সরফরাজকে ক্ষমা করে দিয়েছি: ফাফ দু প্লেসিস
নিজের বক্তব্যের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন সরফরাজ, সেই কারণেই ‘তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছি’, মন্তব্য ফাফ দু প্লেসিসের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ‘ দুর্বল মানুষ ক্ষমা করতে পারে না। ক্ষমা প্রদর্শন সাহসী মানুষের গুণ’। মহাত্মার এই মাহাত্মই যেন ঝড়ে পড়ল প্রোটিয়ো অধিনায়কের গলায়। সংহারের পাল্টা সংহার নয়, বরং শান্তিই প্রগতির পথ-বুঝিয়ে দিলেন ফাফ দু প্লেসিস। সরফরাজ আহমেদের বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য নিয়ে কোনও রকম ক্ষোভ নেই। নেই কোনও রাগও। উল্টে ক্ষমা প্রদর্শন করে সিংহ হৃদয়ের পরিচয় দিলেন দু প্লেসিস। নিজের বক্তব্যের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন সরফরাজ, সেই কারণেই ‘তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছি’, মন্তব্য ফাফ দু প্লেসিসের।
আরও পড়ুন- হার্দিক ও রাহুলের উপর থেকে নির্বাসন তুলে নিল বিসিসিআই
ডারবানে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে আফ্রিকান অলরাউন্ডার আন্দিলে ফেহলুকায়োকে ‘কালো’ বলে কটূক্তি করেছিলেন পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। শুধু তাই নয়, ক্যামেরায় এও ধরা পড়েছে, যেখানে ফেহলুকায়োকে উদ্দেশ্য করে সরফরাজ আহমেদ বলছেন, “তোর মা আজ কোথায় বসে আছে, তোর জন্য কী প্রার্থনা করেছে আজ?” তাঁর এই মন্তব্যে প্রবল বিতর্কের শুরু হয়। সরফরাজের সমালোচনায় মুখর হয় গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। সেই পরিস্থিতিতে কোনও পথ না পেয়ে শেষে নিঃশর্ত ক্ষমা চান পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। হতাশা থেকেই এমন মন্তব্য করে ফেলেছেন, টুইটে ক্ষমা চেয়ে লিখেছিলেন ইমরানের দেশের ক্রিকেট অধিনায়ক।
আরও পড়ুন- নির্বাসন উঠতেই দলে ফিরলেন হার্দিক, রাহুলকে সুযোগ ‘ভারতীয় এ’ দলে
তবে এই ইস্যুতে এখনই দাঁড়ি পড়ছে না। আইসিসি-র সংবিধান অনুযায়ী বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দক্ষিণ আফ্রিকা সরফরাজকে ক্ষমা করে দিলেও তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। ওয়াকিফহাল মহল মনে করছে, এই ধরনের অপরাধে কাটা যেতে পারে ম্যাচ ফি, এমনকি কয়েক ম্যাচের জন্য ব্যানও করা হতে পারে সরফরাজের। উল্লেখ্য, এই ধরনের অপরাধের সাজা হিসেবে এক বছর কিংবা আজীবন নির্বাসনেরও নিদান রয়েছে ক্রিকেট কোড অব কনডাক্টে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালে এই দক্ষিণ আফ্রিকাই ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হয়েছিল তাঁদের বর্ণবাদের জন্য। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও নিউ জিল্যান্ডের ছাড়া সব ক্রিকেট খেলিয়ে দেশকে বয়কট করা এবং দলে স্রেফ শ্বেতাঙ্গ ক্রিকেটারদের সামিল করা, প্রোটিয়ো বোর্ডের এই নীতির বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেয় আইসিসি। ২১ বছর পর্যন্ত কোনও ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেনি তাঁরা। যার ফলে গ্রেম পোলক, ব্যারি রিচার্ডদের মতো ক্রিকেটারদের কেরিয়ার শেষ হয়ে যায় অচিরেই। দুই দশক পর, ১৯৯১ সালে ইডেনে ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে সেই শাপমোচন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। আলি বাখারের হাত ধরেই ক্রিকেট সার্কিটে ফিরতে পেরেছে তাঁরা। সেই দেশেই এমন বর্ণবিদ্বেষী ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই একটি স্পর্শকাতর বিষয়। সেখানে প্রোটিয়ো অধিনায়ক যেভাবে গোটা বিষয়টিকে দেখলেন এবং ক্ষমা প্রদর্শন করলেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।