এক বেলা নুন দিয়ে পান্তা ভাত খেয়ে কাটত দিন, এখন তিনিই বিশ্বকাপে দলের ভরসা
স্থানীয় এক ক্রিকেট টুর্নামেন্টে টেপ টেনিস বলে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন শরিফুল। সেদিন তাঁর বোলিং দেখে মুগ্ধ হন বাংলাদেশের রাজশাহীর স্বনামধন্য কোচ আলমগীর কবির।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ক্রিকেটার হওয়ার চিন্তা কখনও মাথায় আসেনি। ক্রিকেট খেলার জন্য কিটস কিনতে হত! এত টাকা কোথায়! এক বেলা নুন দিয়ে পান্তা ভাত খেয়ে দিন কাটত। কিন্তু ভাগ্য যেন তাঁর জন্য আগে থেকেই ভাল কিছু নির্ধারণ করে রেখেছিল। তিনি ক্রিকেটার হলেন। বিশ্বকাপ এখন তিনি দলের পেস অ্যাটাক-এর অন্যতম ভরসা। জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ তারকা হিসাবে ভাবা হচ্ছে বাংলাদেশের শরিফুল ইসলামকে। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পেস আক্রমণের প্রধান কাণ্ডারি এখন এই দীর্ঘদেহী পেসার। এক জায়গায় টানা বল করে যেতে পারেন তিনি।
স্থানীয় এক ক্রিকেট টুর্নামেন্টে টেপ টেনিস বলে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন শরিফুল। সেদিন তাঁর বোলিং দেখে মুগ্ধ হন বাংলাদেশের রাজশাহীর স্বনামধন্য কোচ আলমগীর কবির। তিনিই শরিফুলকে ট্রেনিং করাতে শুরু করেন। সকাল-বিকাল দুবেলা আলাদা করে শরিফুলকে নিয়ে পড়ে থাকতেন কোচ কবির। তাঁর পরিশ্রম বৃথা যায়নি। প্রথমে রাজশাহীর বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে খেলেন শরিফুল। ২০১৭ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুরন্ত পারফরম্যান্স করে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। ৮ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হন। এর পর বাংলাদেশ প্রিমিয়র লিগে খেলেন। বাংলাদেশ ‘এ’ দলেও সুযোগ পান।
আরও পড়ুন- বিশ্বকাপে আবার ভারত-পাকিস্তান, সেমিফাইনালে ধুন্ধুমার লড়াইয়ের অপেক্ষা
বাড়িতে টিভি ছিল না। ক্রিকেট ম্যাচ দেখার জন্য প্রতিবেশীর বাড়ির টিভি ছিল ভরসা। এক বেলা নুন-পেঁয়াজ দিয়ে পান্তা ভাত খেয়ে কাটত জীবন। আজ তিনিই জাতীয় দলের ক্রিকেটার। শরিফুল বলছিলেন, ''বাবা-মা চাইতেন না আমি ক্রিকেট খেলি। এত খরচ জোগানোর সামর্থ তাদের ছিল না। প্রথম দিকে বাবা-মার থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। একমাত্র আমার ভাই পাশে ছিল। ও বলেছিল, দরকার হলে রক্ত বিক্রি করে তোকে খেলাব। এর পর একদিন বাবা-মা আমার সাক্ষাত্কার দেখল টিভিতে। তার পর থেকেই ওরা বিশ্বাস করতে শুরু করল, বড় কিছু করে দেখানোর সামর্থ আমার আছে।''