'চাকদহ এক্সপ্রেস'-কে দেখতে বিমানবন্দরে উপচে পড়ল ভিড়
রবিবার ইংল্যান্ডের লর্ডসে খেলে ফেলেছেন তাঁর শেষ ম্যাচ। ২০ বছরের বর্ণময় কেরিয়ার শেষে অবশেষে কলকাতায় ফিরলেন তিনি। আর তাঁকে স্বাগত জানাতে ভিড় কলকাতা বিমানবন্দরে। বিমাবন্দরে ঝুলানকে বরণ করতে হাজির অনুর্ধ্ব ১৫ দলের ক্রিকেটাররা। উপস্থিত ছিলেন সিএবি-র কর্মকর্তা এবং প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার এবং তাঁর প্রাক্তন সতীর্থরা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: লর্ডসকে রাঙিয়ে দিয়ে দেবীপক্ষের দিন ধরেছিলেন বিমান। আশা করা গিয়েছিল বঙ্গতনয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দরে ভিড় উপচে পড়বে। হলও তাই। এই মুহুর্তে বঙ্গ ক্রিকেটের সবথেকে বড় আইকনকে সম্মান জানাতে, একবার চর্মচক্ষে দেখতে সোমবারের বিমানবন্দরে কাতারে কাতারে ভিড়। কর্মব্যাস্ত সোমবার কাজকর্ম শিকেয় তুলে ঝুলনের জন্যই অপেক্ষা করছিল। গতকাল বিকেলের দিকে লন্ডন থেকে দুবাইয়ের বিমানে ওঠেন তিনি। সোমবার সকালে পৌঁছালেন কলকাতা।
রবিবার ইংল্যান্ডের লর্ডসে খেলে ফেলেছেন তাঁর শেষ ম্যাচ। ২০ বছরের বর্ণময় কেরিয়ার শেষে অবশেষে কলকাতায় ফিরলেন তিনি। আর তাঁকে স্বাগত জানাতে ভিড় কলকাতা বিমানবন্দরে। বিমাবন্দরে ঝুলানকে বরণ করতে হাজির অনুর্ধ্ব ১৫ দলের ক্রিকেটাররা। উপস্থিত ছিলেন সিএবি-র কর্মকর্তা এবং প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার এবং তাঁর প্রাক্তন সতীর্থরা।
সিএবি-র প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া জানিয়েছেন ঝুলন গোস্বামীকে নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে সিএবি-র। সেই কারণেই বিশেষ স্ক্রিনিং করা হয়েছিল সেই কথাও জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন ওনার নামে ইডেনে যাতে স্ট্যান্ড হয় সেই নিয়ে চিঠি লেখা হবে। একইসঙ্গে ‘চাকদহ একপ্রেস’-এর জন্য একটি সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সিএবি-র বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে একটি বিশেষ সেগমেন্ট করার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া। এছাড়াও বাংলার দলের মেন্টর হিসেবেও এবার তাঁকে পাকাপাকি দেখা যাবে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। মেন্টরের পাশাপাশি যাতে ঝুলন গোস্বামী বাংলার হয়ে টি২০ খেলেন সেই দিকেও নজর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অভিষেক ডালমিয়া।
বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে ঝুলন বলেন, ‘যেকোনও ক্রীড়াবিদকেই একসময় তাঁর কেরিয়ার শেষ করতে হবে। সেটা লর্ডস হোক অথবা পৃথিবীর অন্য প্রান্ত হতে পারে। আমি ফরচুনেট ছিলাম এবং বিসিসিআই এবং সিএবি-র সভাপতি এবং সেক্রেটারি সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা আমায় সাপোর্ট করেছেন। তাঁরা আমাকে শেষ পর্যন্ত মোটিভেট করেছেন’।
একদিনের আন্তর্জাতিকে ‘চাকদহ একপ্রেস’-এর শিকার ২৫৫। কিন্তু গত বছর এই লর্ডসের মাঠেই বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে বিদায় নেয় ভারতীয় দল। সেই লর্ডসেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ঝুলন গোস্বামী। সেই প্রসঙ্গে জি ২৪ ঘণ্টাকে তিনি জানিয়েছেন, ‘বিশ্বকাপ ফাইনালের সঙ্গে কোনও ম্যাচের তুলনা হয় না। কারণ আবার বলছি ওটা বিশ্বকাপ ফাইনাল। আর এটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। তবে এটা ভেবে ভাল লাগছে যে আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শেষ ম্যাচে জয়ী দলের সদস্য হয়ে থাকতে পারলাম। এবং এমন একটা দলকে হারালাম যার নাম ইংল্যান্ড। ব্রিটিশদের ঘরের মাঠে ওদের চুনকাম করার মজা আলাদা। এটা অবশ্যই বড় প্রাপ্তি। সেই জয় লর্ডসে হলে তো প্রাপ্তি অনেকটা বেড়ে যায়। তবে সুখ বলে কিছু হয় না। কারণ বিশ্বকাপ ফাইনালের সঙ্গে আর কোনও প্রতিযোগিতার তুলনা চলে না’।
আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে মোট ৩৫৫ উইকেটের মালিক জি ২৪ ঘণ্টাকে লন্ডন থেকে জানিয়েছিলেন, ‘আমি সত্যি ভাগ্যবান। ২০ বছর ধরে দেশকে সেবা করার পর এমন সম্মান পেয়ে আমি আপ্লুত। হরমন, স্মৃতিরা আমাকে কাঁধে তুলে গোটা লর্ডস ঘোরার সময় মনের অবস্থা কেমন ছিল ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে আমার ক্রিকেটীয় বিদায় এত সুখের হবে। কেউ এত ভেবে তো বছরের পর বছর ধরে ছুটে যেতে পারে না। হ্যাঁ একটা স্বপ্ন মানুষ দেখতেই পারে। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু পরিশ্রম করলেই যে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যে এমন গ্যারান্টি তো কেউ দেয়নি। তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে না ভেবে নিজের প্যাশন বজায় রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজের কাজ করে যাওয়া। গত ২০-২৫ বছর ধরে আমি এই নীতি নিয়েই ক্রিকেট খেলে গিয়েছি’।