Women Safety:আইন নামেই! ভারতের কর্মক্ষেত্রে পুরুষ যৌনশিকারিদের দাপটে নাজেহাল মেয়েরা...
Women Safety: অনেক সংঘাত আর আন্দোলনের রাস্তা পেরিয়ে তৈরি হয়েছিল বিশাখা কমিশন। তবুও, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ঘটনা ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক আরও একটি ঘটনা ঘটেছে যা তাক লাগিয়ে দিতে পারে। জেনে নিন দিল্লির এই ঘটনা...
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা কঠিন বাস্তব। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক আরও একটি ঘটনা ঘটেছে যা তাক লাগিয়ে দিতে পারে। সাধনা, দিল্লির একজন সরকারি কর্মচারী। ২০১৯ সালে একজন পুরুষ সহকর্মীর দ্বারা যৌন নিপীড়নের পরে অফিসে ফিরতে ভয় পেয়েছিলেন তিনি। বেনামী থাকতে চেয়েও পরে সাহস সঞ্চেয় করেন। এবং পরে সেই ঘটনার বিরুদ্ধে ব়ুখে দাঁড়িয়ে অফিসেরই অভ্যন্তরীন নজরদারি কমিটির কাছে (ICC) অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও পড়ুন, Human sacrifice: ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন, তান্ত্রিকের পরামর্শে নিজের আত্মীয়র গলাতেই ছুরি চালাল যুবক
অফিসের সব কর্মীর মধ্য়ে একমাত্র মহিলা ছিলেন সাধনা। তিনি তাঁর একটি বয়ানে জানিয়েছেন যে, অফিসে পুরুষ কর্মীদের সঙ্গে কাজ করাটা তাঁর জন্য় কঠিন বলে মনে হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে হওয়া ঘটনার বিরুদ্ধে করা অভিযোগে কোনও সাড়া না পেয়ে, ২০২০ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। অন্য়দিকে অভিযুক্ত নিগ্রহকারীর জায়গা কিন্তু মোটেই পরিবর্তিত হয়নি। সে বহাল তবিয়তে ওই অফিসেই কাজ করছে। সাধনার কথা অনুযায়ী, 'অভিযোগ দায়ের করার পর, আমার বসকে ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রমাণের অভাবে এবং সাক্ষী থাকা সত্ত্বেও লোকজন জবানবন্দি দিতে পিছিয়ে থাকার কারণে আমার মামলা দুর্বল হয়ে পড়েছে। যেহেতু বিষয়টিকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য কোনও প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি, তাই মামলাটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।'
তিনি তাঁর সঙ্গে ঘটা অবিচারের সবিস্তার বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁর দাবি, 'আমাকে সদর দফতরে তলব করা হয়েছিল। সেখানে একজন সিনিয়র সর্বোচ্চ আধিকারিক, যিনি একজন মহিলাও-- আমাকে আমার অভিযোগটি নিয়ে ভাবতে বলেছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, বেশিরভাগ লোকেরা ইতোমধ্যেই তোমার পিছনে কথা বলা শুরু করেছে। এই অভিযোগ নথিভুক্ত করলে তাতে লাভ তো হবেই না বরং তোমার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবে।
সাধনার অভিজ্ঞতা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। একইরকম হয়রানির শিকার হাজার হাজার মহিলা। বিভিন্ন সমীক্ষার রিপোর্ট ঘাঁটলেই বোঝা যায়, ভারতের মতো দেশে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আদতে সোনার পাথরবাটির মতোই বিষয়। অনেক সংঘাত আর আন্দোলনের রাস্তা পেরিয়ে তৈরি হয়েছিল বিশাখা কমিশন। করপোরেট দুনিয়ায় আসে POSH... Prevention of Sexual Harassment in Work Place! তো? তাতে কি আদৌ ভারতীয় পুরুষের চরিত্র বদলেছে? সহজ উত্তর, না। এখনও বহু নারী রোজ কার্যক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিভিন্ন রিপোর্ট বলে যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ মহিলারা এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ৫৫.২ শতাংশ মহিলা অভিযোগ দায়ের না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাছাড়া এটাও দেখা গেছে যে বেশিরভাগ সময় ২২ থেকে ২৫ বছর বয়সী নারীরা এমন ঘটনার মুখোমুখি হন।
একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে 'সংগঠনগুলির সম্মতির অভাব রয়েছে, যার বেশিরভাগই কমিটির সিদ্ধান্তগুলি মেনে চলতে ব্যর্থ হয়। কিছু ক্ষেত্রে, এমনকী কমিটির সদস্যরাও পর্যাপ্ত ভাবে তদন্ত পরিচালনার প্রক্রিয়া বুঝতে ব্যর্থ হন। এমনকী এমন পরিস্থিতিতে যেখানে কমিটি আইনত তাদের দায়িত্ব পালন করেছে, তাদের প্রতিবেদনের ফলাফল অজানা থেকে যায় যদি না কোনও স্থগিতাদেশ বা স্থানান্তর না হয়'। এসবেরই সম্মিলিত ফল হিসেবে, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ঘটনা ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।