East Bengal: কে নেভাবে এই লাল-হলুদ মশাল! অবিশ্বাস্য প্রত্য়াবর্তনে ইস্টবেঙ্গল ডুরান্ড ফাইনালে

 East Bengal Beats NorthEast United To Enter Durand Cup 2023 Final: ডুরান্ড কাপের ফাইনালে চলে গেল ইস্টবেঙ্গল।  

Updated By: Aug 29, 2023, 10:44 PM IST
East Bengal: কে নেভাবে এই লাল-হলুদ মশাল! অবিশ্বাস্য প্রত্য়াবর্তনে ইস্টবেঙ্গল ডুরান্ড ফাইনালে
সৌজন্য়ে: ইমামি ইস্টবেঙ্গল

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সাল ২০১৯। গোকুলাম কেরালার কাছে হেরে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) বিদায় নিয়েছিল ডুরান্ড কাপ থেকে। সেবার টাইব্রেকার পর্যন্ত লড়াই গড়িয়েছিল। ১৩২ তম ডুরান্ড কাপের (Durand Cup 2023) প্রথম সেমিফাইনালের ফয়সলাও হল পেনাল্টি শ্যুটআউটে। তবে এবার ঘুরে গেল ভাগ্যের চাকা। চলতি ডুরান্ডের অপরাজেয় নর্থইস্টকে (NorthEast United vs East Bengal) টাইব্রেকারে ৫-৩ হারিয়ে ইস্টবেঙ্গল চলে গেল ডুরান্ড ফাইনালে! মঙ্গলবার যুবভারতীতে কার্লেস কুয়াদ্রাতের শিষ্য়রা অবিশ্বাস্য প্রত্য়াবর্তন করে জ্বালিয়ে রাখলেন লাল-হলুদ মশাল। এই নিয়ে ১৭ বার ডুরান্ড ফাইনাল খেলবে ইস্টবেঙ্গল। আগামী বৃহস্পতিবার যদি মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট (Mohun Bagan SG vs FC Goa) যুবভারতীতে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে এফসি গোয়াকে হারিয়ে দিতে পারে, তাহলেই ফের আসবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। তাহলে বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা ফের একবার ডার্বির উত্তেজনায় মাতবেন। আগামী রবিবার তাহলে কাপযুদ্ধের ফাইনালই হবে বড় ম্য়াচ। সেক্ষেত্রে ১৯ বছর পর ফের ডুরান্ড ফাইনালে কলকাতা ডার্বি হবে। ইস্ট-মোহন ১৬ বার করে ডুরান্ড জিতেছে। ২০০৪ সালে শেষবার ডুরান্ড জিতেছিল লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাব। চন্দন দাসের জোড়া গোলেই লাল-হলুদ ২-১ সবুজ মেরুনকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল।

আরও পড়ুন: Mohun Bagan Super Giant: অবশেষে 'অপরাজেয়' মুম্বই বধ! ইতিহাস বদলে ভাগ্যের চাকা ঘুরল, সেমিফাইনালে মেরিনার্স
 

এদিন প্রথমার্ধের ১৫ মিনিটে খেলাটা মাঝমাঠেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু তার সাত মিনিট পরেই বিপদ ঘটে যায় সেই ভয়ংকর  কনসাম ফাল্গুনী সিংয়ের সৌজন্যে। ২২ মিনিটে নর্থইস্টকে এগিয়ে দেন মিগুয়েল জাবাকো তোম। স্প্যানিশ সেন্টার ব্যাককে এই গোলটি তৈরি করে দেন ফাল্গুনী। কর্নার ক্লিয়ার করার পর বাঁ-উইং থেকে বাঁকানো ক্রস বাড়ান তিনি। গোটা টুর্নামেন্টেই ভালো ফুটবলে নজর কেড়েছেন মণিপুরের বছর আঠাশের মিডফিল্ডার। শূন্যে শরীর ভাসিয়ে দিয়ে জাবাকো অসাধারণ হেড করেন দ্বিতীয় পোস্ট লক্ষ্য করে। ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখান গিল ডাইভ দিয়ে জাবাকোর হেড রুখতে পারেননি। এক গোলে এগিয়ে যাওয়া নর্থইস্ট কিন্তু বিরতির আগে পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলকে সেভাবে বল পজেশন নিতে দেয়নি। ইস্টবেঙ্গল না পেরেছে গোলের মুখ খুলতে, না কোনও পজিটিভ আক্রমণ করেছে। ফিফটি-ফিফটি সুযোগগুলিকেও কুয়াদ্রাতের শিষ্যরা কাজে লাগাতে পারেনি। এককথায় ইস্টবেঙ্গলের খেলাটাই হারিয়ে গিয়েছিল। নর্থইস্টের লড়াই চোখে লেগে ছিল। 

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কুয়াদ্রাত জোড়া পরিবর্তন করেন। সৌভিক চক্রবর্তী নামেন নিশু কুমারের পরিবর্তে। বোরহা হেরেরা নাম পারদোর লুকাসের পরিবর্তে। তবে আক্রণমের ঝাঁজে কোথাও যেন খামতি ছিল। আর এই সুযোগেই ৫৭ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় নর্থইস্ট। কিছুক্ষণ আগে অসাধারণ গোলের সুযোগ তৈরি করা সেই ফাল্গুনী এবার স্কোরশিটে নাম লেখালেন। বাঁ-পায়ের জোরাল শটে তিনি স্কোরলাইন ২-০ করে দেন। দুই গোলে পিছিয়ে পড়া ইস্টবেঙ্গল মরিয়া লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল গোলে ফেরার। ৭৭ মিনিটে এক গোল শোধ করে লাল-হলুদ। ক্রেসপো দুরন্ত দৌড়ে বক্সে বল বাড়ান মহেশকে। মহেশের গোলমুখী শট নর্থইস্টের দীনেশের পায়ে লেগে ডিফ্লেক্টেড হয়ে গোলে ঢুকে যায়। ইস্টবেঙ্গল দ্বিতীয় গোলের জন্য় অলআউট ঝাঁপাতে শুরু করে দেয়। কুয়াদ্রাতের শিষ্যরা গিয়ার বদলে ফেলে ফিফথ গিয়ারে ছুটতে থাকে। কিন্তু ছুটলে কীহবে, নির্ধারিত খেলার সময়ে তখন শেষ হয়ে যায়। তবে ফুটবল বিধাতা যেন ইস্টবেঙ্গলের জন্যই মঞ্চ সাজিয়ে দিয়েছিলেন। আট মিনিট ইনজুরি টাইম যোগ করেন রেফারি। ৯৬ মিনিটে নর্থইস্ট হয়ে যায় ১০ জনের। জোড়া হলুদ কার্ড দেখায় জাবাকোকে ছাড়তে হয় মাঠ। আর এরপরেই আসে সেই অবিশ্বাস্য় মুহূর্ত। নন্দকুমার সব হিসেব বদলে দেন।ডানপ্রান্ত ধরে ছুটে তিনি প্রথমে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু মিরশাদ সেই  শট সেভ করে দেন। তবে ফিরতি বল ধরে ক্লেটন বাঁ-দিক থেকে ক্রস বাড়ান নন্দকে। ডার্বির নায়ক মাথা ছুঁইয়ে মিরশাদকে পরাস্ত করে ম্যাচ ২-২ করে দেন। বদলে দেন পুরো ম্যাচের রঙ।

এর সঙ্গেই লাল-হলুদ সমর্থকরা নেমে পড়েন দ্বাদশ ব্য়ক্তির ভূমিকায়। ইস্টবেঙ্গলের নামে প্রবল জয়ধ্বনি দিতে থাকেন তাঁরা। খেলা এরপর গড়ায় টাইব্রেকারে। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ক্লেটন, ক্রেসপো, বোরহা, মহেশ ও নন্দ গোল করেন। নর্থইস্টের পার্তিবের প্রথম শট বাতিল হওয়ায় রিটেক হয়। কিন্তু তাতেও তিনি শট মেরে বসেন বারে। আর এই শটই ইস্টবেঙ্গলকে অক্সিজেন দিয়ে দেয়। এরপর মহেশ গোল করেন। তারপর নর্থইস্টের প্রজ্ঞা গোল করেন। নন্দ নেন পঞ্চম শট। আর এই গোলেই ইস্টবেঙ্গল চলে যায় ফাইনালে। খোঁচা খাওয়া বাঘের মতো খেলে ইস্টবেঙ্গল আবার দেখিয়ে দিল যে, পিছিয়ে থেকেও ফিরে আসা এবং জেতার নাম ইস্টবেঙ্গল।

আরও পড়ুন: Mohun Bagan Super Giant: ঘোষিত এএফসি কাপের সূচি, যুবভারতীতে কবে কবে খেলবে মেরিনার্স? রইল সব তথ্য

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

 

.