ওঝা ভূত তাড়িয়ে নিশ্চিত হারের মুখে দাঁড়িয়ে কুকরা লড়ছেন

একই দিনে আত্মসমর্পণ আর প্রতিরোধের এক কাহিনির সাক্ষী থাকল মোতেরা। মাত্র ‍১৯১ রানে অলআউট হওয়ার পর ফলো অন হজম করে যেভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার আলিস্টার কুক-নিক কম্পটন তাতে সবাই অবাক। এই ইংল্যান্ডই তো একই পিচে প্রথম ইনিংসে একেবারে ইদুঁর হয়ে গেছিল‌! তারাই এখন নিশ্চিত হারের সামনে দাঁড়িয়ে রানের পাহাড় কাঁধে নিয়ে কী দারুণ লড়াই চালাল তা সত্যিই দেখার। অনেকেই আছেন যারা বলেন ক্রিকেটের আসল ভাগ্যবিধাতা পিচ। আবার কেউ কেউ বলেন পিচ আসলে সেটাই যেটাকে তুমি ভূত মনে করলে গলা টিপে ধরবে, আর ভগবান মনে করে পুজো করে সময় কাটালে তোমার সহায় হবে। প্রথম ইনিংসে বেল-পিটারসেনদের ঘূর্ণি পিচের ভূত দেখেছিলেন, তাই শট নির্বাচনে ভুল করে বসেছিলেন।

Updated By: Nov 17, 2012, 05:51 PM IST

প্রথম ইনিংস: ভারত- ৫২১/৮ ।। ইংল্যান্ড-১৯১/১০
দ্বিতীয় ইনিংস: ইংল্যান্ড-১৯১ ।। ১১১/০( অ্যালেস্টার কুক-৭৪ অপ। নিক কম্পটন-৩৪ অপ)
একই দিনে আত্মসমর্পণ আর প্রতিরোধের এক কাহিনির সাক্ষী থাকল মোতেরা। মাত্র ‍১৯১ রানে অলআউট হওয়ার পর ফলো অন হজম করে যেভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার আলিস্টার কুক-নিক কম্পটন তাতে সবাই অবাক। এই ইংল্যান্ডই তো একই পিচে প্রথম ইনিংসে একেবারে ইদুঁর হয়ে গেছিল‌! তারাই এখন নিশ্চিত হারের সামনে দাঁড়িয়ে রানের পাহাড় কাঁধে নিয়ে কী দারুণ লড়াই চালাল তা সত্যিই দেখার। ক্রিকেট গবেষকরা বলেন, ক্রিকেটের আসল ভাগ্যবিধাতা হল পিচ। আবার ঝানু ব্যাটসম্যানরা বলেন, পিচ আসলে সেটাই যেটাকে তুমি ভূত মনে করলে গলা টিপে ধরবে, আর ভগবান মনে করে পুজো করে সময় কাটালে তোমার সহায় হবে। প্রথম ইনিংসে বেল-পিটারসেনদের ঘূর্ণি পিচের ভূত দেখেছিলেন, তাই শট নির্বাচনে ভুল করে বসেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে হল উল্টো। কুক- কম্পটনরা পিচকে ভয় না পেয়ে শ্রদ্ধা করলেন। ওঝা, অশ্বিনদের ভয় না পেয়ে বলের লেন্থ বুঝে খেলার চেষ্টা করলেন। ফলাফল দিনের শুরুতে যে দলকে নিয়ে মোতেরাতে ঠাট্টা শুনতে হচ্ছিল, তারাই হাততালি কুড়োলেন।
৩৩০ রানে পিছিয়ে থেকে ফলো অন হজম করে ব্যাট করতে নেমে এত সুন্দর শুরু শেষ কবে দেখা গেছে তা নিয়েও কথা উঠলো। কিন্তু এরপরেও বলতে হচ্ছে জয়ের ডঙ্কাটা আজই বাজিয়ে দিলেন অশ্বিন-ওঝারা। বদলার সিরিজের শুরুটা পিকচার পারফেক্ট যদি নাও হয় মনে হয় না ধোনিদের জয় হাতছাড়া হবে।
গতকাল দিনের শেষে স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৪০ রান। সেখান থেকে কালকের নড়বড়ে ভিতের ধারা অব্যাহত রেখে আজকেও ভারতীয় বোলিং-এর কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করছেন কুক বাহিনী। লাঞ্চের আগেই সাতটি উইকেট খুইয়ে মোটামুটি ভেন্টিলেশনে চলে গেছে ইংল্যান্ড দল। বাকিরা তো কোন ছার টিম ইন্ডিয়ার স্পিনিং যুগলের কাছে রীতিমত খোঁড়াচ্ছিলেন কেপি আর কুকের মত মহারথীরাও। শুরুতে প্রজ্ঞান ওঝার প্রথম বলে পিটারসনের ক্যাচ মিস করেন ধোনি। ওঝা ও অশ্বিন এই পিচে ঘোল খাওয়াবে এটা আশা করা গিয়েছিল প্রথম থেকেই। একদিকে অশ্বিন আর অন্যদিকে ওঝা। অনেকবার সুযোগ দেবার পর ওঝার বলেই ক্লিন বোল্ড হলেন পিটারসেন। তখন তাঁর রান ১৭। মাত্র দুটো বাউন্ডারির বিনিময়ে। পরের বলেই আউট ইয়ান বেল। ক্যাচ নিলেন তেন্ডুলকার। কিন্তু হ্যাটট্রিকটা হল না ওঝার।
বাকিটা হল যেমনটা ধোনি চেয়েছিলেন সেই ঢঙেই। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ১৯১ রানে। লড়লেন শুধু ম্যাট প্রায়র (৪৮)। প্রকৃতপক্ষে ভারতের ঝোড়ো বোলিং আক্রমণের কাছে খড়কুটোর মতোই উড়ে যায় ইংরেজদের সমস্ত প্রতিরোধ। গতকাল শেষ দুঘণ্টায় ৩ উইকেট, আজ লাঞ্চের আগে ৭ উইকেট- তারপর সব শেষ। অনবদ্য প্রজ্ঞান ওঝা। একাই ৫ উইকেট নিলেন। আর এক স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনও দুর্দান্ত বল করলেন। মাত্র ৮০ রান দিয়ে ছিনিয়ে নিলেন বিপক্ষের ৩টে উইকেট। তার মধ্যে একটি অধিনায়ক কুকের। এমন বিধ্বস্ত পিচে টিকে থাকার আপ্রান চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্য ( আর মোতেরার পিচও) সহায় হল না তাঁর। অশ্বিনের অফস্ট্যাম্পে পরা বলটি ইংল্যান্ড অধিনায়কের ব্যাটের কিনারা ছুঁইয়ে চলে যায় সহবাগের হাতে। ৪১ রানে তাঁকে বিদায় নিতে হয়। প্রথম টেস্ট থেকেই টিম ইন্ডিয়ার সদস্যরা যেভাবে নিজেকে উজার করে দিচ্ছেন তাতে চার টেস্টের এই সিরিজ যে আসলে সত্যিই বদলার হতে চলেছে সে বিষয়ে বোধহয় সন্দেহর কোন অবকাশ নেই।

.