শ্রীসান্থও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, পিছিয়ে আসেন একটাই কারণে

ভারতীয় দলের পেসার আবার ক্রিকেটে ফিরবেন। তবে তার আগে নিজের জীবনের অন্ধকার অধ্যায় নিয়ে কথা বলেছেন শ্রীসান্থ। 

Updated By: Jun 21, 2020, 07:10 PM IST
শ্রীসান্থও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, পিছিয়ে আসেন একটাই কারণে

নিজস্ব প্রতিবেদন- তিনি এখন খুশি। এতদিনের চেষ্টাযর পর শেষমেষ আবার ক্রিকেটে ফেরার ছাড়পত্র পেয়েছেন। কেরালার রঞ্জি স্কোয়াডে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৩ আইপিএল ফিক্সিংয়ে নাম জড়িয়েছিল তাঁর। বদনাম হয়েছিলেন। সেই সঙ্গে পুলিশি হেফাজতে থাকতে হয়েছে। তারপর বিস্তর ঝামেলা। বিসিসিআই তাঁকে আজীবন নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই সাজা কমিয়ে সাত বছরের নির্বাসনের শাস্তি দিয়েছিল তাঁকে। সেই শাস্তির মেয়াদ এবার শেষ হতে চলেছে। ভারতীয় দলের পেসার আবার ক্রিকেটে ফিরবেন। তবে তার আগে নিজের জীবনের অন্ধকার অধ্যায় নিয়ে কথা বলেছেন শ্রীসান্থ। বলছিলেন নির্বাসনের এক-একটা দিন কতটা যন্ত্রনায় কাটিয়েছেন তিনি! 

বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত আত্মহত্যা করার পর এখন মনের অসুখ নিয়ে কথা বলছেন অনেকে। ক্রিকেটারদের মধ্যে মহম্মদ শামি, রবিন উথাপ্পা বলেছিলেন তাঁরাও একটা সময় হতাশা থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ নিজেদের সামলে নেন। সেই অন্ধকার রাস্তা থেকে নিজেদের সরিয়ে আনতে সমর্থ হন। শ্রীসান্থ এবার একই দাবি করলেন। তিনিও নাকি একটা সময় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তবে মা-বাবা ও পরিবারের কথা ভেবেই শেষমেষ ওরকম কোনো সিদ্ধান্ত তিনি নেননি।

এক সাক্ষাৎকারে সুশান্থ বলেছেন, ''তখন আমি সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতাম। বাড়ি থেকে বের হতে ভয় লাগত। এমনকী আমার পরিবারের কেউ বাড়ি থেকে বের হলে আমি ভয়ে ভয়ে থাকতাম। আমার খালি মনে হত আমাকে বা আমার পরিবারের কাউকে কেউ অপহরণ করে নেবে। সবসময় নিরাপত্তাহীনতা কাজ করত। বাইরের লোকের কাছে আমি শ্রীসন্থ। কিন্তু বাড়ির লোকের কাছে আমি তাদের গোপু। আমি খালি ভাবতাম এত খারাপ কিছু কেন আমার সঙ্গেই হচ্ছে! আমার দোষটা ঠিক কোন জায়গায়! সবদিক থেকে হতাশা আমাকে গ্রাস করছে। নিজের ঘরে সারাক্ষণ চুপচাপ বসে থাকতাম। কান্না পেত। কিন্তু ঘর থেকে যখন বের হতাম হাসিমুখে। কারণ আমি জানতাম এই অন্ধকার সময়ে বাড়ির প্রতিটা মানুষ আমার পাশে রয়েছে। তাই আমার দুর্বল দিকটা তাদেরকে জানাতে চাইনি। নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা মাথায় এসেছিল। কিন্তু তখনই মনে হত মা-বাবার কথা। আমার চলে যাওয়াটা হয়তো তারা মেনে নিতে পারবেন না। তাই অনেক কষ্টে নিজেকে সামলাতে পেরেছিলাম।''

আরও পড়ুন- ভুল করে সচিনকে অনেকবার আউট দিয়েছি, অবসরের ১১ বছর পর স্বীকার করলেন আম্পায়ার

শ্রীশান্ত আরও বলেছেন, একা ঘরে সারাক্ষণ থাকাটা আরো বেশি হতাশার জন্ম দেয়। কিন্তু সেই সময় ওই একা ঘরে থাকতে আমি পছন্দ করতাম। কারণ ওই ঘরটা জানত আমার মনের কথা। লোকের কাছে নিজেকে জাহির করতে পারতাম না। কিন্তু মনে মনে জানার চেষ্টা করতাম নিজেকে। এসবের মাঝে শ্রীসান্থ একটি বই লেখার কাজ শেষ করে ফেলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সামনের মাসেই তার লেখা সেই বই বাজারে আসবে। সেখানে তিনি বলেছেন, কীভাবে একাকীত্ব দূর করতে হবে। খারাপ সময়ে নিজের পরিবারের কথা, প্রিয়জনদের কথা ভাবতে হবে। কিভাবে হতাশা থেকে বিভিন্ন দুশ্চিন্তার জন্ম হতে পারে তাও তিনি লিখেছেন। এবং সেইসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার রাস্তা খুঁজেছেন সেই বইয়ে। শ্রীসান্থ জানিয়েছেন, সুশান্তের সঙ্গে তাঁর ভাল বন্ধুত্ব ছিল। সুশান্ত হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন সে কথা অবশ্য তিনি আন্দাজ করতে পারেননি। যদি পারতেন তাহলে অবশ্যই বন্ধুর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেন।

.