বদলার সিরিজ নাটকের মহড়ার দৃশ্যপট

নভেম্বরের শেষের দিক। শীতের আমেজে ময়দানে শুরু হয়ে গেছে তোড়জোড় করে ক্রিকেট প্রস্তুতি যদিও ক্রিকেটটা সারা বছর খেলা হয়। কিন্তু শীতের আমেজে ক্রিকেট! ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এ হেন অভাবনীয় দৃশ্য। চোখ বুজলে একটাই ছবি ভাসে, লর্ডসের মাঠে শিশির মাখা ঘাসের বুকে দাঁডিয়ে আছে তিনটি স্লিপ, একটা গালি, পয়েন্ট, কভার, এক্সট্রা কভার, মিড অফ। সামনে দাঁড়িয়ে শর্ট স্কোয়ার লেগ। আর দুর থেকে ছুটে আসছে গতিশীল বোলার। এমনই ইংল্যান্ডীয় ক্রিকেট দৃশ্য। তাই একটা কথা বলা যেতেই পারে- সময়টা শীতকাল, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, হোক না ভারতের মাঠ, ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ পুরো জমে যাবে।

Updated By: Nov 13, 2012, 02:23 PM IST

নভেম্বরের শেষের দিক। শীতের আমেজে ময়দানে শুরু হয়ে গেছে তোড়জোড় করে ক্রিকেট প্রস্তুতি যদিও ক্রিকেটটা সারা বছর খেলা হয়। কিন্তু শীতের আমেজে ক্রিকেট! ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এ হেন অভাবনীয় দৃশ্য। চোখ বুজলে একটাই ছবি ভাসে, লর্ডসের মাঠে শিশির মাখা ঘাসের বুকে দাঁডিয়ে আছে তিনটি স্লিপ, একটা গালি, পয়েন্ট, কভার, এক্সট্রা কভার, মিড অফ। সামনে দাঁড়িয়ে শর্ট স্কোয়ার লেগ। আর দুর থেকে ছুটে আসছে গতিশীল বোলার। এমনই ইংল্যান্ডীয় ক্রিকেট দৃশ্য। তাই একটা কথা বলা যেতেই পারে- সময়টা শীতকাল, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, হোক না ভারতের মাঠ, ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ পুরো জমে যাবে।
ইতিমধ্যে ইংল্যান্ড, প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো পারফরমেন্স দেখিয়েছে। অধিনায়ক অ্যালেস্টার কুক, কেভিন পিটারসন, সমিত প্যাটেল, উইকেট রক্ষক জনি বেয়ারস্টো, জনাথন ট্রটদের নজরকাড়া পারফরমেন্স স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজে যে কোনো খেলোয়াড় একাই ম্যাচের রঙ পাল্টাতে পারে। টেস্ট সিরিজ শুরু হবার আগে ইংল্যান্ড তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। অ্যালেস্টার কুকের ভারত-এ দলের বিরুদ্ধে ১১৯ রান ও হরিয়ানার বিরুদ্ধে মাত্র তিন রানের জন্য শতরান হারানো বেশ উল্লেখযোগ্য পারফর্মেন্স। কেভিন পিটারসন, ট্রটও হরিয়ানার বিরুদ্ধে ১১০ রান করেছেন। আর মুম্বই-এ দলের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের উইকেট রক্ষক জনি বেয়ারস্টো ১৭৭ বলে ১১৮ রান তাঁদের ব্যাটিং অর্ডারকে মজবুত জায়গায় এনে দিয়েছে।
অন্যদিকে ভারতীয় খেলোয়াড়রা ইংল্যান্ডের মতো সেঞ্চুরির ঝড় তেমন কেউ তুলতে পারেননি দিল্লির রাহুল দেওয়ান ছাড়া। হরিয়ানার হয়ে একমাত্র তিনি ৩১৫ বলে ১৪৩ রানে অপরাজিত থেকে উল্লেখযোগ্য ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তিনি টেস্ট দলে না থাকায় এই উপহারের কদর কোনোভাবেই রইল না। তবে দলীপ ট্রফিতে অনবদ্য ২০৮ রান, যুবরাজ সিং মানে `কামব্যাক হিরো` কে টেস্ট দলে মজবুত জায়গা করে দিয়েছে। এই প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিং-এ কোনো শতরান না থাকলেও ৭ টি বাউন্ডারি ও ৪ টি ওভার বাউন্ডারি যুক্ত ঝোড়ো ৫৯ রান আর বোলিং-এ পাঁচ উইকেট অন্যমাত্রা যোগ করবে এমনই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। টেস্ট দলে থাকা একমাত্র মুরলি বিজয় ছাড়া, চেতেশ্বর পূজারা মুম্বই-এ দলের হয়ে ৮৭ রান, আজিঙ্কা রাহানে রঞ্জিত ট্রফিতে রেলওয়ের বিরুদ্ধে ১২৯ রান ধোনিবাহিনীকে আশার আলো দেখাচ্ছে।
আর একদিক থেকে ধোনিবাহিনী আশার আলো দেখাচ্ছে। কারণ ইংল্যান্ড অপ্রত্যাশিতভাবে হিট লিস্টে থাকা বোলারদের না পাওয়া একটু ব্যাকফুটে রয়েছে। স্টুয়ার্ট বর্ড চোটের কারণে দুটি টেস্টে না খেলার অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। নতুন বলে দুটো ইন সুয়িং- আউট সুয়িংকে সমানভাবে প্রয়োগ করা অথবা কখনো কখনো সিম কাজে লাগিয়ে জায়গা থেকে অকোর্য়াড বাউন্স তুলে রীতিমতো ব্যাটসম্যানকে হয়রানি করানো একমাত্র স্টুয়ার্ট ব্রডই পারতেন। একই কারণে মিডিয়াম পেসার স্টিভেন ফিন মাঠের বাইরে রয়েছেন। আর একজন হিট লিস্টে থাকা স্পিন বোলার গ্রেম সোয়ান পারিবারিক সমস্যার জন্য ইতিমধ্যে দেশে ফিরে গেছেন। তবে এটা আশা করা যাচ্ছে প্রথম টেস্ট শুরু হবার আগেই তিনি চলে আসতে পারবেন। কিন্তু অধিনায়ক কুকের ভয় কোনোভাবেই কাটছে না বোলিং নিয়ে। তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেই ফেললেন "কয়েকদিন তাঁদের কাছে বেশ গুরুত্বপুর্ণ সময়, আশা করছি পরবর্তী খেলায় ১০০% আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামতে পারবে"।
কিন্তু যে সত্যটা ধোনিবাহিনীকে আশার আলো থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাচ্ছে তা হল, ব্যাটিং অর্ডারে গুরুত্বপুর্ণ ব্যাটসম্যানদের অভাব। ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারে রাহুল দ্রাবিড় আর ভি ভি এস লক্ষ্মণ না থাকায় একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে। আগেরবার ইংল্যান্ড সফরে ভারত `হোয়াইটওয়াশ` হলেও দ্রাবিড়ের অনবদ্য ১০৩, ১১৭, ১৪৬ বার বার মনে করিয়ে দেয়, তিনিই একমাত্র `ডিপেনডেবল ব্যাটসম্যান`। তিনিই ভারতের ক্রিকেটের একমাত্র `ওয়াল`। তাই বিরাট কোহলি ও চেতেশ্বর পূজারা কতখানি এই ক্ষতস্থান পূরণ করতে পারে সেটাই এখন দেখার। তাঁদের কাছে আর একটা প্রমাণ করার বিষয় অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানের রাহুল ও লক্ষ্মণের জায়গায় তরুণ দুই ব্যাটসম্যান কতখানি `লং রেসের ঘোড়া` হতে পারে। আর একটা জিনিস অক্টোপাস পলের মতো আমরা বলতে পারি মাহির `লাকি অধিনায়কত্বে`র আর একটা বড় প্লাস পয়েন্ট নিজের দেশের মাটি।
এক নজরে ভারত- ইংল্যান্ডের সিরিজের ক্রীড়াসূচি--
টেষ্ট
. প্রথম টেষ্ট: ১৫ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর ।। সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়াম, আমেদাবাদ
. দ্বিতীয় টেষ্ট: ২৩ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর ।। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম, মুম্বাই
. তৃতীয় টেষ্ট: ৫ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর ।। ইডেন গার্ডেন্স, কলকাতা
. চতুর্থ টেষ্ট: ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর ।। ভিডর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েসন স্টেডিয়াম, নাগপুর
টি-টোয়েন্টি
. প্রথম টিটোয়েন্টি: ২০ ডিসেম্বর, রাত ৮.০০ ।। সুব্রত রায় সাহারা স্টেডিয়াম, পুণে
. দ্বিতীয় টিটোয়েন্টি: ২২ ডিসেম্বর, রাত ৮.০০ ।। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম, মুম্বাই
এক দিনের ম্যাচ
. প্রথম এক দিনের ম্যাচ: ১১ জানুয়ারি ২০১৩, দুপুর ২.৩০ ।। রাজকোট
. দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচ: ১৫ জানুয়ারি ২০১৩, দুপুর ২.৩০ ।। কোচি
. তৃতীয় এক দিনের ম্যাচ: ১৯ জানুয়ারি ২০১৩, দুপুর ২.৩০ ।। রাঁচি
. চতুর্থ এক দিনের ম্যাচ: ২৩ জানুয়ারি ২০১৩, দুপুর ১২.০০ ।। মোহালি
. পঞ্চম এক দিনের ম্যাচ: ২৭ জানুয়ারি ২০১৩, সকাল ০৯.০০ ।। ধর্মশালা

.