মেসির জীবনের ওঠানামা, রোজারিও থেকে ব্যালন ডি'ওর

বিশ্বফুটবলে ইতিহাস গড়লেন লিওনেল মেসি। ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের সম্মানে সম্মানিত হলেন তিনি।এই নিয়ে টানা চার বার ব্যালন ডি অর জেতার কৃতিত্ব অর্জন করলেন আর্জেন্টিনীয় সুপারস্টার। আর্জেন্টিনার রোজারিওর এক অচেনা গ্রামে মেসির জন্ম হয়েছিল। এখন তিনি সাফল্যের এভারেস্টে। মেসির জীবনের এই উত্তরণের খোঁজ দিতেই এই প্রতিবেদন---

Updated By: Jan 8, 2013, 06:27 PM IST

বিশ্বফুটবলে ইতিহাস গড়লেন লিওনেল মেসি। ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের সম্মানে সম্মানিত হলেন তিনি।এই নিয়ে টানা চার বার ব্যালন ডি অর জেতার কৃতিত্ব অর্জন করলেন আর্জেন্টিনীয় সুপারস্টার। আর্জেন্টিনার রোজারিওর এক অচেনা গ্রামে মেসির জন্ম হয়েছিল। এখন তিনি সাফল্যের এভারেস্টে। মেসির জীবনের এই উত্তরণের খোঁজ দিতেই এই প্রতিবেদন---
১৯৮৭--জুলাই ২৪-- আর্জেন্টিনার রোজারিওর সান্টা' ফেতে জন্ম।
১৯৯৫-- নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ নামে ক্লাবে জন্ম
১৯৯৮-- শরীরে হরমনের অভাবঘটিত রোগ ধরা পড়ল।
২০০০-- মাত্র ১৩ বছর বয়সে বার্সেলোনায় যোগ
২০০৩-- নভেম্বর ১৬-- প্রথমবার বার্সেলোনার জার্সি গায়ে মাঠে নামলেন। খেলাটা অবশ্য ছিল প্রীতি ম্যাচ। প্রতিপক্ষ এফসি পোর্তো
২০০৪, অক্টোবর ১৬-- বার্সা জার্সিতে প্রথমবার প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে নামলেন। মেসির বয়স তখন ১৭। এসপেনিয়লের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে জিতল বার্সালেনো।

২০০৫, ১ মে-- বার্সেলোনার হয়ে সবচেয়ে কম বয়েসে গোল করার রেকর্ড করলেন। বার্সার জার্সিতে মেসির প্রথম গোল আলবাকেট ক্লাবের বিরুদ্ধে।

২০০৫, জুন-- আর্জেন্টিনা যুব দলকে বিশ্বকাপ এনে দিলেন। নেদারল্যান্ডসে আয়োজিত এই বিশ্বকাপে মেসি সর্বাধিক গোলদাতা ও প্রতিযোগিতার সেরা নির্বাচিত হলেন।

২০০৫, ১৭ অগাস্ট-- আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথমবার খেললেন। হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে পরিবর্ত হিসাবে নামেন মেসি। দু মিনিট পরই অবশ্য লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।
২০০৬, মে-- বার্সার হয়ে অনবদ্য পারফরম্যান্স করলেন। ক্লাবের ইউরো সেরার খেতাব জয়ের পিছনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেন। অবশ্য প্যারিসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে আর্সেনালের বিরুদ্ধে ম্যাচে খেলতে পারলেন না মেসি।

২০০৬, জুন ১৬-- সবচেয়ে কম বয়েসে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপে খেলার নজির গড়লেন। সার্বিয়া-মন্টিনেগ্রোর বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে মেসি নামলেন পরিবর্ত হিসাবে। দেশ জিতল ৬-০ গোলে। মেসি গোলও করলেন। বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার তালিকায় পাঁচ নম্বরে নামও লেখালেন।
২০০৭, জুলাই--কোপা আমেরিকা ফুটবল প্রতিযোগিতায় দাগ কাটলেন। প্রতিযোগিতায় ইয়ং প্লেয়ার অফ দি ইয়ার নির্বাচিত হলেন। তবে ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হারল আর্জেন্টিনা।
২০০৮, জুলাই ৩-- তাঁকে নিয়ে বার্সালোনার সঙ্গে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের তীব্র ঝামেলা। অবশেষে বেজিং অলিম্পিকের জন্য আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিলেন মেসি। বার্সাও মেনে নিল সেই কথা।

২০০৮, ২৩ অগাস্ট-- আর্জেন্টিনাকে অলিম্পিকে সোনা জিতিয়ে আনেলন। অলিম্পিকের ফাইনালে নাইজেরিয়াকে ১-০ গোলে হারাল আর্জেন্টিনা।

২০০৯, মে ২৭--মেসিকে রোখা যাচ্ছে না। বার্সেলোনাকে লা লিগা থেকে কোপা ডেল রে কাপে চ্যাম্পিয়ন করালেন। তবে মেসি ম্যাজিকে মুগ্ধ হওয়া গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। বিশ্ব ক্লাব ফুটবলের সেরা মঞ্চে মানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বার্সা ২-০ গোলে হারাল ম্যান ইউকে। মেসি দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটা করলেন, সারা মাঠ জুড়ে খেললেন।
২০০৯, ১লা ডিসেম্বর-- প্রথমবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হলেন। জিতলেন ব্যালন ডি'ওর পুরস্কার
২০১০, মে-- মেসি ম্যাজিক চলছেই। ক্লাবকে একের পর এক খেতাব এনে দিচ্ছেন। মারাদোনার সঙ্গে তুলনাটা দারুণভাবে শুরু হয়ে গেল।
২০১০, মে-- ক্লাবের জার্সিতে অনবদ্য মেসির দেশের জার্সিতে জ্বলে ওঠেন কি না তা নিয়ে বিশ্ব উত্তাল। শুরু হল দক্ষিণ আফ্রিকা ফুটবল বিশ্বকাপে।
মে, জুন-- কোচ মারাদোনার সঙ্গে দারুণভাবে মানিয়ে নিলেন মেসি। বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগে মারাদোনা-মেসি জুটির রসায়ন দেখে নাম দেওয়া হল মেসিদোনা।
২০১০, জুন-- স্বপ্নভঙ্গ। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে হেরে বিদায় নিল আর্জেন্টিনা। মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়লেন মেসি।
শুরু হয়ে গেল জোর সমালোচনা। সমালোচকরা দাঁত মুখ বের করে বললেন, মেসি আজ মেসি  হয়েছেন কারণ ক্লাব ফুটবলে তাঁর পাশে ইনিয়েস্তা, জাভিরা আছেন।
২০১০, ২০ নভেম্বর -- ক্লাব ফুটবলে মেসির 'মস্তানি' চলছেই। মরসুমে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করে ফেললেন মেসি। লা লিগায় শততম গোল করার নজির গড়লেন।
২০১১, ১০ জানুয়ারি--আবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হলেন।
২০১১, মে-- মরসুমে ৫০ টা গোল করলেন।

২০১১,অগাস্ট-- আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হলেন। কোচ আলেকজান্দ্রা সাবেলা অধিনায়কের আর্মব্যান্ডটা তুলে দিলেন মেসিকে।

২০১১, ডিসেম্বর-- বার্সেলোনার জার্সিতে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতলেন।
২০১২, ৯ জানুয়ারি-- পরপর তিনবার ফিফার বর্ষসেরা নির্বাচিত হলেন।
মার্চ, ৭-- প্রথম ফুটবলার হিসাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক ম্যাচে পাঁচ গোল করে সাফল্যের নতুন রেকর্ড লিখলেন।

মার্চ, ২০-- লা লিগায় গ্রেনেডার বিরুদ্ধে ম্যাচে দুটো গোল করে নতুন ইতিহাস গড়লেন। বার্সেলোনার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন। বার্সার জার্সিতে মেসির গোলসংখ্যা হল ২৩৩টি। ১৯৪০-৫০ সিজার রডরিগেসের রেকর্ড ভাঙলেন ফুটবলের মহারাজ।
মে-সেপ্টেম্বর -- গোল করাটা এখন অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন মেসি। শুধু ক্লাব নয় দেশের জার্সিতেও নিয়মিত গোল করছেন অধিনায়ক মেসি।
ডিসেম্বর ৯--  লা লিগায় রিয়েল বেতিসের বিরুদ্ধে ম্যাচে গোল করে নয়া নজির। এক ক্যালেন্ডার বছরে  সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড গড়লেন। এক বছরে গার্ড মুলারের ৮৫টি গোলের রেকর্ড ভেঙে মেসি এখন সাফল্যের এভারেস্টে।
২২ ডিসেম্বর-- রিয়াল ভাল্লাদোলিদের বিরুদ্ধে গোল করে মরসুম শেষ করলেন ৯১টি গোল করে। যা সর্বকালীন রেকর্ড।
২০১৩, জানুয়ারি ৭-- টানা চারবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হলেন। বিশ্বসেরা হওয়ার বিশ্বরেকর্ড গড়ে মারাদোনা, পেলের সঙ্গে মেসিও কিংবদন্তির তালিকায় প্রথমের দিকে নাম খোদাই করলেন। সমালোচনা শুধু একটাই, মেসি দেশকে এখনও বিশ্বকাপ জেতেননি।
মেসির এই স্বপ্নের সফর তাই শেষ করলাম এইভাবে
...

 
 

 

.