তিন দশক পরে ইস্টবেঙ্গলে এসে আবেগতাড়িত মজিদ, 'বাদশাহ'-কে ঘিরে উচ্ছ্বাস সমর্থকদের

তাঁর সঙ্গে খেলা ইস্টবেঙ্গলের মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, ভাস্কর গাঙ্গুলি, সুধীর কর্মকার, হাবিবকে আজও মনে আছে মজিদের।

Updated By: Aug 12, 2019, 09:46 PM IST
তিন দশক পরে ইস্টবেঙ্গলে এসে আবেগতাড়িত মজিদ, 'বাদশাহ'-কে ঘিরে উচ্ছ্বাস সমর্থকদের

সুখেন্দু সরকার

তিন দশকেরও বেশি সময় পরে কলকাতায় পা রেখেছেন আশির দশকের ম্যাজিশিয়ান মজিদ বাসকার। শনিবার মধ্যরাতে কলকাতায় এলেও সোমবার বিকেলে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ইস্টবেঙ্গলে এলেন 'বাদশাহ'। সঙ্গী বন্ধু জামশেদ নাসিরি। ক্লাবে এসেই অতীতে ডুব দিলেন। ফিরে গেলেন ইস্টবেঙ্গলের সোনালি দিনে।

 

এতদিন পরে ইস্টবেঙ্গলে এসে কী দেখলেন মজিদ বাসকার? উত্তরে বললেন,"গ্যালারি বদলেছে। শুধু বদলায়নি লাল-হলুদ আবেগ। এখনও একই রকম রয়ে গিয়েছে সেই আবেগ।" যখন শতবর্ষে প্রথমে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন তখন দ্বিধা দন্দ্বে ভুগেছিলেন যাবেন কিনা। পরে আত্মীয়া জোর করায় আর ইস্টবেঙ্গল মনে রাখায় তিনি আর নিমন্ত্রণ ফেরাতে পারেননি। তাই শতবর্ষের অনুষ্ঠানে হাজির আশির দশকের ম্যাজিসিয়ান মজিদ বাসকার। বলা হয়ে থাকে ভারতে খেলা বিদেশিদের মধ্যে তিনিই নাকি সেরা। ইরান থেকে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে ভারতীয় ফুটবলে দাগ রেখে গিয়েছেন তিনি।

মজিদের মতে ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে সেরা গোল রোভার্স কাপের ফাইনালে মহমেডানের বিরুদ্ধে। সেরা ম্যাচ দার্জিলিং গোল্ড কাপে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে শেষ ১০ মিনিটে ৩ গোল করা সেই ম্যাচটি আজও মনে আছে তাঁর। তাঁর সঙ্গে খেলা ইস্টবেঙ্গলের মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, ভাস্কর গাঙ্গুলি, সুধীর কর্মকার, হাবিবকে আজও মনে আছে মজিদের। ১৯৮০ সালে ইডেন গার্ডেন্সে সেই অভিশপ্ত ম্যাচে পদপৃষ্ট হয়ে ১৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা আজও নাড়া দেয় তাঁকে। ফুটবলার হিসেবে মাঠে সেদিন ঘটনাটি তেমন আন্দাজ করতে পারেননি।  এসএসকেএম হাসপাতালের অদূরে লর্ড সিনহা রোডের বাড়িতে থাকতেন মজিদ বাসকার। সেখানেই কেউ কেউ তাঁকে ঘটনার কথা জানায়। এতদিন পরে কলকাতায় এসে সেই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেন।

আরও পড়ুন - সৌরভকে টপকে গেলেন কোহলি, বিরাট প্রশংসা স্বয়ং মহারাজের

তেহরান থেকে কলকাতায় বিমানে আসার পথে ভেবেছিলেন তাঁকে বিমানবন্দরে নিতে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কোনও কর্তা হয়তো আসবেন। কিন্তু মধ্যরাতে বিমানবন্দরে মজিদকে স্বাগত জানাতে লাল-হলুদ আবেগের বিস্ফোরণ, মজিদের নামে শব্দব্রহ্মে তিনি অবাক। ভাবতেই পারেননি যাঁরা তাঁর খেলা দেখেননি, তাঁরাই বিমানবন্দরে চত্বরে মাঝরাতে তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির। সোমবার ক্লাবে এসে মাঠে নামতেই মজিদে মজলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। লাল-হলুদ জার্সিতে তিরিশ বছর পরেও সেই একই অনুভূতি। লাল-হলুদে রেখে যাওয়া সেই ১২ নম্বর জার্সি পড়ে তিন দশক আগে যেভাবে মাঠে নামতেন আশির বাদশাহ। গ্যালারি জুড়ে তখন একটাই শব্দ মজিদ!!! মজিদ!!!মজিদ!!! আবেগতাড়িত মজিদ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন।  সমর্থকদের সঙ্গে হাতও মেলান। যে মাঠ তাঁকে বাদশাহ বানিয়েছে সেই মাঠে নেমে বলে পা দেবেন না তাই কি হতে পারে! চেনা ভঙ্গিতেই বলে শট মারলেন মজিদ। মঙ্গলবার নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামে সংবর্ধিত হবেন মজিদ বাসকার।
 

.