েছিলেন। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে তিনি চাকরির নিয়োগপত্র নেন সেই বছর। পশ্চিম বর্ধমান জেলা শাসকের দফতরে তিনি কর্মরত। অভিযোগ, শেষ দু বছরে তাঁকে বিভিন্ন বিভাগে বদলি করা হয়েছে। তাঁর দাবি, সরকারি দফতরের বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে একাধিকবার সরব হয়েছেন তিনি। তারই বদলা নিতে এই বদলি।

আরও পড়ুন: মায়ের সঙ্গে পাড়ার ‘কাকু’কে এক বিছানায় দেখে ফেলেছিল সাত বছরের ছেলে! পরিণতি...

শুভঙ্কর দাবি করে, বিষয়টি জানিয়ে এর আগে একাধিকবার জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। কিন্তু কোনও সুরাহা মেলেনি। শুভঙ্করের কথায়, ‘‘দুর্নীতি নিয়ে মুখ খোলাতেই আমাকে বদলি করা হচ্ছে। দুর্নীতি আমি কখনই প্রশ্রয় দেব না। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে চাকরি দিয়েছেন। তাই আমি কখনই সরকারি দফতরে কোনও অনাচার হতে দেব না।’’

শুভঙ্কর জানান, তিনি অনশন শুরু করার পর থেকে তাঁর মাকে ফোন করে অনেকেই চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি কোনও প্ররোচনাতেই কান দেবেন না। বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে চিকিত্সক শিখা দত্ত গিয়ে শুভঙ্করের শারীরিক পরীক্ষা করেছেন। চিকিত্সক জানিয়েছেন, সোমবার বিকাল তিনটের পর থেকে মূত্র ত্যাগ করেননি শুভঙ্কর। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিত্সক, কিন্তু শুভঙ্কর মানেননি সেকথা। এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। 

.