রাতের 'সাদা আলোয়' ঝলমলে রাশিয়ার বিশ্বকাপ

শান্তিপ্রিয় কাজানবাসীর কাছে তাদের উপস্থিতিটা ছিল অনেকটাই 'কালচারাল শকে'র মতো। কিন্তু খুব দ্রুত কাজানের মানুষেরা মানিয়ে নিয়েছিলেন পরিস্থিতিটার সঙ্গে।

Updated By: Jul 9, 2018, 06:22 PM IST
রাতের 'সাদা আলোয়' ঝলমলে রাশিয়ার বিশ্বকাপ

অমৃতাংশু ভট্টাচার্য

কাজান এয়ারপোর্টের বাইরে যখন পা রাখলাম তখন ঘড়িতে সময় মধ্যরাত। ভারতীয় সময়ে তখন ভোর হওয়ার কথা। কিন্তু বাইরে আকাশে আলো ফুটতে দেখে ধাঁধা লেগে গেল, ফের আবার দেশে ফিরে যাইনি তো! পরে বুঝলাম রাশিয়ান চমকের এটাই শুরু...

সূয্যিমামা বিশেষ বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পান না এদেশে। রাত দুটো-আড়াইটেতেই ঘুম ভেঙে উঠে পড়তে হয় তাঁকে। হোটেলের পথে যেতে যেতে সেই মায়াবী আলোয় দেখলাম এক অসাধারণ সুন্দর শহরের স্বপ্নিল ছবি। শুধু একটা জায়গাতেই ধাঁধা লাগছিল, শহরে ফুটবলটা কোথায়? পরে বুঝলাম, হালকা ঠাণ্ডা আবহাওয়ার মতো এখানকার মানুষজনের উচ্ছ্বাসও খুব সংযত। ফলে বিশ্বকাপ নিয়ে বিশেষ আদিখ্যেতা কোথাও নেই।

বিশ্বকাপের প্রভাবে গোটা শহরটার চরিত্র যে বদলে গিয়েছে সেটা বুঝলাম সকাল হতে। ব্রাজিলের ম্যাচ ছিল বলে গোটা শহরটা দখল করে নিয়েছিল হলুদ-সবুজ বাহিনী। ব্রাজিলিয়ানরা এমনিতেই হই-হুল্লোড় পছন্দ করেন। তার উপর আগের বিশ্বকাপগুলোর সৌজন্যে জানা ছিল, যে কোনও বিশ্বকাপে আসল রঙটা নিয়ে আসেন এই ব্রাজিল সমর্থকরাই। ফলে শান্তিপ্রিয় কাজানবাসীর কাছে তাদের উপস্থিতিটা ছিল অনেকটাই 'কালচারাল শকে'র মতো। কিন্তু খুব দ্রুত কাজানের মানুষেরা মানিয়ে নিয়েছিলেন পরিস্থিতিটার সঙ্গে। আর তারপরেই তৈরি হয়েছিল টুকরো টুকরো নজরকাড়া সব মুহূর্ত।

ব্রাজিলের আবেদনটা যে কতটা সার্বজনীন, সেটা বুঝতে সময় লাগেনি এতটুকুও। নিজেদের দেশ তখনও বিশ্বকাপ খেলছে, অথচ অধিকাংশ মানুষ সমর্থন করছিলেন ব্রাজিলকে। একজন রাশিয়ান তো রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন ব্রাজিলের জার্সিই বিক্রি করতে। আর যাঁরা কিনছিলেন তাঁরাও বেশিরভাগই রাশিয়ান। এই মুডটাই বজায় ছিল ব্রাজিলের বিদায়ের আগে পর্যন্ত। ব্রাজিলের হারের পর সবাই যেভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তাতে বোঝাই যাচ্ছিল না যে, তাদের নিজেদের দেশ তখনও বিশ্বকাপে টিকে আছে।

আরও পড়ুন - জিতে 'ঘরশত্রু বিভীষণ'কে জবাব দিতে চায় ফ্রান্স

শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে, রাশিয়ার মানুষ নিজের দেশকে সমর্থন করতে শুরু করেছিলেন ব্রাজিলের বিদায়ের পর। আর রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর তাঁরা পড়েছিলেন মহাসমস্যায়। বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল ও ফাইনালে কাকে সমর্থন করবেন? সেটা ঠিক করাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল রাশিয়ার জাতীয় সমস্যা। 

.