East Bengal, Carles Cuadrat: মধ্যরাতে শহরে পা দিয়ে লাল-হলুদ আবেগ টের পেলেন কার্লোস কুয়াদ্রাত, ট্রফির খরা মিটবে?
সোমবার শহরে আসবেন প্রিয় দলের কোচ, সে কথা জানতে পেরে রবিবার রাত থেকেই দমদম বিমানবন্দরে ভিড় জমান বহু লাল-হলুদ সমর্থক। দলের নতুন কোচের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে বিমানবন্দর চত্বর ভরিয়ে তোলেন তাঁরা। স্প্যানিশ কোচ পৌঁছনো মাত্র হাততালি আর গানবাজনায় তাঁকে স্বাগত জানায় লাল হলুদ ফ্যান ব্রিগেড। পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনাও জানানো হয় কুয়াদ্রাতকে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ১৩ বছর আই লিগ (I League) অধরা। সেই জ্বালা কাটিয়ে আইএসএল-এ (ISL) পা রেখেছিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। তবে তিন মরসুম কেটে গেলেও দেশের সর্বোচ্চ লিগে লাল-হলুদের পারফরম্যান্স খুবই খারাপ। তবুও সমর্থকদের দেখলে সেটা বোঝার উপায় নেই। আর সেটা বোঝার উপায় নেই বলেই ঘুম উপেক্ষা করে মাঝরাতে নতুন কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাতের (Carles Cuadrat) জন্য দেখা গেল আবেগের মহা বিস্ফোরণ। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাল-হলুদ আবির উড়িয়ে নতুন স্প্যানিশ কোচ ও তাঁর সাপোর্ট স্টাফদের বরণ করে নিল অগণিত সমর্থকরা। একটা সময় বার্সেলোনা (Barcelona FC) ও বেঙ্গালুরু এফসি-তে (Bengaluru FC) কাটিয়ে আসা কোচের কাছে সমর্থকদের একটাই আবদার। ক্লাবে যেন সর্ব ভারতীয় ট্রফির খরা দ্রুত কেটে যায়।
সোমবার শহরে আসবেন প্রিয় দলের কোচ, সে কথা জানতে পেরে রবিবার রাত থেকেই দমদম বিমানবন্দরে ভিড় জমান বহু লাল-হলুদ সমর্থক। দলের নতুন কোচের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে বিমানবন্দর চত্বর ভরিয়ে তোলেন তাঁরা। স্প্যানিশ কোচ পৌঁছনো মাত্র হাততালি আর গানবাজনায় তাঁকে স্বাগত জানায় লাল হলুদ ফ্যান ব্রিগেড। পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনাও জানানো হয় কুয়াদ্রাতকে। গলায় পরিয়ে দেওয়া হয় লাল-হলুদ উত্তরীয়। কুয়াদ্রাতের সঙ্গে কলকাতায় চলে এসেছেন লাল হলুদের সহকারী কোচ দিমাস ডেলগাডো (Dimas Delgado)। এবং ক্রীড়া বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট মার্টিনেজ (Albert Martinez)।
নতুন কোচকে দেখতে পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত লাল হলুদ সমর্থকরা। বহুদিন ধরেই সাফল্যের মুখ দেখেনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। কিন্তু নতুন কোচের হাত ধরেই ট্রফির খরা কাটবে বলে আশাবাদী ভক্তরা। সমর্থকদের কারও মতে, কোচ সাফল্য এনে দিন, তাহলে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে লাল হলুদ ভক্তরা। কুয়াদ্রাতের হাত ধরেই লাল হলুদে নতুন যুগ শুরু হতে চলেছে, সেই স্বপ্নেই বিভোর ভক্তকুল।
ক্লাবের নতুন কোচ শহরে পা রাখার দিনেই মাঠে নামবে ইস্টবেঙ্গল। কলকাতা লিগে বিএসএসের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে তারা। তবে সেই ম্যাচ দেখতে যাবেন না কুয়াদ্রাত। জানা গিয়েছে, সিনিয়র দলের বেশ কয়েকজন ফুটবলারকেই সোমবারের ম্যাচে খেলতে দেখা যেতে পারে। কারণ ডুরান্ড কাপের আগে তাঁদের ম্যাচ প্র্যাক্টিসের দরকার বলেই মনে করছেন লাল-হলুদের নতুন কোচ।
ভারতে কোচিং করানোর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে ৫৪ বছর বয়সী কুয়াদ্রাতের। ২০১৬-১৮ পর্যন্ত কুয়াদ্রাত বেঙ্গালুরু এফসি-র সহকারী কোচের পদে ছিলেন। সেই সময় বেঙ্গালুরুকে ফেডারেশন কাপ এবং প্রথম সুপার কাপ জিততে সাহায্য করেন। একই সময় বেঙ্গালুরু এফসি প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে এএফসি কাপের ফাইনালে উঠেছিল। এরপর ২০১৮ সালে হেড কোচ হিসেবে বেঙ্গালুরু এফসি-র দায়িত্ব নেন কুয়াদ্রাত। প্রথম মরসুমেই (২০১৮-১৯) দলকে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন করেন তিনি। পরের বছর তাঁর প্রশিক্ষণে থাকা বেঙ্গালুরুর দল ফের প্লে-অফে ওঠে। ভারতে কোচিং করতে এসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাফল্য পেয়েছেন। ভারতে সাফল্য পাওয়ার পর তিনি সাইপ্রাস ও ডেনমার্কের দুই ক্লাবে সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেন। ফুটবল জীবনে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৮ ডিফেন্ডার হিসেবে এফসি বার্সেলোনার সবকটি যুব দলের হয়ে খেলেছেন কুয়াদ্রাত। ১৯৮৬ ও ১৯৮৭-তে বার্সেলোনা এফসি-র অনূর্ধ্ব ১৯ দল স্প্যাানিশ কাপ জিতেছিল, সেই দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়াও স্পেনের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে ১৯৮৫ সালের উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও দলকে তৃতীয় স্থানে থাকতে সাহায্য করেছিলেন।
অন্য দলগুলোর কোচদের থেকে অনেক পরে শহরে এসেছেন। তবে লাল-হলুদের বিদেশি ফুটবলারদের মধ্যে কেউ আসেননি। অন্যদিকে জুয়ান ফেরান্দো ও আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের তত্বাবধানে মোহনবাগান শুরু করে দিয়েছে পুরোদমে অনুশীলন। ক্লোজড ডোর অনুশীলন করছে সবুজ-মেরুন বাহিনী। গত কয়েক বছর ডার্বি যুদ্ধে লাল-হলুদকে টেক্কা দিয়েছে মোহনবাগান। এবার কি নতুন কোচের জমানায় চাকা ঘুরবে?