সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে অভিভাবকহীন বাংলার টেবিল টেনিস!
তিনি ছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের আজীবন সদস্যও।
নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজনীতিবিদ, লোকসভার অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে চেনে গোটা দেশ। কিন্তু ক্রীড়াপ্রেমী সোমনাথবাবুকে চেনে বাংলা। বাংলার ক্রীড়া প্রশাসনে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সদর্প উপস্থিতি প্রত্যক্ষ করেছে টেবিল টেনিস মহল। সোমনাথবাবুর প্রয়াণে এদিন তাঁরা কার্যত অভিভাবকহীন।
আরও পড়ুন - নিরপেক্ষতায় ছিলেন অবিচল, সোমনাথের প্রয়াণে ভারতীয় সংসদীয় রাজনীতির নক্ষত্রপতন
বেঙ্গল টেবিল টেনিস অ্যাসোসিয়েশন বা BTTA একটা সময় রাজ্যে টেবিল টেনিসের নিয়ামক সংস্থা ছিল। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ১৯৯৫ সালে BTTA-র সভাপতি হন।কিন্তু প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাতে পারেননি তিনি। ২০০৩ সালে BTTA ভেঙে যায়। এবং ২০০৫ সালে তৈরি হয় BTTA-র পাল্টা সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল টেবিল টেনিস অ্যাসোসিয়েশন অর্থাত্ WBTTA । তখনও সোমনাথবাবু BTTA-র সভাপতি পদেই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। কিন্তু বেশি দিন সেই পদে থাকতে পারেননি। দুই সংস্থাকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা করেও সফল হননি এই পোড়খাওয়া রাজনীতিক। শেষ পর্যন্ত ২০০৬ সালে BTTA-র দায়িত্ব ছেড়ে পরের বছরেই যোগ দেন WBTTA-তে। সেই থেকে এক দশকের বেশি সময় সোমনাথবাবু ওয়েস্ট বেঙ্গল টেবিল টেনিস অ্যাসোসিয়েশন বা WBTTA-এর সভাপতি পদে ছিলেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই আদ্যোন্ত ক্রীড়াপ্রেমী মানুষটিকে জড়াতে হয়েছিল বাংলা টেবিল টেনিসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে, জড়িয়েছেন বিতর্কেও। কিন্তু দুই গোষ্ঠীকে এক করতে পারেননি লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ। শারীরিক অসুস্থতার কারণে চলতি বছরের মে মাসে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন এই বর্ষীয়ান প্রশাসক।
আরও পড়ুন - সোমনাথের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল, শোকবার্তা রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর
শুধু টেবিল টেনিস নয়, ফুটবলপ্রেমী সোমনাথবাবু ছিলেন মারাদোনা আর আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত। তিনি ছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের আজীবন সদস্যও। আগে নিয়মিত মাঠে আসতেন সবুজ-মেরুন জার্সির খেলা দেখতে। কিন্তু কার্যকরী সমিতি থেকে সরে যাওয়ার পর কিছু দিন আর ক্লাবে আসেননি। আবার আসেন লোকসভা স্পিকার হওয়ার পর। এসময় তাঁকে সংবর্ধনা জানান হয় মোহনবাগান ক্লাবের তরফে। তারপর থেকে ক্রমশ কমেছে যাতায়াত। সোমনাথবাবুর প্রয়াণে তাই কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা নয়, তাঁর মরদেহের ওপর ছিল সবুজ-মেরুন পতাকা।
সোমবার প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারনা করতে গিয়ে মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র বলেন, সোমনাথবাবুর জন্যই না কি সচিব হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ক্লাবের কার্যকরী সমিতির সদস্যও ছিলেন তিনি। একবার মোহনবাগানের আইনি লড়াইয়ে সোমনাথবাবু মামলা লড়েছিলেন বলেও জানান অঞ্জন মিত্র। তাও না কি আবার জ্যোতি বসুর থেকে অনুমতি নিয়ে ওই কেস লড়েছিলেন আইনজীবী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। আজ সে সব শুধুই স্মৃতি।