Sourav Ganguly and Jay Shah : চাপে বোর্ড প্রধান সৌরভ-সচিব জয় শাহ! কুলিং অফ প্রত্যাহারে রাজি নয় সুপ্রিম কোর্ট
Sourav Ganguly and Jay Shah : বোর্ডের তরফে আগেভাগেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাখা হয়, যাতে ‘কুলিং অফ পিরিয়ড’ বাতিল করে দেওয়া যায়। বিসিসিআই-এর যুক্তি ছিল, এত কম সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটে কোনও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব নয়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) ও জয় শাহ (Jay Shah) কি আদৌ ভবিষ্যতে বিসিসিআই-কে (BCCI) পরিচালনা করতে পারবেন? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) ইঙ্গিতের পর কিন্তু বোর্ড প্রধান ও সচিবের অস্বস্তি আরও বাড়ল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের আবেদন মেনে ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ড তুলে দিতে রাজি নয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বোর্ড যে ভাবে দীর্ঘদিন একজন ব্যক্তিকে এক পদে রাখতে চাইছে, তাতে অখুশি শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেল। বুধবার দুপুর দু’টোয় এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
মঙ্গলবারের শুনানিতে শীর্ষ আদালত সেই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি। আদালতের তরফে এ দিন বলে দেওয়া হয়, 'কুলিং অফ ছাড়া টানা ১২ বছর অনেকটা সময়। আমরা বলতে পারি রাজ্য সংস্থায় এবং বোর্ডের দায়িত্বের মাঝে ‘কুলিং অফ’ না থাকলেও হবে। কিন্তু দুই জায়গা মিলিয়ে নিজেদের সময় শেষ হওয়ার পর কুলিং অফে যেতেই হবে।' যদিও সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত উকিল মনিন্দর সিং এ দিন সৌরভদের সামান্য স্বস্তি দিয়েছেন। তিনি সুপারিশ করেছেন, কোনও ব্যক্তি রাজ্য সংস্থায় একটি টার্ম কাটালে তাঁকে বিসিসিআই-তে পরপর দুটি টার্ম কাজ করার অনুমতি দেওয়াই যায়। অর্থাৎ, সৌরভদের দাবি আংশিকভাবে মেনে নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তিনি। যদিও তাঁর সুপারিশ আদৌ শীর্ষ আদালত মানবে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। বুধবার দুপুর দু’টোয় এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালত যদি এই রায়ই দেয়, তাহলে সেটা সৌরভ ও জয় শাহদের জন্য মোটেই ভাল খবর হবে না। সুপ্রিম কোর্ট কুলিং অফ তুলে না নিলে দায়িত্ব ছাড়তে হবে বোর্ডের দুই শীর্ষ কর্তাকে। সে ক্ষেত্রে বিসিসিআই-কে নতুন নির্বাচন করতে হবে। আর তাতেও সৌরভরা অংশ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: Virat Kohli : কিং কোহলি'-কে অদ্ভুত পরামর্শ দিলেন শাহিদ আফ্রিদি! কী বললেন?
আরও পড়ুন: T20 World Cup 2022 : সামনে এল রোহিত-হার্দিকদের নতুন জার্সি, ভিডিয়ো ভাইরাল
লোধা কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য সংস্থা বা বিসিসিআই-এ কোনও ব্যক্তি একটানা ছ’বছর কোনও পদে থাকলে তাঁকে তিন বছরের জন্য বাধ্যতামূলক ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ডে যেতে হয়। সেই নিয়ম অনুযায়ী বছর দুই আগেই শেষ হয়েছে সভাপতি সৌরভ ও বোর্ড সচিব জয় শাহের কার্যকাল। গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব পদে জয় শাহ আসেন ২০১৩ সালে। বিসিসিআই-এ আসার আগে পর্যন্ত তিনি সেই অ্যাসোসিয়েশনেই ছিলেন। সৌরভও সিএবিতে প্রথমে সচিব, পরে সভাপতি হিসেবে পাঁচ বছর কাটিয়েছেন। ২০১৯ সালে বোর্ড নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন তিনি। লোধা কমিশনের আইন মানতে হলে সৌরভ-শাহদের এতদিনে পদ ছেড়ে দিতে হত।
কিন্তু বোর্ডের তরফে আগেভাগেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাখা হয়, যাতে ‘কুলিং অফ পিরিয়ড’ বাতিল করে দেওয়া যায়। বিসিসিআই-এর যুক্তি ছিল, এত কম সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটে কোনও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাছাড়া তাঁদের কার্যকালের বেশিরভাগ সময়টা করোনা মহামারীর আবহেই কেটে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যদি তাঁরা দায়িত্ব ছেড়েও দেন তাতেও বোর্ড অথৈ জলে পড়বে। তাই সব দিক ভেবেচিন্তে ‘কুলিং অফ’ তুলে দেওয়া হোক।
এ দিন বোর্ডের আরও একটি দাবি এদিন খণ্ডন করেছে শীর্ষ আদালত। বোর্ড চাইছিল, কর্তাদের অবসরের মেয়াদ যেভাবে ৭০ বছরে বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেটা তুলে দেওয়া হোক। বিসিসিআইয়ের যুক্তি ছিল, অভিজ্ঞ কর্তারা থাকলে বোর্ড চালাতে সুবিধা হয়। কিন্তু সেই দাবি খণ্ডন করে শীর্ষ আদালত পালটা প্রশ্ন তোলে, ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া বোর্ডেও কি কেউ ৭৫ বছর বয়সি রয়েছেন? মোট কথা, এ দিন আদালতের শুনানির গতিপ্রকৃতি একেবারেই বোর্ডের পক্ষে ছিল না। এখন দেখার বুধবার এই ইস্যু নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত কী রায় দেয়।