আতঙ্কের রাজধানী: উবারের ক্যাব ড্রাইভারের আগেও যৌন নির্যাতনের অভিযোগে হাজতবাস
অবশেষে ধরা পড়ল অভিযুক্ত ক্যাব ড্রাইভার। শুক্রবার রাতে দিল্লির এক তরুণীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত এই ক্যাব ড্রাইভারকে আজ আদালতে পেশ করা হবে।
নয়া দিল্লি: অবশেষে ধরা পড়ল অভিযুক্ত ক্যাব ড্রাইভার। শুক্রবার রাতে দিল্লির এক তরুণীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত এই ক্যাব ড্রাইভারকে আজ আদালতে পেশ করা হবে।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১১ সালে ওই ক্যাব ড্রাইভারের ধর্ষণের অভিযোগে হাজতবাস হয়েছিল।
রবিবার উত্তরপ্রদেশের মথুরা থেকে শিব কুমার যাদব নামের ওই ড্রাইভারকে গ্রেফতার করে পুলিস। ইতিমধ্যে তাকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে। দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ পুলিসের যৌথ অভিযানে ধরা পড়ে আদতে মথুরারই বাসিন্দা এই ব্যক্তি।
এই ঘটনার প্রতিবাদে এই মুহূর্তে কিছু ব্যক্তি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। দাবি তুলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাজধানীতে মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিন্ত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিস।
অভিযুক্ত ড্রাইভার ইন্টারন্যাশনল ক্যাব বুকিং কোম্পানি ইউবারের কর্মী। গুরগাঁওয়ের একটি ফিন্যান্স কোম্পানির অ্যানালিস্ট ২৫ বছরের এক মহিলা শুক্রবার রাতে অফিস থেকে উত্তর দিল্লিতে তাঁর বাড়ি ফিরছিলেন শিব কুমার যাদবের গাড়িতে। অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করে যাদব।
উবারের নাম এই ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ার পর রবিবার কোম্পানির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছিল অভিযুক্ত ড্রাইভাবের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য তারা পুলিসকে দিয়ে দিয়েছে।
উবারের মুখপাত্র ইভেলিন টে জানিয়েছেন ''আমরা নির্যাতিতার পাশে আছি। পুলিসকে তদন্তে সবরকম সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত। এই ধরণের ঘৃণ্য অপরাধে জড়িতদের আমরা তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত করি। এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি।''
তবে উবার যতই তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গলা ফাটাক না কেন পুলিসের তথ্য কিন্তু অন্য কথা বলছে।
যদিও দিল্লির ডেপুটি পুলিস কমিশনার মধুর বর্মা জানিয়েছেন উবারের নিযুক্ত হওয়ার আগে এই ড্রাইভারের কোনও পুলিস ভেরিফিকেশনই করা হয়নি অ্যাপ নির্ভর এই ক্যাপ বুকিং সংস্থাটির পক্ষ থেকে।
তিনি জানিয়েছিলেন গাড়িটিতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অত্যাবশকীয় জিপিএস-ও ছিল না।
পুলিসের দাবি প্রায় কোনও রকম খোঁজখবর না নিয়েই শিব কুমার যাদবকে নিয়োগ করেছিল উবার।
পুলিস সূত্রে জানা গেছে গৌরব বলে এক ব্যক্তির নামে ওই ড্রাইভারের মোবাইল ফোন নম্বর নথিভুক্ত করা ছিল। এমনকি দিল্লি ট্রান্সপোর্ট দফতরেও ওই ড্রাইভারের লাইসেন্স ইস্যু করা ছিল না।
নির্যাতিতা তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন '' বাড়ি ফেরার পথে আমি হঠাৎ করেই গাড়ির পিছনের সিটে ঘুমিয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারি গাড়িটি একটি নির্জন স্থানে থেমে আছে আর ড্রাইভার আমার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে।''
তিনি জানিয়েছেন ড্রাইভারকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সে তাঁকে বেশ কয়েকবার চড় মারে। খুনের হুমকি দিয়ে এরপর যাদব তাঁকে ধর্ষণ করে বলে তিনি জানিয়েছেন। এমনকি বাড়িতে নামিয়ে দেওয়ার সময়ও যাদব তাঁকে বলে পুলিসের কাছে গেলে সে ওই মহিলাকে মেরে ফেলবে।