India vs Australia | World Cup 2023: সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল ভারত! বিরাট-রাহুলের ব্যাটে চাপমুক্তি চিপকে

India Beat Australia by Six Wickets World Cup 2023: বল হাতে জ্বলে উঠলে রবীন্দ্র জাদেজা, ব্য়াট হাতে কামাল বিরাট কোহলি-কেএল রাহুলের। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই বিশ্বকাপ শুরু ভারতের।

Updated By: Oct 8, 2023, 11:24 PM IST
India vs Australia | World Cup 2023: সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল ভারত! বিরাট-রাহুলের ব্যাটে চাপমুক্তি চিপকে
জয়ের দুই কারিগর-বিরাট ও রাহুল

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দাপুটে জয়েই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) টিম ইন্ডিয়া (Team India)। রবিবাসরীয় এমএ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে (MA Chidambaram Stadium, Chepauk, Chennai) হয়ে গেল ভারত-অস্ট্রেলিয়া মহারণ। ৩৩ হাজার ১৯০ জন দর্শকের সামনে ভারত ছয়ে উইকেটে দারুণ জয় পেল ঠিকই, তবে সহজ ম্যাচ কঠিন করেই জিতল ভারত। একথা অনায়াসে লেখা যায়। কাপযুদ্ধের প্রথম জয়ের নেপথ্যের কারিগর হয়ে থাকলেন রবীন্দ্র জাদেজা (Ravindra Jadeja), বিরাট কোহলি (Shreyas Iyer) ও কেএল রাহুল (KL Rahul)।

আরও পড়ুন: Mitchell Starc | World Cup 2023: মালিঙ্গার নাম মুছে বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন স্টার্ক! কোন রেকর্ড করলেন অজি নক্ষত্র?

প্য়াট কামিন্স এদিন টস জিতে প্রথমে ব্য়াট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন মিচেল মার্শ। তবে ম্য়াচের তৃতীয় ওভারে এসেই অস্ট্রেলিয়াকে বড় ধাক্কা দিয়েছেন জসপ্রীত বুমরা। মার্শকে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন জাতীয় দলের এক নম্বর পেসার। বুমরার বাইরের দিকে যাওয়া বলে খোঁচা দেন মার্শ। প্রথম স্লিপে তখন মোতায়েন ছিলেন বিরাট কোহলি। বাজ পাখির মতো ঝাঁপিয়ে এক হাতে অসাধারণ ক্যাচ নেন। মার্শ হাফ ডজন ডেলিভারি খেলে, খালি হাতে ফিরে যান কোনও রান না করেই। কোহলি ক্যাচ নেওয়ার পরেই চিপকে গ্যালারি ফেটে পড়ে। এদিন কোহলি এই ক্যাচ নেওয়ার সঙ্গেই করে ফেলেন বিশ্বকাপে অনন্য রেকর্ড। এর আগে অনিল কুম্বলে (১৪), কপিল দেব (১২) ও সচিন তেন্ডুলকররা (১২) ছিলেন তালিকায়। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডার দেখতে দেখতে নিয়ে ফেললেন ১৫টি ক্য়াচ। বিসিসিআই ট্যুইট করে জানিয়ে দেয় কোহলির এই কৃতিত্বের কথা।

তিনে নেমে স্টিভ স্মিথ ওয়ার্নারের হাত শক্ত করতে আসেন। তাঁরা দুয়ে মিলে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। ৮৫ বলে তাঁরা ৬৯ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে। ওয়ার্নার ৫২ বলে ৪১ রান করে আউট হয়ে যান। কুলদীপ যাদবের বলে তাঁর হাতেই ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ওয়ার্নারের পথ ধরেন স্মিথও। ৭১ বলে ৪৬ রান করে আউট হন তিনি। রবীন্দ্র জাদেজা স্মিথের উইকেট ছিটকে দেন। চারে নামেন বিশ্ববন্দিত ব্য়াটার মার্নাস লাবুশানে। ৪১ বল খেলে ২৭ রানে ফেরেন লাবুশানে। তিনিও শিকার হন জাদেজার। এরপর গ্লেন ম্য়াক্সওয়েল (১৫), অ্যালেক্স ক্য়ারে (০), ক্য়ামেরন গ্রিন (৮), প্য়াট কামিন্স (১৫), মিচেল স্টার্ক (২৮), অ্যাডাম জাম্পা (৬), জোশ হ্য়াজেলউডরা (অপরাজিত ১) আসেন, কিছুক্ষণ থাকেন, চলে যান। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ১৯৯ রানে গুটিয়ে যায়। এদিন জাদেজা তিনটি, কুলদীপ যাদব ও জসপ্রীত বুমরা দু'টি করে উইকেট নেন। মহম্মদ সিরাজ, হার্দিক পাণ্ডিয়া ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন নেন একটি করে উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার গল্প শেষ হয়ে যায় ৪৯.৩ ওভারে। এখন দেখার ছিল ভারত কত তাড়াতাড়ি এই ম্য়াচের নিস্পত্তি করতে পারে।

এই রান তুলতে নেমেই ভারতের রীতিমতো হৃৎকম্প বেড়ে গিয়েছিল। ২ ওভারের মধ্যে ভারতের ৩ উইকেট চলে যায় মাত্র ২ রানে! হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন। রীতিমতো ফ্যানদের রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল। রোহিত শর্মা ও ঈশান কিশান ওপেন করতে নেমেছিলেন এদিন। প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় ইন্ডিয়া। মিচেল স্টার্কের অনেক বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে, ঈশান স্লিপ কর্ডনে জমা পড়ে যান। কোনও রানই করতে পারেননি শুভমন গিলের পরিবর্তে দলে জায়গা করে নেওয়া তরুণ ব্য়াটার। এরপর দ্বিতীয় ওভারে জোশ হ্য়াজেলউড এসে ব্য়াক-টু-ব্য়াক উইকেট তুলে নেন। রোহিত শর্মাকে তিনি এলবিডব্লিউ করে দেন। এরপর শ্রেয়স অফ স্টাম্পের বাইরের গুড লেন্থ বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। ১৯৮৩ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম ভারতের দুই ওপেনার কোনও রান না করে সাজঘরে ফিরলেন। ৮৩-র বিশ্বকাপে সুনীল গাভাসকর ও কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত আউট হয়েছিলেন ডাক হয়ে। প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবোয়ে। কপিল দেবের হাত থেকে এসেছিল ১৭৫ রানের ইনিংস। অন্যদিকে মহম্মদ আজহারউদ্দিন ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর, তৃতীয় ভারত অধিনায়ক হিসেবে রোহিত বিশ্বকাপের মঞ্চে কোনও রান না করে আউট হলেন।

টপ অর্ডার সাজঘরে ফিরে যাওযার পর ভারতের বৈতরণী পার করানোর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন বিরাট কোহলি ও কেএল রাহুল। চতুর্থ উইকেট পার্টনারশিপে তাঁরা ২১৫ বলে ১৬৫ রান যোগ করেন। কোহলি ১১৬ বলে ৮৫ (ছ'টি চার) রান করে আউট হয়ে যান। অল্পের জন্য় সেঞ্চুরি রেখে আসেন মাঠে। হ্যাজেলউডের বলে পুল করতে গিয়ে সোজা মিউউইকেটে মার্নাস লাবুশানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। যদিও কোহলি যা করার করে দিয়ে গেলেন। তিনি আউট হওয়ার পর রোহিতের ডেপুটি হার্দিক পাণ্ডিয়া আসেন। যদি তাঁকে খুব একটা কিছু করতেই হয়নি। ৮ বলে ১১ রান করে ক্রিজে ছিলেন তিনি। বাকিটা বুঝে নিয়েছিলেন রাহুল। ১১৫ বলে ৯৭ (৮টি চার ও ২টি ছয়) রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। চার মেরে দেশকে জেতালেন, তবে এভাবে সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও, সেঞ্চুরি হাতছাড়া করার আক্ষেপ তাঁর থাকবেই। কিন্তু কিছু করার নেই। ম্য়াচের পরিণতিই হয়েছিল এমন। ৫২ বল হাতে রেখে ম্য়াচ বার করে নেয় ভারত। বিশ্বকাপে ভারতের দ্বিতীয় ম্য়াচ আগামী ১১ অক্টোবর। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে খেলবে টিম ইন্ডিয়া। আর তারপরেই ১৪ অক্টোবর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিস্তান। 'মাদার অফ অল ব্য়াটল'-এর দিকে তাকিয়ে দুই দেশের।

আরও পড়ুন: India vs Australia | World Cup 2023: তেইশে ফিরল তিরাশির লজ্জা! এই রেকর্ড দ্রুত ভুলতে চাইবেন রোহিতরা

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 

.