রুপো জিতে স্বপ্নপূরণ সুশীলের, লন্ডনে ৬টি পদক পেল ভারত

বীরেন্দ্র সেওয়াগকে দেওয়া নজফগড়ের নবাব আখ্যা কেড়ে নিলেন সুশীল কুমার। লন্ডন অলিম্পিকে ইতিহাস তৈরির পর এখন ভারতীয় খেলাধূলায় নজফগড়ের নবাব সুশীল কুমারই। বেজিং অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জয়ের পর লন্ডন অলিম্পিকে রুপো জিতে নিলেন ভারতের এই কুস্তিগীর।

Updated By: Aug 12, 2012, 07:19 PM IST

বীরেন্দ্র সেওয়াগকে দেওয়া নজফগড়ের নবাব আখ্যা কেড়ে নিলেন সুশীল কুমার। লন্ডন অলিম্পিকে ইতিহাস তৈরির পর এখন ভারতীয় খেলাধূলায় নজফগড়ের নবাব সুশীল কুমারই। বেজিং অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জয়ের পর লন্ডন অলিম্পিকে রুপো জিতে নিলেন ভারতের এই কুস্তিগীর।
ফাইনালে ১-৩'এ হেরে গেলেন জাপানের ইয়োনেমিৎসুর কাছে। তার আগে সেমিফাইনালে কাজাখস্তানের তানাতারোভকে ৩-১ এ হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছন এই ভারতীয় কুস্তিগীর।
কোয়ার্টার ফাইনালে উজবেকিস্তানের নাভরুজোভকে ৩-১ ফলে হারিয়ে শেষ চারে পৌঁছেছিলেন বেজিং অলিম্পিকে ব্রোঞ্জজয়ী ভারতের সুশীল কুমার। তার আগে প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে তুর্কমেনিস্তানের শাহিন রমজানকে হারিয়ে ছিলেন সুশীল।
গত অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জিতে ভারতের প্রাক্তন কুস্তিগীর কেডি যাদবকে ছুঁইয়েছিলেন সুশীল। আর সমাপ্তির দিনে ভারতীয় কুস্তিতে সুশীল সূচনা করলেন নব দিগন্তের। একই ইভেন্ট থেকে দুটি পদক একই অলিম্পিকে। এমন কীর্তি প্রথম গড়লেন দুই ভারতীয় কুস্তিগীর সুশীল ও যোগেশ্বর দত্ত।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে দিল্লির বাসকন্ডাক্টরের ছেলে সুশীলকুমার প্রথম যান কুস্তির আখড়ায়। সেই শুরু। সুশীলকুমারের পরিবার থেকে তিনিই প্রথম কুস্তি শিখতে যাননি। সুশীলের বাবা দিওয়ান সিংও ছিলেন কুস্তিগীর। তাঁর এক তুতোদাদা সন্দীপ কুমারও ছিলেন নামী কুস্তিগীর। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক অনটনের জেরবার সুশীলের পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবারের একজনই কেবল কুস্তি শিখবেন। ভাইয়ের জন্য স্বার্থত্যাগ করেন দাদা সন্দীপ কুমার। একেবারে স্টিভ ওয়া-মার্ক ওয়ার গল্পের মত। শুরু সুশীলের স্বপ্নের যাত্রা।
মাত্র আঠারো বছরে রাজ্যকুস্তিতে চ্যাম্পিয়ন। এরপর শুধুই কুস্তিতে প্রতিপক্ষকে প্যাঁচে ফেলে উত্থানের গল্প সুশীলের। একে একে এশীয় চ্যাম্পিয়নশীপ, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপে সাফল্য পাওয়ার পর ২০০৮-এ বেজিং অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জিতে ভারতীয় খেলাধূলায় নতুন আইকন হলেন নজফগড়ের সুশীল কুমার। বেজিং অলিম্পিকের পর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে হাওয়ায় ওড়া নয়, সুশীল ছিলেন মাটিতেই। কারন, ব্রোঞ্জ জয়েই ক্ষান্ত থাকতে চাননি। চেয়েছিলেন লন্ডনে সোনার পদক গলায় ঝোলাতে। তাঁর জন্য লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে চলেছিলেন তিনি। ২০১০-একমনওয়েলথ গেমসে সোনা, একই বছর মস্কোতে বিশ্বকুস্তি চ্যাম্পিয়নশীপে সোনা, এশীয় চ্যাম্পিয়নশীপে সোনা জিতে সুশীল জানিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি তৈরি। ফাইনালে হারলেও লন্ডনে ভারতকে গৌরবান্বিত করার জন্য তৈরি ছিলেন তিনি। তৈরি ছিলেন নিজের স্বপ্ন সত্যিই করতে। আর লন্ডন অলিম্পিকের দশমীতে গলায় রুপোর পদক তুলে সুশীল কুমার যেন ভারতীয়দের জন্য এনে দিলেন সপ্তমীর আনন্দ।

.