'এবার ভালো ইলিশ মিলবে!', মুখে মাস্ক বেঁধে মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিল ৫০০০ ট্রলার
"প্রতিটি ট্রলারের মৎস্যজীবীরা যেমন সচেতনতা অবলম্বন করে মাছ ধরবেন, তেমনই মাছের বাজারগুলিতেও রাখা হবে কড়া নজরদারি।"
অধীর রায় ও নকিবউদ্দিন গাজি : বাঙালির পাতে ইলিশ তুলে দিতে সরকারি নির্দেশিকা মেনে সোমবার সমুদ্রে পাড়ি দিল ৫ হাজার ট্রলার। প্রায় দুমাসের বেশি সময় ধরে প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে লড়াইয়ের পর অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন রায়দিঘি, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর, ডায়মন্ড হারবার, ফলতা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় কয়েকশ মৎসজীবী। সোমবার সরকারি ছাড়পত্র মেলার পর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে ট্রলার নিয়ে তাঁরা রওনা দিলেন গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে।
একদিকে করোনা, অন্যদিকে আমফানের দাপটে বিধ্বস্ত সুন্দরবন। এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে লক্ষাধিক মৎস্যজীবীর বাস। লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন সমুদ্রে মাছ ধরার কাজ বন্ধ ছিল। তার উপর মাছের প্রজননের জন্য সরকারিভাবে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল ১৪ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত। সরকারি এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ রবিবার শেষ হয়েছে । তারপরই সমুদ্রে যাওয়ার জন্য সরকারি নির্দেশ পান মৎস্যজীবীরা। সব বাধা কাটিয়ে ১৫ জুন ভোররাতেই মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিল প্রায় ৫ হাজার ট্রলার।
ট্রলার নিয়ে রওনা দেওয়ার আগে প্রত্যেক মৎস্যজীবীর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। করোনা আবহে নির্দিষ্ট নিয়মবিধি মেনে চলার জন্য মৎস্যজীবীদের সতর্ক করেন ডায়মন্ড হারবার সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) জয়ন্ত প্রধান। তিনি বলেন , "প্রতিটি ট্রলারের মৎস্যজীবীরা যেমন সচেতনতা অবলম্বন করে মাছ ধরবেন, তেমনই মাছের বাজারগুলিতেও রাখা হবে কড়া নজরদারি। সোমবার ভোররাতে ডায়মন্ডহারবার সুলতানপুর ঘাট থেকে যে সকল মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে বেরন, সেইসব মৎস্যজীবীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তবে তাঁদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে । প্রায় আড়াই হাজার মৎস্যজীবীকে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে তাঁদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়।"
গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরতে যাওয়ার আগে মৎসজীবী নীলরতন এবং গদাধর জানান , " আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকলে থাকলে ভালো ইলিশ মিলবে। আগের বছর সেভাবে ইলিশ হয়নি । কিন্তু এবার সবকিছু অনুকূল । আশা করছি নিরাশ হব না।" আশায় বুক বাঁধছেন মৎস্যজীবী থেকে ট্রলার মালিক, সবাই । মৎস্য অধিকর্তার জয়ন্ত প্রধানও দাবি করেছেন, "এবছর ইলিশ প্রেমীদের জন্য খুশির খবর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল । দীর্ঘদিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় এবং লকডাউনের জেরে সমুদ্র ও নদীতে যান চলাচল বন্ধ থাকায়, দূষণ অনেকটা কমেছে। ফলে মৎস্যজীবীদের জালে উঠতে পারে পর্যাপ্ত রুপোলি ইলিশ।"
আরও পড়ুন, শিশু খুনের আগে স্ত্রীকেও খুন করেন? বড়বাজারের ঘটনায় নয়া 'রহস্য'-এর গন্ধ!