Exclusive Gautam Bhattacharya, Sourav Ganguly: সৌরভকে সরিয়েই দেওয়া হল, কেন?
ভারতীয় ক্রিকেটে প্রশাসক হিসাবে সৌরভ গঙ্গেপাধ্যায়ের ইনিংস শেষ হচ্ছে। তিনি কি রাজনীতির শিকার হলেন? হঠাৎ করে কী করে চল এল রজার বিনির নাম? উঠে আসছে নান প্রশ্ন। উত্তর দিলেন জি ২৪ ঘণ্টার এডিটর গৌতম ভট্টাচার্য।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সব ঠিক থাকলে ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) জায়গায় বসতে চলেছেন রজার বিনি (Roger Binny)। ৮৩-র বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক বিনিই হতে চলেছেন পরবর্তী বিসিসিআই (BCCI) সভাপতি। ভারতীয় ক্রিকেটে প্রশাসক হিসাবে শেষ হতে চলেছে মহারাজের ইনিংস। সৌরভ কী ফের একবার রাজনীতির শিকার হলেন? কীভাবে আচমকাই চলে এল বিনির নাম! এর পিছনে রয়েছে ঠিক কোন রাজনীতি? এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেট তোলপাড়া সৌরভকে নিয়ে। ঠিক কী হয়েছে এবং কী হতে চলেছে সৌরভ ইস্যুতে, এই বিষয়ে আলোকপাত করলেন জি ২৪ ঘণ্টার এডিটর গৌতম ভট্টাচার্য (Gautam Bhattacharya)।
গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, 'এটা পরিষ্কার যে, সৌরভকে সরিয়ে দেওয়া হল। যেহেতু তিনি হয়তো বোর্ডের মতাদর্শ অনুসরণ বা অনুকরণ করেননি। যার মধ্যে মিশে থাকে রাজনীতিও। সকলেই জানতেন যে, সৌরভকে যদি সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে অমিত শাহ-র ছেলে জয় শাহ বিসিসিআই সভাপতি হবেন। যিনি এই মুহূর্তে সচিব পদে রয়েছেন। জয় সভাপতি হচ্ছেন না। যা অত্যন্ত বিস্ময়কর। হঠাৎ করে রজার বিনিকে নিয়ে আসা হল। যিনি সমীকরণের মধ্যেই ছিলেন না। বোঝাই যাচ্ছে বিনি বোর্ডের ইয়েসম্যান হয়ে চলবেন। তাহলে প্রশ্ন উঠছে জয় শাহ কেন বিসিসিআই সভাপতি হলেন না, এরপর যিনি বিসিসিআই সভাপতি হবেন, তাঁকে আরও ছয় বছর অপেক্ষা করতে হবে। কারণ তাঁকে কুলিং অফে যেতে হবে। আবার ফেরত আসতে হবে। আর পারবেন কিনা কেউ জানে না। জয়ের একটা প্রশাসনিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল। তার মানে খুব পরিষ্কার যে, ক্রিকেট মহল বা রাজনৈতিক মহলের যে ধারণা, নরেন্দ্র মোদী বারবার যে পরিবারবাদের কথা বলেছেন, হয়তো জয় ক্ষমতায় এলে, এটা নিয়ে সমালোচনা হতে পারে। এটা ভেবেই জয়কে সভাপতি করা হল না। এর সঙ্গেই সৌরভকে বার্তা দেওয়া হল যে, আমরা তোমার সঙ্গে আর লম্বা রাস্তা হাঁটতে চাই না।'
আরও পড়ুন: BCCI, Roger Binny, Sourav Ganguly: ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে সৌরভের জায়গায় বসছেন বিনি
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
সৌরভের আইসিসি-তে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে গৌতমের সংযোজন, 'এটা এখন কোটি টাকার প্রশ্ন যে, সৌরভ আইসিসি-তে যাবেন কিনা! ২১ অক্টোবর আইসিসি-তে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। আপাতত আইসিসি চেয়ারম্যানের পদে আছেন গ্রেগ বার্কলে। তিনি আরও একটি টার্ম থাকতে পারেন। ভারত যদি মনে করে যে, আইসিসি-তে কাউকে পাঠাবে না, সেক্ষেত্রে বার্কলে দিয়ে চালানো হবে। আবার জয়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাঁকে আইসিসি চেয়ারম্যান হিসাবে ফিরিয়ে আনা যায়। এমনটাও ভাবছেন অনেকে। এখনকার মতো সৌরভের অনুরাগীরা ভাবছেন, তাঁর নাম যদি মনোনীত করা হয়, তাহলে সম্মানজনক মুখরক্ষা হবে। যেভাবে রজার বিনিকে নিয়ে আসা হল, আমার মতে সৌরভের নাম প্রস্তাবিত হওয়ার সম্ভাবনা ৫০-৫০। বোঝাই যাচ্ছে পুরোটাই বিজেপি-র নির্দেশিত। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সেভাবেই চলে। আদৌ সৌরভের নাম ভারত থেকে আইসিসি সভাপতি হিসাবে মনোনীত করা হবে কিনা তা বলা খুব সমস্যার। আগামী কদিন কীভাবে চলবে, বিরাট রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দেবে কিনা, তা সময় বলবে। তবে যেভাবে মুম্বইতে ঘটনাটি ঘটে গেল, তাতে সৌরভ কিন্তু খুব একটা সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে নেই।'
সৌরভের ভবিষ্যতের প্রসঙ্গে গৌতম বললেন, 'সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হয়েই থাকবেন। তিনি নিজেই এক প্রতিষ্ঠান। এতগুলি ব্র্যান্ড এনডোর্স করেন। ক্রিকেট প্রশাসনে বেশ কিছুদিনের জন্য তালা-চাবি পড়ে যাবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাওয়ার যে স্বপ্ন তিনি দেখছিলেন, তা ভারতীয় ক্রিকেটের অনুমোদন ছাড়া সম্ভব নয়। ভারত সেই অনুমোদন না দিলে, ইনিংসে কিন্তু দাঁড়ি পড়ে যাবে। এটা একটা রাজনৈতিক বিবৃতি, রজার বিনি হঠাৎ করে চলে এলেন, নামটা কপিল দেব বা সুনীল গাভাসকর হলে নাহয় বুঝতাম। অত্যাশ্চর্য ভাবে বিজিপে সাংসদ গৌতম গম্ভীর যিনি সৌরভের সতীর্থ, তিনি প্রকাশ্যে সৌরভের সমালোচনা করেলন। সেদিন থেকেই অনেকে ইঙ্গিত পান যে, সৌরভকে নানা ভাবে অপদস্থ করা হচ্ছে। এটা খুব সত্যি কথা যে, ক্রিকেটমহল মনে করে যে, গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি যে, বিজেপির সঙ্গে কথা বলে, শেষ পর্যন্ত ভোটে দাঁড়াননি, সেটা আজকের ঘটনারই বহিঃপ্রকাশ। এটা বৃহত্তর রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিলে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই। আর এখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে ক্যাশিয়ার বা অ্যাকাউন্টেন্ট বাদে যে কোনও পদেই মনোনয়ন রাজনৈতিক। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নেই, আমার মনে হয় সেটা কবরে শুয়ে থাকা টাইগার পতৌদিও বিশ্বাস করবেন না।' এখন দেখার সৌরভের ভবিষ্যত কোন দিকে এগিয়ে যায়!