জিমি...জিমি...আজা..আজা.. মিঠুনের তালে আজও নাচছে বিপ্লবের দেশ

ক্রেমলিনের রাস্তার ধার থেকে কেউ হ্যাঁচকা টেনে বলতে পারে, ''হুইচ কান্ট্রি?''

Updated By: Jun 24, 2018, 05:46 PM IST
জিমি...জিমি...আজা..আজা.. মিঠুনের তালে আজও নাচছে বিপ্লবের দেশ

জিমি...জিমি...জিমি...আজা...আজা...আজা। 

ক্রেমলিনের রাস্তার পাশে ছোট্ট ক্যাফেতে ভিড়। জমায়েত লোকজনের মধ্যে যে পোস্টার ঘিরে শোরগোল, কাছে না গেলে তা ভালভাবে দেখা সম্ভব নয়। গানের বোল তখনও স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। জিমি...জিমি...জিমি...আজা...আজা...আজা...আজারে মেরে পাস...। ভিনদেশী ক্যাফের দিকে এক পা দু'পা করে এগিয়ে যায় আগন্তুক। পোস্টারের মুখটা এবার আবছায়া কাটিয়ে চোখের সামনে। স্পষ্ট হন মিঠুন চক্রবর্তী। তাও সুদূর রাশিয়ায়। ক্রেমলিনের রাস্তায়। আর মুখে মুখে জিমি...জিমি...।

আরও পড়ুন- সতীর্থকেও অপমান করেছিলেন নেইমার

১৯৮২-র ব্লকবাস্টার হিট 'ডিস্কো ডান্সার' সিনেমার সেই কালজয়ী গান দেশের গণ্ডি পেরিয়েছিল সেই কবে! মধ্যবয়স্ক কোনও রাশিয়ানের সামনে মিঠুনের ছবি রাখুন। গান তখন তিনি নিজে থেকে আওড়াতে শুরু করবেন। জিমি..জিমি...জিমি। ঘর পালানো এক বাঙালির জয় সেখানেই। লক্ষ বাধা পেরিয়ে এক ভারতীয় অভিনেতার ছায়া হয়তো এভাবেই আকাশ ছুঁয়ে ফেলে। আমরা টেরও পাই না। রাশিয়া মনে রাখে। অমরত্ব লাভ করে 'জিমি'।

বিশ্বকাপের দেশের মানুষ এখনও জিমি...জিমিতে শরীর দোলায়। হ্যাঁ, তাঁদের দেশ পাঁচ গোলে সৌদি শিবিরকে গুঁড়িয়ে দিলে ক্রেমলিনের এদিক-ওদিকে সেলিব্রেশনের রব ওঠে। আধুনিক হয়ে ওঠা এই যন্ত্রনির্ভরতার মাঝে আটের দশকের 'ডিস্কো বিট' নতুন করে আত্মপ্রকাশ করে। কিছু জিনিস ধ্রুবক। তাদের শেষ নেই। শুধু সময়, ক্ষণের বদলে আকার পাল্টে যায়। 'জিমি' তেমনই নশ্বর। মিঠুন চক্রবর্তীর জনপ্রিয়তাও। আকার বদলে সময়ে সময়ে যা এদেশ, ওদেশের মানুষকে নতুনভাবে বাঁধে। 

আরও পড়ুন- আশঙ্কায় ভুগছেন কাবায়েরো

কখনও কখনও দেশের সীমারেখার নামকরণ হয় শিল্পীর সৃষ্টি নামানুসারে। এই যেমন রাশিয়ায় হচ্ছে। বিশ্বকাপে এখনও তরতরিয়ে এগোচ্ছে রাশিয়ার রণতরী। বিপ্লবের দেশে তাই মহোত্সব। এক তিউনিশিয়ান ফ্যান যেমন ক্রেমলিনের উন্মত্ততা দেখে দ্বন্দ্বে পড়ে গেলেন। বলে বসলেন, ''প্রথমে তো এখানে এসে ভেবেছিলাম হয়তো কোনো উত্সব চলছে। তার পর দেখলাম, না উত্সব তো নয়। তার পর আবার মনে হল, হ্যাঁ উত্সবই তো।''

আরও পড়ুন- জেতার পরেও নেইমারের কান্না!

কাজের সময় সাংবাদিকের আবেগ থাকতে নেই। কিন্তু রাশিয়ার ফুটবল উত্সবের মাঝে পড়লে সাংবাদিকের সত্ত্বায় জলাঞ্জলি দিতে হতে পারে। ক্রেমলিনের রাস্তার ধার থেকে কেউ হ্যাঁচকা টেনে বলতে পারে, ''হুইচ কান্ট্রি?'' আমতা আমতা করে আগন্তুক সেজে উত্তর দিতে পারেন, ''ইন্ডিয়া''। ওপার থেকে অট্টহাসি সহযোগে শুনতে হবে, ''ওহ্, জিমি..জিমি। কাম লেটস ডান্স।'' পোস্টার থেকে মিঠুন চক্রবর্তী তখন বিরাটাকার হয়ে ওঠেন। যে বিরাট অবয়ব ছাড়ায় ক্রেমলিন, মস্কো। ছাড়ায় রাশিয়া। ওই যে, কখনও কখনও দেশের সীমারেখার নামকরণ হয় শিল্পীর সৃষ্টির নামে।

অমরত্ব লাভ করে 'জিমি'।

.