France vs Morocco | FIFA World Cup 2022: কাতারে কে থামাবে এই নীল ঝড়! বুক ফুলিয়ে ফের ফাইনালে ফ্রান্স
১৮ ডিসেম্বর ফাইনালে মুখোমুখি ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা
ফ্রান্স ২ (থিও ৫', মুয়ানি ৭৯')
মরক্কো ০
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মরক্কোর আরও একটা ইতিহাস লেখা হল না। 'অ্য়াটলাস লায়ন্স'দের কাপ জয়ের স্বপ্ন ভেঙে দিল সেই ফ্রান্সই। স্পেন-পর্তুগালের মতো হেভিওয়েটদের রুখে দিয়েই সারা বিশ্বের নজর কেড়েছিল মরক্কোর ফুটবল। কিন্তু বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে (France vs Morocco) ফ্রান্স ফের একবার বুঝিয়ে দিল, 'বাপ, বাপ অওর বেটা বেটা হোতা হ্য়ায়!' ফ্রান্স ২-০ গোলে মরক্কোকে উড়িয়ে ব্যাক-টু-ব্য়াক বিশ্বকাপ ফাইনালে চলে গেল! আগামী ১৮ ডিসেম্বর লুসেল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার সঙ্গে কাপযুদ্ধের টিকিট কনফার্ম করে নিল ফ্রান্স। ফ্রান্সের সামনে এখন শুধু ফাইনাল ল্যাপ। লিওনেল মেসির দলকে হারালেই রাশিয়ার পর ফের কাতারে তাদের হাতেই উঠবে কাপ।
কেমন ছিল ম্যাচের প্রথমার্ধ?
ম্যাচের পাঁচ মিনিটেই ফরাসি ডিফেন্ডার থিও হার্নান্ডেজ এগিয়ে দেন ফ্রান্সকে। যদিও এই গোলে কিন্তু কিলিয়ান এমবাপে নিজের নাম লিখিয়ে নিতেই পারতেন। ডান প্রান্ত থেকে ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারান মাপা লম্বা পাস বাড়ান আতোঁয়া গ্রিজম্যানকে। জেনুইন স্ট্রাইকার থেকে এই বিশ্বকাপে পুরোপুরি প্লেমেকারের দায়িত্ব পালন করা গ্রিজম্য়ান ক্রস বাড়ান এমবাপেকে। কিন্তু এমবাপের বক্সের মধ্যে মরক্কোর দু'জন ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে রিবাউন্ড হয়ে চলে যায় বক্সের কিছুটা বাইরে থাকা থিওর কাছে। থিও সেই বল ধরে কামাল করেন। প্রায় মাথার কাছাকাছি থাকা বলটি দুরন্ত অ্যাক্রোব্য়াটিক শটে ইয়াসিন বোনোর নাগালের বাইরে পাঠিয়ে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন। আল বায়েত স্টেডিয়ামে নীল ঝড় তুলে দেন তিনি।
আরও পড়ুন: Lionel Messi: তুমি কেমন করে খেলো হে গুণী! রেকর্ডের পর রেকর্ড এখন সবুজ ঘাসের রাজার
এই গোলের পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফ্রান্সের বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন আজ-এদিন ওউনহাই। আচমকাই উঠে এসে কোনাকুনি বুলেট শট নেন। তবে ফ্রান্সের অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ গোলকিপার হুগো লরিস ঝাঁপিয়ে পড়ে সঙ্গে সঙ্গে গোল রুখে দেন। মরক্কো প্রতি মুহূর্তেই বুঝিয়ে দিচ্ছিল যে, তাঁরা ফ্রান্সের কাঁধে নিঃশ্বাস ফেলতেই থাকবে। ৩৬ মিনিটে ফের এগিয়ে যেতে পারত ফ্রান্স। চুয়ামেনির বাড়ানো পাস থেকে এমবাপে ছ'গজ দূর থেকে গোল করে দিতে পারতেন। কিন্তু ক্লাবের বন্ধু দেশের শত্রু আশরাফ হাকিমিই রুখে দেন তাঁকে। যদিও সেই লুজ বল হার্নান্ডেজ থেকে চলে গিয়েছিল অলিভার জিরুদের কাছে। কিন্তু জিরুদ সময় এবং জায়গা পেয়েও বাঁ-পোস্টের অনেকটা বাইরে মেরে দেন। ৪৫ মিনিটে মরক্কো প্রায় শোধ করেই দিয়েছিল। জাওয়াদ এল ইয়ামিকের আগুনে শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
কেমন গেল দ্বিতীয়ার্ধ?
প্রথমার্ধের মতোই মরক্কোর দ্বিতীয়ার্ধের রক্ষণভাগও ছিল রীতিমতো আঁটোসাটো। এর মধ্যেই ফ্রান্স বেশ কয়েকবার হাকিমিদের বক্সে ঢুকে পড়ে। মরক্কোও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। জিয়েচ-ওউনহাইরা ডান প্রান্ত থেকে চকিত আক্রমণে ঢুকে পড়ছিল ফ্রান্সের বক্সে। তবে এই ম্যাচে ফ্রান্সের অধিনায়ক ও গোলরক্ষক হুগো কিন্তু বারবার বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন যে, কেন তাঁর দস্তানা জোড়া বিশ্বাসের প্রতীক। একাধিক দুরন্ত সেভ করে তিনি বহু অঘটন বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে ফ্রান্স কার্যত বুঝিয়ে দেয় কেন তারা বিশ্বচ্য়াম্পিয়ন। কোলো মুয়ানি দুরন্ত গোল করে ফ্রান্সকে ব্য়াক-টু-ব্যাক বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে দেন। যদিও এই গোলের নেপথ্যে সেই এমবাপে। বক্সের মধ্যে ঢুকে ট্যুইস্ট এবং টার্ন করে মুয়ানিকে ফ্রান্সের জার্সিতে প্রথম আন্তর্জাতিক গোলের স্বাদ পাইয়ে দেন। তাও আবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। তবে এই মরক্কো কিন্তু বুক ফুলিয়েই দেশে ফিরবে। তারা গর্ব করার মতোই ফুটবল খেলেছে গোটা টুর্নামেন্টে। এদিন হাকিমিরা সবই করলেন, শুধু গোলের দেখাটাই পেলেন না। যদি গোলটা এসে যেত, তাহলে ম্য়াচের রং অন্যরকম হতে পারত।