যোগীর রাজ্যে মহিষ চুরির সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান গণধোলইয়ের ঘটনায় মোদী সরকারকে চেপে ধরেছে বিরোধীরা।
![যোগীর রাজ্যে মহিষ চুরির সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা যোগীর রাজ্যে মহিষ চুরির সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2018/08/30/138397-capture.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদন: দুবাই থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন ২২ বছরের যুবক শাহরুখ খান। ওই যুবককে মহিষ চুরির সন্দেহে গণপিটুনিতে খুনের অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। গতকালে রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বরেলি জেলার ভোলাপুর হিন্দোলিয়া গ্রামে। পুলিসের দাবি, গ্রামবাসীরা জানান, মহিষ চুরির চেষ্টা করেছিল শাহরুখ ও তাঁর তিন বন্ধু।
গণধোলাইয়ের পর আহত শাহরুখতে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিস। গ্রামবাসীরাই তাদের খবর দেয়। পুলিস সুপার অভিনন্দন জানিয়েছেন, মাত্রাতিরিক্ত মাদক নিয়েছিলেন শাহরুখ। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, পাকস্থলী ও কিডনিতে আঘাত লাগার কারণে মৃত্যু হয়েছে শাহরুখের। মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবনের কথা উল্লেখ নেই রিপোর্টে।
অভিনন্দন জানিয়েছেন, এটা গণধোলাইয়ের ঘটনা। রাত আড়াইটে নাগাদ মহিষ চুরি করতে গিয়েছিলেন চার যুবক। তাঁদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বাঁচান তিন জন। শাখরুখ সাঁতার জানতেন না। তাঁকে ধরে ফেলে গ্রামবাসীরা। শুরু হয় মারধর।
দুবাইয়ে এমব্রয়ডারির কাজ করেন শাহরুখ খান। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করেছে পরিবার। তাদের দাবি, দুবাই ও আরবের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন শাহরুখ। মুম্বই, দিল্লিতেও থাকেন তিনি। মজিদ ও পাপ্পু নামে তাঁর দুই বন্ধু শাহরুখকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন।
ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করেছে পুলিস। ২৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রামবাসীদের এফআইআরের ভিত্তিতে শাহরুখ ও তাঁর বন্ধুদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মহিষ চুরির মামলা। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিস।
দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান গণধোলইয়ের ঘটনায় মোদী সরকারকে চেপে ধরেছে বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী নেতানেত্রীরা। ২১ শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বিজেপি-আরএসএস-কে নিশানা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, হিন্দুত্বের নামে গোটা দেশজুড় অশান্তি ছড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির। তালিবানি সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে তারা। গণধোলাইয়ের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইতিমধ্যেই রাজ্যগুলিকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে যে পরিসংখ্যান মিলেছে তাতে স্পষ্ট দেশজুড়ে গণধোলাইয়ের মৃত্যুর ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ পর্যন্ত ৯টি রাজ্যে ৪০টি গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের।
গত ১৭ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট গণধোলাইয়ের ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করে উন্মত্ত জনতাকে রুখতে কেন্দ্রকে কড়া আইন আনার পরামর্শ দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, কড়া আইন আনা হলে গণধোলাইয়ের মতো ঘটনার মোকাবিলা করা সম্ভব।সেই নির্দেশের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিরোধীদের জানান, একটি কমিটি ইতিমধ্যেই গঠন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক আইনের রূপরেখা তৈরি করবে তারা। সরকার গণিপটুনির ঘটনায় শুধু উদ্বিগ্নই নয়, বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্বও দিচ্ছে''।