FIFA Ban India: নির্বাসিত ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন! কী ভবিষ্যৎ দেশের ফুটবলের?
FIFA Ban India: ফিফা এবং এএফসি এই বছরের জুন মাসে ভারতে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। একটি রোডম্যাপ তৈরির জন্য যা এই ধরনের নিষেধাজ্ঞাকে রোধ করবে। ৩ অগস্ট একটি রায়ে, সুপ্রিম কোর্ট একটি অন্তর্বর্তী সংস্থা গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় যা তৈরি হওয়ার কথা ৩৬ জন প্রাক্তন ফুটবলারের একটি ভোটিং কমিটির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারত তার স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার কয়েক ঘন্টা পরেই, বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা FIFA-র আদেশে বদলে গেল দেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ। ফিফা-র গভীর রাতের এক আদেশে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের জন্য সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে নির্বাসিত করল তারা। স্বয়ংশাসিত ক্রীড়া সংস্থায় এই ধরণের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করে না বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থাকে নির্বাসিত করার হুঁশিয়ারি আগেই দেওয়া হয়েছিল বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থার তরফে। মঙ্গলবার ভোরের দিকে ফিফার তরফে ই-মেলে করে এক প্রেস বিবৃতিতে এই কথা জানানো হয়। ভারতীয় ফুটবল বেশ কিছুদিন ধরেই ফিফার নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে একপ্রকার লুকোচুরি খেলা চালিয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে AIFF সভাপতি হিসেবে প্রফুল্ল প্যাটেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে, সুপ্রিম কোর্ট তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়।
ভারতীয় ফুটবল চালানোর জন্য প্রশাসকদের একটি কমিটি (CoA) গঠন করে আদালত। সিওএকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য একটি খসড়া সংবিধান গঠনের দায়িত্বও দেওয়া হয়।
কেন নির্বাসন?
ফিফা এবং এএফসি এই বছরের জুন মাসে ভারতে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। একটি রোডম্যাপ তৈরির জন্য যা এই ধরনের নিষেধাজ্ঞাকে রোধ করবে। ৩ অগস্ট একটি রায়ে, সুপ্রিম কোর্ট একটি অন্তর্বর্তী সংস্থা গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় যা তৈরি হওয়ার কথা ৩৬ জন প্রাক্তন ফুটবলারের একটি ভোটিং কমিটির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে।
এই ঘটনাকে ফিফা চূড়ান্ত করা রোডম্যাপ থেকে বিচ্যুতি বলে মনে করে। ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা একটি চিঠিতে জানায়, রোডম্যাপ অনুসারে, ফিফা, এএফসি এবং ভারতীয় ফুটবলের অন্যান্য অংশীদার সঙ্গে বসে তৈরি করা নতুন আইন অনুমোদনের জন্য এআইএফএফ-কে ২০২২ সালের অগাস্টের প্রথম সপ্তাহে একটি বিশেষ সাধারণ সভা ডাকার কথা ছিল।
ফিফা আরও জানায় যে AIFF-এর পরিস্থিতি নিয়ে ৩ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের শুনানির ফলে রোডম্যাপ থেকে বিচ্যুতি হয়েছে। এই ঘটনা সত্যি হলে তা পারস্পরিক বোঝাপড়াকে হুমকির মুখে ফেলবে বলেও দাবি করে ফিফা। আগামী দিকে পদক্ষেপ হিসেবে এখনও পর্যন্ত এই বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই কাজ হয়েছে।
যদিও, সুপ্রিম কোর্ট ১৫ সেপ্টেম্বরের আগে নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশ ফিফার রোডম্যাপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।
ক্লাবগুলির উপর নির্বাসনের প্রভাব কী?
ক্লাব ফুটবল বিশ্বের সব দেশের ফুটবল সিস্টেমের মেরুদণ্ড। ভারতের ক্ষেত্রেও এই কথা সত্যি। ক্লাব এবং লীগকে কিভাবে উন্নত করা যায় তা নিয়ে বহু বিতর্ক হলেও ফিফার এই নিষেধাজ্ঞা সমস্ত ভারতীয় ফুটবল ক্লাবকে প্রভাবিত করবে।
সিনিয়র লীগ যেমন আইএসএল, আই-লিগ এবং আইডব্লিউএল-এর ক্লাবগুলি জাতীয় শিরোপা জেতার জন্য লড়াই করে। এই প্রতিযোগিতায় লড়াই করে তারা এশিয়ান প্রতিযোগিতায় ক্লাবগুলির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য যোগ্যতা অর্জন করে। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে, সেরা ভারতীয় ক্লাবগুলি এশিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না। এটি সমস্ত ভারতীয় ক্লাবের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
এর পাশাপাশি বিদেশী খেলোয়াড়দের স্বাক্ষর করার ক্ষত্রেও একটি সমস্যার সৃষ্টি হবে। ফিফার নিষেধাজ্ঞার ফলে বহু বিদেশি খেলোয়াড় ভারতে খেলতে আসার বদলে অন্য দেশে খেলতে যেতে চাইবে।
আরও পড়ুন: 'FIFA Ban India': ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে নির্বাসন ফিফার! স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষেই চরম সিদ্ধান্ত
কী হবে লীগগুলির?
দেশের লীগগুলি চালু থাকবে, কারণ তারা এআইএফএফ-এর অধীনে কাজ করে। ফিফা এবং এএফসি-র অধীনে এরা নেই। কিন্তু এই লিগগুলি এশিয়ার শীর্ষ লিগ অথবা টুর্নামেন্টে তাদের প্রতিনিধিত্ব হারাবে।
সমস্যায় জাতীয় দল?
নিঃসন্দেহে, ফিফার নিষেধাজ্ঞা ভারতের জাতীয় ফুটবল দলকে সবথেকে বেশি প্রভাবিত করবে। ভারত সম্প্রতি এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৩-এর জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছে। প্রতিযোগিতায় না খেলতে পারলে তা খেলোয়াড়, ভক্ত এবং দেশের সমগ্র ফুটবল সম্প্রদায়ের জন্য বিপর্যয় বলেই বিবেচিত হবে। এর পাশাপাশি, ভারত ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ কোয়ালিফায়ারে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। একই সঙ্গে ভারত আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচ অথবা অন্য কোনঅ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে পারবে না। অন্যান্য বয়সভিত্তিক দলগুলিও কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতাইয় অংশ নিতে পারবে না।