Shilton Paul: 'জীবনের রেফারির চোখ এড়িয়ে ফাউল করা যায় না'! কেন লিখলেন বাগানের বাজপাখি?

Mohun Bagan Star Shilton Paul Faces Issues Over His Cafe Melting Pot: বিগত কয়েক বছর শিল্টন পালকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন কিছু অসাধু মানুষ। আর এবার গোল খেয়েই ঘুরে দাঁড়ালেন মোহনবাগানের প্রাক্তন মহাতারকা।  

Reported By: শুভপম সাহা | Edited By: শুভপম সাহা | Updated By: Feb 22, 2024, 01:47 PM IST
Shilton Paul: 'জীবনের রেফারির চোখ এড়িয়ে ফাউল করা যায় না'! কেন লিখলেন বাগানের বাজপাখি?
শিল্টনের মুখে এখন হাসি। ছবি ফেসবুক থেকে

শুভপম সাহা: বিগত কয়েক ঘণ্টায়, ফেসবুকে একটাই নাম বারবার টাইমলাইনে ভেসে উঠেছে। কে তিনি? মোহনবাগানের 'ঘরের ছেলে' শিল্টন পাল (Shilton Paul)। মসলন্দপুরের ৫ ফুট সাড়ে ৮ ইঞ্চির গোলরক্ষক কি তাহলে অবসর ভেঙে ফের ফুটবলে ফিরছেন? একদমই না। তাহলে কী! শিল্টনের জীবনে গতবছরের মাঝামাঝি সময় থেকে একটা সমস্য়া চলছিল। আর অবশেষে একটি কঠিন ম্য়াচ জিতেই গেলেন 'বাগানের বাজপাখি'।

শিল্টনের হাতে বহু ম্য়াচের রং বদলে গিয়েছিল। এবার শিল্টনের জীবনের রং বদলে দিল মানুষের ভালোবাসার হাত। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমির স্নাতক ও বাংলার প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ফুটবলারের জীবনে ঠিক কী ঘটেছিল? ১৪ বছর মোহনবাগানের হয়ে খেলেছেন শিল্টন। দু'বার আই-লিগ, তিনবার ফেড কাপ ও তিনবার কলকাতা লিগ জিতেছেন তিনি। সবুজ-মেরুন জার্সিতে সিকিম গর্ভনরস গোল্ড কাপও হাতে তুলেছেন।

বর্ণময় কেরিয়ার শেষ করে শিল্টন এখন পুরোদমে ব্য়বসায়ী হয়ে উঠেছেন। তাঁর রয়েছে ক্য়াফে,পার্লার ও রিসর্ট। ব্য়ারাকপুরে রয়েছে শিল্টনের ক্য়াফে মেল্টিং পট। ঠিকানা ১৭/৭ ফিডার রোড। ১৪ নম্বর রেল গোটের ঠিক কাছেই। ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্য়ায় মেল্টিং পটের ফেসবুক পেজ থেকে শিলটনের ছবি দিয়ে একটি লম্বা পোস্ট করা হয়। প্রতিবেদনে হুবহু পোস্টটি তুলে ধরা হল দাঁড়ি-কমা সমেত। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু অসাধু মানুষ চেষ্টা করেছিলেন শিল্টনকে দমিয়ে রাখার। কিন্তু শিল্টন শেষপর্যন্ত জিতে গেলেন ম্য়াচ।

ফেসবুকে লেখা হয়েছে...

' Why do we fall?
নমস্কার, আমি শিল্টন পাল। Melting pot-এর কর্ণধার।
এটা একটু বড় লেখা, আশা রাখি পড়বেন।
ফুটবলের থেকে আমার পাওয়া সবচেয়ে প্রিয় উপহার হল মানুষের ভালোবাসা। 
ফুটবল ছাড়ার পর মানুষের সাথে বেঁধে বেঁধে থাকার জন্যই ক্যাফে খোলার সিদ্ধান্ত নিই । যেখানে মানুষ আসবে, আমি আসবো মাঝে মাঝে, বন্ধুবান্ধবরা আসবে গল্পগুজব আর খাওয়া-দাওয়া হবে। 
২০২১-এর সেপ্টেম্বর মাসে পথ চলা শুরু হয় আমার নিজের ক্যাফে - MELTING POT-এর। মানুষজনের সাথে হাসি-আড্ডা, দেখাসাক্ষাৎ, সেলফি ও খাদ্য সহযোগে বেশ ভালোই চলছিল আমাদের। সমস্যা শুরু হয় - গতবছরের মাঝ বরাবর থেকে - GMB-তে কপি-পেস্ট one star review দেওয়া থেকে আমাদের ফেসবুক পেজটি বারবার রিপোর্ট করা। নভেম্বর মাস নাগাদ আমাদের 2.2k followers-এর ফেসবুক পেজটিকে ব্যান করে দেওয়া হয়। social media-তে প্রচার প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
কে বা কারা এর পিছনে আছে আমি সত্যি জানি না। কেনই বা করছিল সেটাও জানি না। তাই কাউকে দোষারোপও করছি না। কিন্তু কেউ যখন ভালোবেসে একদম শূন্য থেকে কিছু নিজের পরিশ্রমে, যত্ন দিয়ে বানায় সেটা startup হোক, আঁকা-গান-কবিতা হোক  - তার ওপর মায়া চলে আসে। হারানোর ভয় কাজ করে।
কিন্তু ঐ যে - জাতে গোলকিপার আর রক্তে । গোল খেয়ে উঠে দাঁড়ানো ছাড়া option কি ? 
সুতরাং যুদ্ধ শুরু । ক্রমাগত মেইল করে যাওয়া। বিভিন্ন ডকুমেন্ট পাঠিয়ে যাওয়া Meta-কে। অবশেষে ছয়মাস পর গতকাল ফিরে পেলাম পেজটি।
পেজটির Reach-এর অবস্থা খারাপ। Engagement-ও তথৈবচ।
তাই পেজটি like আর share করলে খুব ভালো হয়। 
আর এতকিছুর পরও আমি এখনো মানুষে বিশ্বাসী।
আর একটা কথায় বিশ্বাসী - ফুটবল মাঠের মতো, জীবনেও একজন রেফারি আছেন। আর তার চোখ এড়িয়ে ফাউল করা যায় না। কার্ড বেরোবেই।
We're here to stay stronger. We're here to stay together.
দেখা হবে, আড্ডা হবে Melting Pot-এ। সবাই আসবেন।
আর যারা জীবনে বারংবার বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাদের বলবো - ভরসা রাখুন, আশা ছাড়বেন না। লড়াই চালিয়ে যান। সাফল্য আসবেই।
- Why do we fall?
- So we can learn to pick ourselves up.

শিল্টন চেয়েছিলেন মানুষ পাশে থাকুক। বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা কিন্তু শিল্টনের পাশেই থেকেছেন। প্রতিবেদন লেখার সময়ে পর্যন্ত বিগত ১৬ ঘণ্টায় পোস্টটিতে মোস্ট রিয়াকশনের সংখ্য়া ১০১। শেয়ার ১১৪। শিল্টনের প্রতিক্রিয়া জানতে জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল তাঁকে ফোন করেছিল। শিল্টন এই প্রসঙ্গে বলেন, জানেন তো, বিগত কয়েক ঘণ্টায় মানুষের এই সমর্থন পেয়ে ভালো লাগছে। মানুষ মনে রেখেছে। আমরা বাঙালি। ফুটবল নিয়ে আমরা আবেগপ্রবণ। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ক্লাবের প্রতি যাঁদের একটু হলেও অবদান রয়েছে, তাঁদেরকে যে মানুষ মনে রাখছে, এটাই পাওনা। সবার মনের মাঝে রয়েছি, এটা দেখেও ভালোলাগে।' 

শিল্টন তাঁর খারাপ লাগার প্রসঙ্গে বলছেন, 'অনেকে খারাপ করার চেষ্টা করেছে। সেই জায়গা থেকে খারাপ লেগেছিল। অনেক অসুবিধা হচ্ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও মানুষের সঙ্গে কানেক্ট করতে পারছিলাম না। অনেকেই জানতে চেয়েছিল যে, কী হয়েছে! কারণ এই যুগে আমরা তো সোশ্য়াল মিডিয়াতেই কানেক্টেড। সেভাবে রাগ কারোর উপরেই নেই। কখনই ছিল না।' শিল্টনের কাছে প্রশ্ন ছিল, তাহলে কি শিল্টনের বিশ্বস্ত দস্তানায় একটা কঠিন ম্য়াচ বাঁচিয়ে দিল। হাসতে হাসতে ক্য়াফের কর্ণধার বলেন, 'হা...হা...হা...! ম্য়াচ, বলা যেতে পারে সেভাবে দেখতে গেলে। আসলে বিগত কয়েক বছর ধরে একটা জিনিস গড়ে তুলেছিলান। সেখানে এই সমস্যা। মানুষের ভালোবাসায় আবার ঠিক হল।' শিল্টন কথা প্রসঙ্গে জানিয়েও রাখলেন যে, চলতি বছরেই তাঁর আরও দু'টি ক্য়াফে আত্মপ্রকাশ করছে। একটি ব্য়ারাকপুরে ও অন্যটি সল্টলেকে।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp)

.