হায়দরাবাদে পৃথ্বীই 'তিতলি', ঝলমলে নীলাকাশ পন্থ
রাজকোটের পর নিজামের শহরেও মুম্বইয়ের পৃথ্বীর ব্যাটিং-যৌবন অব্যহত।
নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজকোটে সফল উত্ক্ষেপন হয়েছিল পৃথ্বীর। হায়দরাবাদে সেই 'ক্রিকেটীয় যান'-এর গতি পরীক্ষার ব্যাপার ছিল। এখন নিশ্চিন্তে বলা যেতে পারে, রকেট-স্পিড। ৩৯ বলে ৫০। রাজকোটের উইকেটের সঙ্গে হায়দরাবাদের ট্র্যাকে বিস্তর তফাত। কিন্তু পৃথ্বীর ব্যাটিং-চরিত্র ও মানসিক ধরণ-ধারণে বদলের চিহ্ন নেই। ঘূর্ণিঝড়ের মতো চালচলন। নিমেশে আবির্ভাব। ঝটকায় তছনছ সামনে থাকা যে কোনও কিছু। হায়দরাবাদে পৃথ্বী শাহ যেন ঘূর্ণিঝড় তিতলির রূপান্তরমাত্র। রাজকোটের পর নিজামের শহরেও মুম্বইয়ের পৃথ্বীর ব্যাটিং-যৌবন অব্যহত। তবে এবার পৃথ্বী-যান গন্তব্যে পৌঁছনোর একটু আগে থমকাল। তাতে পৃথ্বীর (৭০) আক্ষেপ থাকার কথা নয়। উদ্দাম, উত্তাল চিত্ত ব্যাটসম্যান যাঁরা, তাঁদের কালে-ভদ্রে অ-প্রাপ্তিযোগ হলে অস্থিরতা থাকে না। ঠিক যেমন বীরেন্দ্র শেহবাগ। সেঞ্চুরি ফস্কালে বলতেন, ''কোনও ব্যাপার নয়। পরেরবার করে নেব।'' পৃথ্বীও তো সেই পৃথিবীর ব্যাটসম্যান!
আরও পড়ুন- পয়মন্ত মন্দির! এই মাঠে টানা সাত বছর ধরে জিতছে ভারত
ভারতীয় দলের ওপেনার কেএল রাহুল এখন মরুভূমিতে মরিচিকা দেখা এক পথিক। রানের গন্ধ পাচ্ছেন চারপাশে। কিন্তু চোখে দেখছেন না। আশেপাশে পৃথ্বী, বিরাট, জাদেজাদেরর রানের থলি প্রবল সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। কিন্তু তিনি যেন ভগঘুরের মতো ফর্ম খুঁজে চলেছেন। ঘরের মাঠে সিরিজ। রাজকোট, তার পর হায়দরাবাদ। পকেটে থাকা অ্যাডভান্টেজ সময়মতো বের করতে পারছেন না রাহুল (৪)। এর পর ভবঘুরের মতো টিম থেকে জায়গা হারালে তাঁর হয়তো আক্ষেপের শেষ থাকবে না। ভারতীয় ক্রিকেটে পূজারি রূপে অবতীর্ণ চেতেশ্বর পুজারা। কিন্তু হায়দরাবাদের উইকেটে পুজারার পুজায় প্রসন্ন হলেন না ক্রিকেট দেবতা। মাত্র ১০ রানে ফিরে গেলেন তিনি। এর পর অবধারিতভাবে রাজদায়িত্ব পালনের ভার পড়ল বিরাট কোহলির উপর। ছন্দেই খেলছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। কিন্তু জেসন হোল্ডারের একটা ডেলিভারি ঠিকঠাক জাজ্ করতে পারলেন না। ফল, ৪৫ রানের ব্যাট বগলদাবা করে ফিরতে হল তাঁকে।
আরও পড়ুন- বল করলেই মুখ থেকে বেরোচ্ছে রক্ত, চরম আশঙ্কায় আইপিএলে খেলা অজি অলরাউন্ডার হেস্টিংস
হায়দরাবাদের এক প্রান্তে ঝড়ের রূপ নিয়ে পৃথ্বীর অবস্থান। আরেক প্রান্তে টেস্ট ক্রিকেটের ঝলমলে আকাশ কিন্তু ঋষভ পন্থ। ১২০ বল খেলে ৮৫। ক্রিজে টিকে, ধৈর্য ধরে। অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগোনোর কোনও তাড়াহুড়ো নেই। বরং হাঁটার পথে একটা একটা করে মুক্ত ছড়িয়ে দিয়ে যেতে চাইছেন যেন! হোল্ডার, গ্যাব্রিয়েল, চেজদের বলে ক্ষুরের ধার নেই। তবে ব্লেডের মতো তীক্ষ্নতা রয়েছে। মনোযোগ হারালে হাত কাটতেই পারে। সেই ভুলটাই করতে চাইছেন না পন্থ। ধীর-স্থির ব্যাটিংয়ে নির্বাচকদের দৃষ্টি দাঁড় করিয়ে দিতে চাইছেন তিনি। হাজার হোক, তাঁকে যে ধোনির উত্তরসূর বলে ধরা হচ্ছে সেটা তিনি নিশ্চয়ই উপভোগ করেছেন। সেঞ্চুরির খুব কাছে দাঁড়িয়ে অজিঙ্ক রাহানেও (৭৫)। ধৈর্যের প্রসঙ্গে রাহানের মার্কশিটেও পুরো মার্কস আসবে। ১৭৪ বল খেলে অপরাজিত। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩১১ রানের বদলে ভারতীয় দল প্রথম ইনিংসে চার উইকেট হারিয়ে ৩০৮।